ইসলাম ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ
ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ প্রয়োগের সংজ্ঞায়, বিশেষ করে সমাজে ধর্মের অবস্থানের ক্ষেত্রে, অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় দেশসমূহের মত ইসলামী রাষ্ট্রসমূহের মধ্যেও ভিন্নতা এবং পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।[১] ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে প্রায়শই জনগণের জীবন এবং সরকারি বিষয়াবলী থেকে ধর্মীয় শিক্ষা এবং নির্দেশাবলীকে পৃথকীকরণ হিসেবে অথবা সহজভাবে ধর্ম ও রাজনীতি পৃথকীকরণ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়। মুসলিম দেশসমূহে ধর্মনিরপেক্ষতাকে ইসলামী আদর্শের বিপরীত হিসেবে দেখা হয়, এবং ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীগণ ইসলামসহ যে কোন ধর্মীয় আদর্শের পরিবর্তে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক এবং সামাজিক মূল্যবোধ প্রচার ও প্রসারের অনুগামী হয়ে থাকেন। পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ এবং মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ নিয়ে বেশ কিছু বিতর্ক আছে যার মধ্যে ইসলামী বিশ্বের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রীয় আইন ব্যবস্থায় শরিয়াহ আইন প্রয়োগের প্রক্রিয়া ও পর্যায়সমূহ হল অন্যতম।
মুসলিম বিশ্বের ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতার মতবাদ নিয়ে ভিন্নতা রয়েছে, ভিন্নতা রয়েছে ধর্মনিরপেক্ষকরণে চাপপ্রয়োগের বিরুদ্ধে মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের প্রতিক্রিয়ার মাঝেও। একদিকে, কিছু মুসলিম বুদ্ধিজীবী যারা সরকারি কর্মকাণ্ডে ধর্মীয় প্রভাব অপসারণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন না, তারা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের সমালোচনা করে থাকেন।[২] অন্যদিকে, কিছু বুদ্ধিজীবীরা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে ইসলামের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হিসেবে দাবি করেন। উদাহরণস্বরূপ, কিছু মুসলিম পণ্ডিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের চাহিদাকে উৎসাহিত করেছেন যারা দাবি করেন যে ধর্মনিরপেক্ষ সরকারই শরিয়া পর্যবেক্ষণের জন্য শ্রেষ্ঠ পন্থা; "বলপ্রয়োগের মাধ্যমে শরিয়ার প্রয়োগ হল শরিয়ার ধর্মীয় প্রকৃতি বিরোধী, কারণ তখন মুসলিমদেরকে রাষ্ট্রীয় নিয়মের অধীনে ধর্মীয় কর্ম পালন করতে হবে, এবং তারা স্বাধীন মুসলিম হিসেবে ধর্ম পালনে সক্ষম হবে না," [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] বলেন আব্দুল্লাহি আহমেদ আন-নাইম, যিনি এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আইনের অধ্যাপক এবং "Islam and the secular state : negotiating the future of Shariʻa" নামক বইয়ের লেখক।[৩] অধিকন্তু, কিছু পণ্ডিত দাবি করেন যে মধ্যযুগ থেকেই মুসলিম বিশ্বে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল।
তবুও, অনেক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র নিজেদেরকে ধর্মনিরপেক্ষ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে, এবং তাদের অনেকেরই দ্বৈত প্রশাসন ব্যবস্থা রয়েছে যেখানে মুসলিমগণ স্বেচ্ছায় পারিবারিক এবং অর্থনৈতিক সমস্যা শরিয়া আদালতে পেশ করতে পারেন। এই সকল আদালতের প্রকৃত আইনি সীমারেখা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে, কিন্তু তাদের কিছু বিভাগীয় বিষয় প্রায়শই এক হয়, এগুলো হল বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার এবং অভিভাবকত্ব।[৪]
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রসমূহ:
- Albania[৫]
- Azerbaijan[৬]
- Bosnia-Herzegovina[৭]
- Burkina Faso[৮]
- Bangladesh[৯]
- Chad[১০]
- Guinea[১১]
- Guinea-Bissau[১২]
- Indonesia (আচে বাদে)[১৩][১৪]
- Kazakhstan[১৫]
- Kosovo[১৬][১৭]
- Kyrgyzstan[১৮]
- Mali[১৯]
- Niger[২০]
- Northern Cyprus[২১]
- Senegal[২২]
- Sierra Leone[২৩]
- Sudan[২৪]
- Tajikistan[২৫]
- Turkey[২৬]
- Turkmenistan[২৭]
- Uzbekistan[২৮]
- West Bank[২৯]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Asad, Talal. Formation of Secular: Christianity, Islam, Modernity. Stanford: Stanford University Press, 2003. 5-6.
