ইল দিভো (চলচ্চিত্র)

ইল দিভো (একজন তারকা,[৩] আক্ষরিক অর্থে পবিত্র[৪]) ২০০৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ইতালীয় নাট্য চলচ্চিত্র। ছবিটি পরিচালনা করেছেন পাওলো সোররেন্তিনো। প্রাক্তন ইতালীয় প্রধানমন্ত্রী গিউলিও আন্দ্রেওত্তির জীবনী অবলম্বনে ইল দিভো চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়। ২০০৮ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে এটি জুরি পুরস্কার লাভ করে। টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হয়। ২০১০ সালের ৮২-তম একাডেমি পুরস্কার অনুষ্ঠানে এটি সেরা রূপসজ্জা ক্যাটাগরিতে অস্কারের জন্য মনোনীত হয়।

ইল দিভো
Theatrical release poster
পরিচালকপাওলো সোররেনতিনো
প্রযোজকফ্রান্সেসকা চিমা
ফাবিও কনভার্সি
মরিজিও কোপেলেচ্চিয়া
নিকোলা গিউলিয়ানো
আন্দ্রিয়া ওচ্চিপিন্তি
রচয়িতাপাওলো সোররেন্তিনো
শ্রেষ্ঠাংশেতোনি সার্ভিলো
অ্যানা বোনাইতো
পিয়েরা দেগলি এসপস্তি
পাওলো গ্রাজিওসি
গিউলিও বোসেত্তি
ফ্লাভিও বুচ্চি
কার্লো বুচ্চিরোসো
সুরকারতেহো তিয়ার্দো
চিত্রগ্রাহকলুকা বিগাজ্জি
সম্পাদকক্রিস্তিয়ানো ট্রাভালিয়ো
পরিবেশকলাকি রেড
মুক্তি
  • ২৩ মে ২০০৮ (2008-05-23) (Cannes Film Festival)
  • ২৮ মে ২০০৮ (2008-05-28)
স্থিতিকাল১১০ মিনিট
দেশইতালি
ভাষাইতালীয়
নির্মাণব্যয়$৬.৭ মিলিয়ন[১]
আয়$১১,২৬০,৩৬৬[২]

কাহিনী সম্পাদনা

ইতালির সাত-মেয়াদে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী গিউলিও আন্দ্রেওত্তির জীবনী এ ছবির মূল বিষয়বস্তু। মাফিয়াদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততার জন্য তিনি কুখ্যাত ছিলেন। ১৯৯২ সালে আন্দ্রেওত্তির সপ্তম মেয়াদে নির্বাচন, ইতালীয় প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি হবার জন্য তার ব্যর্থ প্রচেষ্টা, তাঙ্গেন্তোপোলি ঘুষ কেলেঙ্কারি ও ১৯৯৫ সালে তার বিচার এ ছবিতে বিবৃত হয়েছে।

ছবির সূচনায় একক সংলাপ বা মনোলগে আন্দ্রেওত্তি বলেন , কীভাবে তিনি টালমাটাল রাজনৈতিক জীবন টিকিয়ে রাখতে পেরেছিলেন। তাকে ঘৃণাকারীরা কীভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে, এ কথাও তিনি বর্ণনা করেছেন। আন্দ্রেওত্তির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ব্যক্তি, যেমন- সাংবাদিক মিলো পেকোরেল্লি , ক্যারাবিনিয়েরি জেনারেল কার্লো আলবার্তো দালা চিয়েসা, ব্যাংকার মিচেল সিন্দোনারবার্তো কালভি এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আলদো মোরোর হত্যাকাণ্ড চলচ্চিত্রে আলোচিত হয়েছে।

চরিত্রায়ণে সম্পাদনা

  • তোনি সারভিলো (গিউলিও আন্দ্রেওত্তি)
  • অ্যানা বোনাইতো (লিভিয়া দানিজে)
  • ফ্লাভিও বুচ্চি (ফ্রাঙ্কো ইভানজেলিস্তি)
  • কার্লো বুচ্চিরোসো(পাওলো চিরোনো পমিচিনো)
  • পিয়েরা দেগলি এসপস্তি(মিসেস ইনিয়া, গিউলিও আন্দ্রেওত্তির সচিব)
  • আলবার্তো ক্রাচ্চো (দন মারিও)
  • গিওর্গিও কোলানজেলি (সালভো লিমা)
  • মাসিমো পপোলিজিও (ভিত্তোরিও বারদেল্লা)
  • আলদো র‍্যাল্লি (জুসেপ্পে চিয়ারাপিকো)
  • গিউলিও বোসেত্তি (ইউজিনিও স্কালফারি)
  • জিয়ানফেলিচে ইমপারাতো (ভিনসেনজো স্কোত্তি)

সংগীত সম্পাদনা

ইল দিভো
কর্তৃক চলচ্চিত্রের সুর
মুক্তির তারিখ২০০৮
ঘরানাচলচ্চিত্রের সংগীত
দৈর্ঘ্য৬৪:২১
সঙ্গীত প্রকাশনীইউনিভার্সাল মিউজিক গ্রুপ
প্রযোজকতেহো তিয়ার্দো

