ইমদাদুল হক মিলন
ইমদাদুল হক মিলন (জন্ম: ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৫৫) হলেন একজন বাংলাদেশী কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার। তিনি গল্প, উপন্যাস এবং নাটক এই তিন শাখাতেই জনপ্রিয় রচনা উপহার দিয়েছেন। কিশোর বাংলা নামীয় পত্রিকায় শিশুতোষ গল্প লিখে তার সাহিত্যজগতে আত্মপ্রকাশ। ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকায় 'সজনী' নামে একটি ছোট গল্প লিখে পাঠকের দৃষ্টি আর্কষণ করতে শুরু করেন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০১৯ সালে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।[১]
ইমদাদুল হক মিলন | |
---|---|
জন্ম | বিক্রমপুর | ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৫৫
পেশা | সাংবাদিক, নাট্যকার, কলাম লেখক |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশী |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | একুশে পদক (২০১৯) বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বাচসাস পুরস্কার চিত্তরঞ্জন দাশ স্বর্ণপদক |
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাকথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন ১৯৫৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর বিক্রমপুরের মেদিনীমণ্ডল গ্রামে নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস মুন্সীগঞ্জ বিক্রমপুরের লৌহজং থানার পয়সা গ্রামে। তার বাবার নাম গিয়াসুদ্দিন খান এবং মার নাম আনোয়ারা বেগম। তিনি ১৯৭২ সালে লৌহজং উপজেলার কাজীর পাগলা হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৭৪ সালে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯৭৯ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকেই স্নাতক (সম্মান) সম্পূর্ণ করেন।
কর্মজীবন
সম্পাদনাইমদাদুল হক মিলন লেখক হিসেবে এপার-ওপার দুই বাংলায়ই তুমুল জনপ্রিয়। দুই বাংলায়ই তার 'নূরজাহান' উপন্যাসটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তিনি বর্তমানে দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক।[২]
ব্যক্তিজীবন
সম্পাদনাব্যক্তিজীবনে ইমদাদুল হক মিলন বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক।
সাহিত্যকীর্তি
সম্পাদনাতার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ২ শত। অধিবাস, পরাধীনতা, কালাকাল, বাঁকাজল, নিরন্নের কাল, পরবাস, কালোঘোড়া, মাটি ও মানুষের উপাখ্যান, পর, কেমন আছ সবুজপাতা, জীবনপুর প্রভৃতি তার বিখ্যাত বই।
নাটক
সম্পাদনাতার লেখা দেড়শতাধিক নাটকের মধ্যে কোন কাননের ফুল, বারো রকম মানুষ, রূপনগর, যুবরাজ, কোথায় সেজন, আলতা, একজনা, নীলু, তোমাকেই, ছোছা কদম, আঁচল, খুঁজে বেড়াই তারে, কোন গ্রামের মেয়ে, মেয়েটি এখন কোথায় যাবে, বিপুল দর্শকপ্রিয়তা পায়।
পুরস্কার ও স্বীকৃতি
সম্পাদনা- ১৯৮৬: বিশ্ব জ্যোতিষ সমিতি পুরস্কার।
- ১৯৮৭: ইকো সাহিত্য পুরস্কার।
- ১৯৯২: হুমায়ুন কাদির সাহিত্য পুরস্কার।
- ১৯৯২: বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার।
- ১৯৯৩: পূরবী পদক।
- ১৯৯৪: বিজয় পদক।
- ১৯৯৫: মনু থিয়েটার পদক।
- ১৯৯৫: যায়যায়দিন পত্রিকা পুরস্কার।
- ১৯৯৬: ঢাকা যুব ফাউণ্ডেশন পদক।
- ২০০২: বাচসাস পুরস্কার।
- ২০০৪: জিয়া শিশু একাডেমী কমল পদক।
- এস এম সুলতান পদক
- জাপান রাইটার্স অ্যাওয়ার্ড
- মাদার তেরেসা পদক
- অগ্রণী ব্যাংক শিশু একাডেমী শিশুসাহিত্য পুরস্কার, (২০১৬) [৩]
- একুশে পদক (২০১৯) [৪]
এছাড়াও, কথাসাহিত্যে অনবদ্য অবদান রাখায় 'চিত্তরঞ্জন দাশ স্বর্ণপদক' লাভ করেন।[৫] এছাড়া ২০০৬ সালে জাপান ফাউন্ডেশন আয়োজিত 'তাকেশি কায়েকো মেমোরিয়াল এশিয়ান রাইটারস লেকচার সিরিজে' বাংলাভাষার একমাত্র লেখক হিসেবে তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন। জাপানের চারটি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে তিনি বাংলাদেশের সাহিত্য এবং তার নিজের লেখা নিয়ে বক্তৃতা করেন। এশিয়ার লেখকদের জন্য এ এক বিরল সম্মান।[৬] পেয়েছেন ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার আইআইপিএম-সুরমা চৌধুরী মেমোরিয়াল ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড।[৭]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "একুশে পদক ২০১৯ পাচ্ছেন ২১ বিশিষ্ট নাগরিক"। দৈনিক কালের কণ্ঠ। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ https://www.risingbd.com। "কালের কণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হলেন শাহেদ মুহাম্মদ আলী"। Risingbd Online Bangla News Portal (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২১।
- ↑ "অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার পেলেন ৩৯ সাহিত্যিক"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-১১।
- ↑ "একুশে পদক পাচ্ছেন ২১ গুণী"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-০৬।
- ↑ দৈনিক কালেরকণ্ঠঃ ফ্যাক্ট ফাইল
- ↑ ইমদাদুল হক মিলনের জন্মদিন
- ↑ আইআইপিএম-সুরমা চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার পেলেন ইমদাদুল হক মিলন[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]