ইয়াসিন মাজহার সিদ্দিকী

ভারতীয় ইসলামি পন্ডিত, লেখক ও ঐতিহাসিক

ইয়াসিন মাজহার সিদ্দিকী (ইয়াসিন মাজহার সিদ্দিক নাদভী নামেও পরিচিত)[১] (২৬ ডিসেম্বর ১৯৪৪ - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০) একজন ভারতীয় সুন্নি মুসলিম পণ্ডিত এবং ইতিহাসবিদ। তিনি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি অধ্যয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

ইয়াসিন মাজহার সিদ্দিকী
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম২৬ ডিসেম্বর ১৯৪৪
মৃত্যু১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০(2020-09-15) (বয়স ৭৫)
ধর্মইসলাম
জাতীয়তাভারতীয়
উল্লেখযোগ্য কাজতারীখে তাহজীবে ইসলামি, নবী মুহাম্মদ: মুসলিম চিন্তাবিদদের দৃষ্টান্তমৃলক ব্যক্তিত্ব
যেখানের শিক্ষার্থীনাদওয়াতুল উলামা, লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়
মুসলিম নেতা
পুরস্কার৫ম শাহ ওয়ালিউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা সম্পাদনা

সিদ্দিকীর জন্ম ১৯৪৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের যুক্ত প্রদেশের লখিমপুর খেরি জেলায়[২] তিনি ১৯৫৯ সালে নাদওয়াতুল উলামা থেকে ঐতিহ্যবাহী দারসে নিজামিতে এবং ১৯৬০ সালে লখনউ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাহিত্যে স্নাতকোত্তর লাভ করেন। তিনি জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।[৩] ১৯৬৮ সালে সিদ্দিকী ইতিহাসের উপর ও ১৯৬৯ সালে দর্শন শাস্ত্রের উপর স্নাতক আর্জন করেন এবং ১৯৭৫ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।

সিদ্দিকীর শিক্ষকদের মধ্যে আবুল হাসান আলী নদভী, কেএ নিজামী, আব্দুল হাফিজ বালিয়াভি এবং রাবে হাসানী নদভী অন্যতম।[৩]

কর্মজীবন সম্পাদনা

সিদ্দিকী ১৯৭০ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে সহকারী গবেষক হিসাবে নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৭৭ সালে ইতিহাস বিষয়ক প্রভাষক নিযুক্ত হন এবং সাইয়িদ হামিদ ১৯৮৩ সালে তাকে ইসলামি অধ্যয়ন ইনস্টিটিউটে বদলি করেন।[৩] তিনি ১৯৯১ সালে ইসলামি অধ্যয়নের প্রফেসর হন এবং ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ইসলামি অধ্যয়ন ইনস্টিটিউটের (এএমইউ) পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে তিনি ইসলামি অধ্যয়ন ইনস্টিটিউটের (এএমইউ) শাহ ওয়ালিউল্লাহ রিসার্চ সেলের পরিচালক পদে নিযুক্ত হন। সিদ্দিকী ৩১ ডিসেম্বর ২০০৬ সালে ইসলামি অধ্যয়ন ইনস্টিটিউট থেকে অবসর গ্রহণ করলেও শাহ ওয়ালিউল্লাহ রিসার্চ সেলের পরিচালকের পদটিতে দশ বছর নিযুক্ত ছিলেন।

২০০০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে সিদ্দিকী শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভীর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রায় দশটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান করেছিলেন এবং আঠারোটি বই লিখেছিলেন।[৩]

পুরস্কার সম্পাদনা

সিদ্দিকীকে ২৪ শে সেপ্টেম্বর ২০০৫ সালে নয়া দিল্লির ইনস্টিটিউট অব অবজেক্টিভ স্টাডিজের পক্ষ থেকে পঞ্চম শাহ ওয়ালিউল্লাহ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।[৪]

মৃত্যু সম্পাদনা

২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সিদ্দিকী মারা যান।[৫]

রচনাবলী সম্পাদনা

সিদ্দিকীর বইগুলির মধ্যে রয়েছে:[২]

  • তারীখে তাহজীবে ইসলামি
  • গাজওয়াত কি ইকতেসাদী আহমিয়াত
  • তাওহিদ-ই-ইলাহী আরফ মুফাসসিরিন-ই-গিরমী
  • ওয়াহী-ই-হাদিস
  • আহদ-ই-নববী মে তানজাম-ই-রিয়াসত-ও-হুকামাত[৬]
  • হযরত মুহাম্মদ (সা।): মুসলিম সংখ্যালঘুদের একটি দৃষ্টান্ত[৭]
  • আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি পাণ্ডুলিপির ক্যাটালগ, ২০০২ সালে লন্ডনে আল-ফুরকান ইসলামিক হেরিটেজ ফাউন্ডেশনে প্রকাশিত

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা

  • নিজামি, জাফর আহমদ। "অধ্যাপক ইয়াসিন মাজহার সিদ্দিকী"। কালমি খাকি (উর্দু ভাষায়) (প্রথম, ২০১৩ সংস্করণ)। ইন্সটিটিউট অফ অবজেক্টিভ স্টাডিজ। পৃষ্ঠা ২৬৩–২৬৪। আইএসবিএন 978-81-89964-96-2 
  • মুহাম্মদ আবদুল্লাহ। "অধ্যাপক ইয়াসিন মাজহার সিদ্দিকি কি সিরাত নিগ্রি" (উর্দু ভাষায়)। ইসলামি অধ্যইয়ন ও আরবি বিভাগ: ৯–১৭। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ 

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Indian scholar for eliminating interest from banking system"দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল। ১২ মার্চ ২০১৪। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  2. নিজামি, জাফর আহমদ। "অধ্যাপক ইয়াসিন মাজহার সিদ্দিকী"। কালমি খাকি (উর্দু ভাষায়) (প্রথম, ২০১৩ সংস্করণ)। ইন্সটিটিউট অফ অবজেক্টিভ স্টাডিজ। পৃষ্ঠা ২৬৩–২৬৪। আইএসবিএন 978-81-89964-96-2 
  3. মুহাম্মদ আবদুল্লাহ। "অধ্যাপক ইয়াসিন মাজহার সিদ্দিকি কি সিরাত নিগ্রি" (উর্দু ভাষায়)। ইসলামি অধ্যইয়ন ও আরবি বিভাগ: ১০। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  4. "Shah Waliullah Award"iosworld.org। ইনস্টিটিউট অব অবজেক্টিভ স্টাডিজ। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  5. "معروف مصنف و محقق پروفیسر یسین مظہر صدیقی کا انتقال، علمی حلقہ سوگوار"মিল্লাত টাইমস (উর্দু ভাষায়)। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  6. হাফিজ মুহাম্মদ সানি (১০ নভেম্বর ২০১৯)। "এহদ-ই-নাবি মাই তানজিম-ই-রিয়াসাত-ও-হুকুমাত"দৈনিক জং (উর্দু ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০মদীনা রাজ্যের প্রশাসন হাফিজ মুহাম্মদ সান্নি সম্পর্কে অধ্যাপক সিদ্দিকির একটি মহাগ্রন্থ হল 'এহদ-ই-নাবি মাই তানজিম-ই-রিয়াসাত-ও-হুকুমাত' 
  7. হফম্যান, মুরাদ উইলফ্রেড (মে ২০০৭)। "The Prophet Muhammad: A Role Model for Muslim Minorities"। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস: ২৪১-২৪৩। জেস্টোর 26199808