ইয়াভুজ সেলিম মসজিদ
ইয়াভুজ সেলিম মসজিদ বা প্রথম সেলিম মসজিদ বা ইয়াভুজ সুলতান সেলিম মসজিদ নামেও পরিচিত (তুর্কি: Yavuz Selim Camii) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত একটি মসজিদ। ইস্তাম্বুলের ৫ম পাহাড়ের শীর্ষে মসজিদটি অবস্থিত। ১৬তম শতাব্দীর উসমানীয় সাম্রাজ্যের মসজিদ ।মসজিদের আকার এবং ভৌগোলিক অবস্থান ইস্তাম্বুলের আকাশ থেকে সহজেই দেখা যায় ও চিহ্নিত করা যায়।
ইয়াভুজ সেলিম মসজিদ প্রথম সেলিম মসজিদ | |
---|---|
ইস্তাম্বুলের ইয়াভুজ সেলিম মসজিদ | |
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | ইসলাম |
অবস্থান | |
অবস্থান | ইস্তাম্বুল, তুরস্ক |
স্থানাঙ্ক | ৪১°০১′৩৫.৬″ উত্তর ২৮°৫৭′৪.৮″ পূর্ব / ৪১.০২৬৫৫৬° উত্তর ২৮.৯৫১৩৩৩° পূর্ব |
স্থাপত্য | |
ধরন | মসজিদ |
ভূমি খনন | ১৫২০/২০ |
সম্পূর্ণ হয় | ১৫২৭/২৮ |
নির্দিষ্টকরণ | |
উচ্চতা (সর্বোচ্চ) | ৩২.৫ মি (১০৭ ফু) |
গম্বুজের ব্যাস (বাহিরে) | ২৪.৫ মি (৮০ ফু) |
মিনার | ২ |
মিনারের উচ্চতা | ৪৫ মি (১৪৮ ফু)? |
উপাদানসমূহ | কাটা পাথর, গ্রানাইট, মার্বেল |
ইতিহাসসম্পাদনা
ইয়াভুজ সেলিম মসজিদটি ইস্তাম্বুলে বর্তমানে বিদ্যমান রয়েছে এমন দ্বিতীয় প্রাচীনতম একটি রাজকীয় মসজিদ। ১৫২০ সালে মারা যাওয়া তার পিতা প্রথম সেলিম স্মরণে উসমানীয় সুলতান প্রথম সুলাইমানের নির্দেশে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। আলাউদ্দিন (এসেম আলিসি) এই মসজিদের স্থপতি।[১] ১৫২৭/১৫২৮ সালে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। বিখ্যাত রাজকীয় স্থপতি মিমার সিনানের সাথে মসজিদের সংশ্লিষ্ট প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়েছে, তবে সহায়ক দলিলভিত্তিক কোনও প্রমাণ নেই এবং মসজিদ নির্মাণের তারিখটি যথাসময়ের পূর্বকালীন। তবে মসজিদের বাগানের অন্যতম সমাধিক্ষেত্র মিমার সিনানের কাজ (নীচে দেখুন)।
স্থাপত্যসম্পাদনা
বাহ্যিকসম্পাদনা
মসজিদটি আসপারের ছিস্তেরন জলাশয়ের পাশে একটি উপত্যকার ছাদে নির্মিত হয়েছে। যে জলাশয়টি কনস্ট্যান্টিনোপলের তিনটি রোমান জলাশয়ের মধ্যে বৃহত্তম। বিশাল উঠোনে (অ্যাভলু) বিভিন্ন ধরনের মার্বেল এবং গ্রানাইটের কলামযুক্ত একটি বারান্দা রয়েছে। মসজিদে কুয়েদা সেকা কৌশলটি ব্যবহার করে রঙিন টাইলসের কারুকার্য রয়েছে। এগুলো তোপকাপি প্রাসাদের সার্কনসিশন কক্ষের অগ্নিকুণ্ডের উভয় পাশের জানালাগুলির উপরে অবস্থিত লুথিন অংশের মতো।[২][৩] মসজিদটি দুটি মিনার দ্বারা গঠিত।
অভ্যন্তরীণসম্পাদনা
