ইয়েমেনি রন্ধনশৈলী

ইয়েমেনী রন্ধনশৈলী হচ্ছে ইয়েমেনের জাতীয় রন্ধনশৈলী। এটি ব্যাপকভাবে পরিচিত মধ্যপ্রাচ্যীয় রন্ধনশৈলী থেকে ভিন্ন। এটি অনন্য এবং সুসঙ্গত। যদিও দেশের কিছু অঞ্চলে কিছু বিদেশী প্রভাব রয়েছে। অটোমান রন্ধনশৈলীর প্রভাব উত্তরে, মোঘলাই রন্ধনশৈলীর প্রভাব এডেনের দক্ষিণ অঞ্চলে দেখা যায়। তবে ইয়েমেনি রন্ধনশৈলী সারা দেশে একই ধরনের এবং এতে ইয়েমেনের সংস্কৃতি এবং ইতিহাস ও ইতিহাস ফুঁটে ওঠে।

সালতাহকে ইয়েমেনের জাতীয় খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বিশ্বমানচিত্রে ইয়েমেনের অবস্থান

খাদ্যাভ্যাস সম্পাদনা

সকালের নাস্তা সম্পাদনা

ইয়েমেনের লোকেরা সকালে উষ্ণ খাবার খেতে পছন্দ করে। সাধারণত নাস্তায় ইয়েমেনি কফি বা চা এক কাপ সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের প্যাস্ট্রি থাকে। হৃদয়গ্রাহী খাবারে প্রায়ই ডাল, ডিম বা এমনকি রোস্টেড মাংস বা কাবাব থাকে। সাধারণত রুটি বা স্যান্ডউইচের মতো একটি রুটির মধ্যে এই কাবাব পরিবেশন করা হয়। ইয়েমেনের মানুষেরা ভেড়া বা গরুর যকৃত দিয়ে সকালের নাস্তা তৈরী করে। অ ইয়েমেনী কাছে একটি একটি বিস্ময়কর বিষয় হিসাবে বিবেচিত হয়।

দুপুরের খাবার সম্পাদনা

ইয়েমেন অধিকাংশ আরব দেশ থেকে ভিন্ন। দুপুরের খাবার হচ্ছে ইয়েমেনের দিনের প্রধান খাবার। দুপুরের খাবারে মাংস, হাঁস-মুরগি ও শস্য সর্বাধিক পরিমাণে খাওয়া হয়। দুপুরের খাবারের মধ্যে রয়েছে: আসিদ, ফাহসা, ফাত্তাহ, হানিৎ, হারেস, জাকনুন, কাবসা, কমোরহ, মান্দি, সামাক মোফা, সাফুত, শাওয়াহ, থারিদ ও জুব্বিয়ান।

আদবকেতা সম্পাদনা

আন্তরিকভাবে অতিথীকে খাদ্য গ্রহণের অনুরোধ করা ইয়েমেনের সংস্কৃতির অংশ এবং অতিথি খেতে সম্মত না হলে সেটাকে অপমান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মেঝে বা মাটির উপরে বসে সাধারণত খাবার খাওয়া হয়। আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা যায় যে, দুপুরের খাবার হচ্ছে ইয়েমেনের প্রধান খাবার। অধিকাংশ আরব দেশে রাতের খাবার প্রধান খাবার হিসেবে গণ্য হয়।

মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্য সম্পাদনা

 
ইয়েমেনের হাধরামাউতের ঘরে তৈরী ম্যান্ডি

মুরগী, ছাগল এবং ভেড়ার মাংস ইয়েমেনের প্রধানতম খাবার। গরুর মাংস তুলনায় এগুলো বেশি খাওয়া হয়। গোমাংস এখানে ব্যয়বহুল। উপকূলীয় অঞ্চলে মাছও খাওয়া হয়। ইয়েমেনী খাবারের মধ্যে পনির, মাখন এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত দ্রব্য কম ব্যবহৃত হয়। তবে যেখানে এটি খুব বেশি পাওয়া যায় সেখানকার গ্রামগুলোতে প্রতিদিন এগুলো ব্যবহৃত হয়। সর্বাধিক ব্যবহৃত চর্বি হচ্ছে উদ্ভিজ্জ তেল এবং ঘি, যা সুস্বাদু খাবারে ব্যবহৃত হয়। শোধন করা মাখন যা সেম্ন (سمن) নামে পরিচিত, পেস্ট্রি তৈরীতে বহুল ব্যবহৃত চর্বি।

পানীয় সম্পাদনা

 
কাহওয়া যা আরবীয় কফি নামে পরিচিত

শাহী হালেব (দুধ চা), কালো চা (এলাইমা, লবঙ্গ বা পুদিনা দিয়ে তৈরী), কিশর (কফি কুচি), কাহওয়া (কফি), কারাকাদিন (শুকনো জবা ফুল দিয়ে তৈরী), নাকী আল জাবিব (ঠান্ডা রেসিন পানীয়) এবং ডিবাআ (স্কোয়াশ মধু) ইয়েমেনি পানীয়ের জনপ্রিয় উদাহরণ। আমপেয়ারার রসও জনপ্রিয়।

যদিও সমগ্র ইয়েমেন জুড়ে কফি এবং চা খাওয়া হয় কিন্তু কফি সানাতে পছন্দের পানীয়, কালো চা আদেন ও হাদ্রামাউটের পছন্দের পানীয়। চা সকালের নাস্তার সাথে খাওয়া হয়, মধ্যাহ্নভোজের পরে এবং রাতের খাবারের সাথে। কফির ভুষি থেকে তৈরি কিশর নামক পানীয়ও উপভোগ করা হয়।

সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কারণে মদ্যপান অনুপযুক্ত বলে মনে করা হয়। তবে এটি ইয়েমেনে পাওয়া যায়। ইয়েমেনী ইহুদীদের মধ্যে মদ জনপ্রিয় বিশেষ করে রেসিন ওয়াইন রূপে। আরকও খাওয়া হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা