ই-ফু তুয়ান

চীনা-আমেরিকান ভূতত্ববিদ

ই-ফু তুয়ান (চীনা: 段義孚, জন্ম ৫ই ডিসেম্বর, ১৯৩০) একজন প্রখ্যাত চীনা আমেরিকান ভূতত্ববিদ। মানব ভূতত্ব বিষয়ে তাকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে গণ্য করা হয়।

ই-ফু তুয়ান(২০১২)

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা সম্পাদনা

তিনি ১৯৩০ সালে চীনের তিয়ানজিনে এক ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চীন, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন এবং ইংল্যান্ডে শিক্ষালাভ করেছেন। তিনি লন্ডনের সিটি কলেজে ভর্তি হলেও, ১৯৫১ ও ১৯৫৫ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ এবং এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। [১] এরপর তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় যাত্রা করেন যেখানে তিনি ভূতাত্বিক বিজ্ঞানের বিষয়ে শিক্ষা অর্জন করেন। ১৯৫৭ সালে, তিনি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন ৷

কর্মজীবন সম্পাদনা

১৯৫৯ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত তিনি নিউ ম্যাক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদান করেন। অতঃপর তিনি ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত তিনি টোরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। [২][৩] ১৯৬৮ সালে মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি পূর্ণাঙ্গ অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। একইবছর তিনি গুইজেনহেম ফেলোশিপ অর্জন করেন। মিনেসোটায় অবস্থানের সময় থেকে মানব ভূতত্ব নিয়ে কাজগুলোর কারণে সকলের নিকট সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। মূলত "ল্যান্ডস্কেইপ" নামক জার্নালে টোপোফিলিয়া বিষয়ে সম্পর্কিত একটি আর্টিকেলের মাধ্যমে তিনি সকলের নজরে আসেন ৷[৪] ২০০৪ সালে "ডিয়ার কলিগ" নামক একটি চিঠিতে তিনি মানব ভূতত্ব ও মানবিক ভূতত্বের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করেন:

মানব ভূতত্ব মানুষের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে। মানব ভূতত্ব প্রচলিত বিশ্বাস নিয়ে আশাবাদী যেখানে অপ্রতিসম সম্পর্ক এবং শোষণ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, বরং বিপরীত তথ্য সংযুক্ত করা হয়েছে। মানব ভূতত্বে প্রায় সকল মানুষের সম্পর্ক ও ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়নি, উক্ত বিষয়টি আবার মানবিক ভূতত্বে আলোচনা করা হয়েছে। বিষয়টি যদি আমরা গুরুত্বের সহিত আলোচনা করি, তবে কেউই বিষয়টি নিয়ে একমত হতে পারবে না। সবশেষে এটা বলা যায় যে, সামাজিক জীবনকে আরো সহজ করতে কিছু মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয়। এজন্যই হয়ত মানবিক ভূতত্ব নিয়ে অবহেলা করা হয় কারণ এটা যথেষ্ট কঠিন। তথাপি কঠোর মনোবলসম্পন্ন এবং ভাববাদীরা এই বিষয়ে আকৃষ্ট হয়। এই বিষয় নিয়ে গবেষণায় এমন কিছু অপ্রতিকর তথ্য সামনে আসতে পারে যা হতাশা ছাড়া অন্য কিছু প্রদান করে না। [৫]

মিনেসোটায় প্রায় ১৪ বছর শিক্ষাকতা করার পর তিনি উইসকোসিনের মেডিসনে যাত্রা করেন এবং উইসকোসিন-মেডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূতত্বের শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৮৮৬ সালে আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন, ২০০১ সালে ব্রিটিশ একাডেমি এবং ২০০২ সালে আমেরিকান একাডেমি কর্তৃক ফোলোশিপের জন্য নির্বাচিত হন। তুয়ান উইকোসিন-মেডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন অধ্যাপক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাঝে মাঝে বক্তৃতা প্রদান করেন। ২০০৮ সালে "হিউম্যান গুডনেস" এবং ২০১০ সালে "রিলিজিয়ন: ফ্রম প্লেস টু প্লেসনেস" নামে তার দুটি বই প্রকাশিত হয়। তিনি বর্তমানে উইসকোসিনের মেডিসনে বসবাস করেন ৷

ব্যক্তিজীবন সম্পাদনা

ই-ফু তুয়ান সারাজীবনই একলা থেকেছেন। তিনি তার আত্মজীবনীতে প্রকাশ করেন যে তিনি একজন সমকামী। তুয়ান তার গবেষণার মধ্য কখনও তার জাতিগত দৃষ্টিভঙ্গি এবং যৌনজীবনের ছাপ পড়তে দেননি৷

আলোচিত গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Curriculum Vitae Yi-Fu Tuan" (পিডিএফ)। ২০০৮-০৪-০৮। ২০১১-১০-০২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০২-২০ 
  2. "Yi-Fu Tuan"China Who's Who। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  3. Brinely, Amanda। "A Biography of the Famous Chinese-American Geographer Yi-Fu Tuan"ThoughtCo.। ThoughtCo.। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  4. Tuan, Yi-Fu (১৯৬১)। "Topophilia: or, Sudden Encounter with the Landscape"Landscape11: 29–32। 
  5. "Yi-Fu Tuan - Dear Colleague"