- ↑ "From the article on secularism in Oxford Islamic Studies Online"। ১৭ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১৪।
- ↑ Naʻīm, ʻAbd Allāh Aḥmad. Islam and the secular state : negotiating the future of Shariʻa. Cambridge:Harvard University Press, 2008. ISBN9780674027763
- ↑ "Islam: Governing Under Sharia" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ মে ২০১৫ তারিখে, Author:Tony Johnson, November 10, 2010
- ↑ "ICL - Albania - Constitution"। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০১৫।
- ↑ "Article 7.1 of Constitution" (পিডিএফ)। ২০১১-১০-২৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১০-২৯।
- ↑ "ICL - Bosnia and Herzegovina - Constitution"। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০১৫।
- ↑ । ৯ অক্টোবর ২০০৬ https://web.archive.org/web/20061009112408/http://www.chr.up.ac.za/hr_docs/constitutions/docs/Burkina%20FasoC%20(englishsummary)(rev).doc। ৯ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৮।
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - ↑ http://bdlaws.minlaw.gov.bd/act-367/section-24560.html
- ↑ । ৯ অক্টোবর ২০০৬ https://web.archive.org/web/20061009114533/http://www.chr.up.ac.za/hr_docs/constitutions/docs/ChadC%20(english%20summary)(rev).doc। ৯ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৮।
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - ↑ Article 1 of Constitution ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত সেপ্টেম্বর ১৩, ২০০৪ তারিখে
- ↑ Article 1 of Constitution ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত নভেম্বর ৫, ২০১৩ তারিখে
- ↑ "The 1945 Constitution of the Republic of Indonesia"। ১০ মার্চ ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ অক্টোবর ২০০৬।
- ↑ See Religion in Indonesia for further references.
- ↑ "Archived copy"। ২০১৪-০৯-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-১১-২৪।
- ↑ Kosovo is the subject of a territorial dispute between the Republic of Serbia and the Republic of Kosovo. The latter declared independence on 17 February 2008, but Serbia continues to claim it as part of its own sovereign territory. Kosovo's independence has been recognized by 111 out of ১৯৩ United Nations member states.
- ↑ Republic of Kosovo constitution ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৩-১১-২১ তারিখে, Republic of Kosovo constitution,
- ↑ Article 1 of Constitution ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ফেব্রুয়ারি ৪, ২০০৭ তারিখে
- ↑ Preamble of Constitution ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত সেপ্টেম্বর ১২, ২০১২ তারিখে
- ↑ John L. Esposito. The Oxford Dictionary of Islam. Oxford University Press US, (2004) আইএসবিএন ০-১৯-৫১২৫৫৯-২ pp.233-234
- ↑ Darke 2009, 10.
- ↑ "Senegal"। U.S. Department of State। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০১৫।
- ↑ "Sierra Leone's Constitution of 1991, Reinstated in 1996, with Amendments through 2008" (পিডিএফ)।
- ↑ "Sudan ends 30 years of Islamic law by separating religion, state"। Gulf News। ২০২০-০৯-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৪।
- ↑ "Tajikistan's Constitution of 1994 with Amendments through 2003" (পিডিএফ)।
- ↑ "Article 2 of Constitution"। ২০১০-১২-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০১৫।
- ↑ "Constitution of Turkmenistan"। ১৪ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০১৫।
- ↑ "Uzbekistan's Constitution of 1992 with Amendments through 2011" (পিডিএফ)।
- ↑ "The World Factbook — Central Intelligence Agency"। www.cia.gov। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১৮।
আরও পড়ুন
সম্পাদনা- Abdullah, Ghassan F. (মে ১৯৯৯)। "New Secularism in the Arab World"। Internet Infidels Newsletter (Vol. 4, No. 5)। Internet Infidels। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৪-১৩।