২০০৮ সালে তেহো তিয়ার্দো ইল দিভো চলচ্চিত্রের সুর রচনা করেন। ইতালিতে ইউনিভার্সাল সিডি আকারে এটি প্রকাশ করে। তবে উত্তর আমেরিকা বা যুক্তরাজ্যে স্থানীয়ভাবে এটি বের করা হয়নি।[৫]

ভাবধারা সম্পাদনা

সপ্তম মেয়াদে আন্দ্রেওত্তির বিজয়ের চিত্রায়ন ইতালির দলতন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ। জনগণের ইচ্ছার তোয়াক্কা না করে একটি সংকীর্ণ জনগোষ্ঠীর ইচ্ছায়-ই ইতালি শাসিত হচ্ছে।[৬] বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে জনতুষ্টিবাদ-কে পুঁজি করে অনেক ডানপন্থী মতধারা ও রাজনৈতিক দলের উদ্ভব ঘটে । জনগণও জাতীয়তাবাদী আবেগে উদ্বুদ্ধ হয়ে একজন অলঙ্কৃত/আদৃত নেতার সন্ধান করে। আন্দ্রেওত্তি সেই ধরনেরই একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন। তাই তার পক্ষে ইতালীয় প্রজাতন্ত্রের শাসনব্যবস্থার উপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছিল।

সমালোচকদের অভিমত সম্পাদনা

সমালোচকরা ছবিটিকে ইতিবাচকভাবেই মূল্যায়ন করেছেন। রটেন টম্যাটোস ৫০টি সমালোচনা পর্যালোচনা করে ছবিটিকে ৯২% অনুমোদন রেটিং প্রদান করেছে। এর গড় স্কোর ১০ এর মধ্যে ৭.৫১। টম্যাটোস এর সমালোচকদের সমন্বিত মূল্যায়ন হলো এই - এই ইতালীয় রাজনৈতিক রোমাঞ্চ চলচ্চিত্রে দুর্নীতির যে জাল চিত্রায়িত হয়েছে, সেটি অ-ইতালীয়দের পক্ষে অনুধাবন করা দুরূহ। তবে এর দৃশ্যায়ন নিখুঁত ও নিখাদ উত্তেজনায় ভরপুর।[৭] মেটাক্রিটিক একে ১০০-তে ৮১ স্কোর দিয়েছে (১৭ জন সমালোচকের অভিমত পর্যালোচনা করে),যা "সার্বজনীন প্রশংসা" ইঙ্গিত করে।

দ্য হলিউড রিপোর্টার এর পর্যালোচক পিটার ব্রুনেট ছবিটির প্রশংসা করেন। এর অভিনয়, সুরারোপ এবং বিনোদন প্রদানের ক্ষমতা তার নজর কাড়তে সমর্থ হয়। তবে তিনি এ-ও বলেন, ইতালির বাইরে সম্ভবত ছবিটি বাণিজ্যিক সাফল্য লাভ করবে না। ভ্যারাইটি পত্রিকার সমালোচক জে ভেইসবার্গ ছবিটিকে মাস্টারপিস আখ্যায়িত করেন। [৮]

আন্দ্রেওত্তি ছবিটি সম্পূর্ণ না দেখেই বেরিয়ে যান, এবং বলেন- ছবিটি সব সীমা অতিক্রম করেছে। তিনি বলেন,তার কর্মের জন্য যথোচিত মূল্যায়ন তিনি একদিন পাবেন। [৯] আন্দ্রেওত্তির জীবনীকার মাসিমো ফ্রাঙ্কো বলেন, ছবি দেখে তিনি (আন্দ্রেওত্তি) ক্রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই ছিদ্রান্বেষীর সুরে আন্দ্রেওত্তি বলেন, "ছবির প্রযোজকের কথা চিন্তা করে আমার খুশি লাগছে। ছবির আয়ের কিছু অংশ পেলে আমার ভালোই লাগত!"[১০]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Povoledo, Elisabetta (৯ জুলাই ২০০৮)। "Cannes Success Gives Italian Cinema a Boost"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-২৯ 
  2. "2008 Overseas Total Yearly Box Office Results"Box Office Mojo। ৪ মার্চ ২০০৯। ২১ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-০৪ 
  3. "divo² in Vocabolario - Treccani"www.treccani.it 
  4. "divo¹ in Vocabolario - Treccani"www.treccani.it 
  5. https://www.amazon.com/Il-Divo-Teho-Teardo/dp/B001BJ66P2/
  6. Spotts and Wiesser, Frederic and Theodor (1986). Italy: A Difficult Democracy. Cambridge University Press. pp. 4, 5.
  7. "Il Divo (2009)" – www.rottentomatoes.com-এর মাধ্যমে। 
  8. https://www.variety.com/index.asp?layout=festivals&jump=review&reviewid=VE1117937270
  9. Owen, Richard। "Andreotti: why I walked out of my own biopic" – www.thetimes.co.uk-এর মাধ্যমে। 
  10. Hooper, John (20 ফেব, 2009)। "John Hooper talks to the former Italian PM Giulio Andreotti about his links to the mafia" – www.theguardian.com-এর মাধ্যমে।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

টেমপ্লেট:Paolo Sorrentino