মসজিদের অভ্যন্তরে একটি সাধারণ বর্গক্ষেত্রাকার কক্ষ রয়েছে যা উভয়দিকে ২৪.৫ মিটার (৮০ ফু) বিশিষ্ট। কক্ষের উপরে ৩২.৫ মিটার (১০৭ ফু) উচ্চতার একটি গম্বুজ রয়েছে।[৪] আয়া সোফিয়া মতো গম্বুজটি পুরো গোলার্ধের চেয়ে অনেক অল্প। জানালাগুলি পলিক্রোম কুয়েরদা সেকা টাইলসের লভেনিয়াল প্যানেলে সজ্জিত। প্রধান ঘরের উত্তর এবং দক্ষিণে গম্বুজযুক্ত পথগুলি চারটি ছোট গম্বুজযুক্ত কক্ষের দিকে নিয়ে গিয়েছে। যেগুলো ভ্রাম্যমাণ দরবেশদের জন্য ধর্মশালা হিসাবে কাজ করার উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছে।
সমাধিসম্পাদনা
মসজিদের পেছনে বাগানে অবস্থিত এবং গোল্ডেন হর্নের পাশে সুলতান প্রথম সেলিম সমাধি রয়েছে। ১৫২৩ সালে এর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়।[৪] ভবনটি বাহ্যিকভাবে অষ্টভুজাকৃতির এবং এতে একটি বারান্দা রয়েছে যা অনন্য শৈলীর টাইলস দ্বারা সজ্জিত।[৫]
বহির্মুখীর পাথরের খোদাই করা দীর্ঘ শিলালিপি সহ দ্বিতীয় অষ্টভুজাকার সমাধি ক্ষেত্রে প্রথম সুলাইমানের চার সন্তানের সমাধিসৌধ রয়েছে। এটি ১৫৫৬ সালের এবং মিমার সিনান কর্তৃক নকশা করা।
বাগানের তৃতীয় সমাধিটি প্রথম আবদুলমেসিড সুলতানের। যা ১৮৬১ সালে তার মৃত্যুর কিছু আগে তৈরি করা হয়েছে।
চিত্রশালাসম্পাদনা
আরও দেখুনসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ Necipoğlu 2005।
- ↑ Necipoğlu 1990।
- ↑ Carswell 2006।
- ↑ ক খ Goodwin 2003।
- ↑ Goodwin 2003, পৃ. 187।
সূত্রসম্পাদনা
- Carswell, John (২০০৬)। Iznik Pottery। British Museum Press। আইএসবিএন 978-0-7141-2441-4।
- Goodwin, Godfrey (২০০৩)। A History of Ottoman Architecture। Thames & Hudson। আইএসবিএন 0-500-27429-0।
- Necipoğlu, Gülru (১৯৯০)। From International Timurid to Ottoman: a change of taste in sixteenth-century ceramic tiles। Muqarnas। পৃষ্ঠা 136–170। জেস্টোর 1523126।
- Necipoğlu, Gülru (২০০৫)। The Age of Sinan: Architectural Culture in the Ottoman Empire। Reaktion Books। আইএসবিএন 978-1-86189-253-9।
আরও পড়ুনসম্পাদনা
- Faroqhi, Suraiyah (২০০৫)। Subjects of the Sultan: Culture and Daily Life in the Ottoman Empire। I B Tauris। আইএসবিএন 1-85043-760-2।
- Freely, John (২০০০)। Blue Guide Istanbul। W. W. Norton & Company। আইএসবিএন 0-393-32014-6।
- Rogers, J.M. (২০০৭)। Sinan: Makers of Islamic Civilization। I B Tauris। আইএসবিএন 1-84511-096-X।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- সুলতান সেলিম কলিজা, আর্চনেট
- ডিক ওসমানের তোলা মসজিদের ছবি
- আরকিটেরা ডটকমে - ইয়াভুজ সুলতান সেলিম মসজিদটি পুনর্নির্মাণাধীন ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৫ তারিখে