ইদ্রাকপুর কেল্লা
ইদ্রাকপুর কেল্লা অথবা ইদ্রাকপুর দুর্গ মুন্সীগঞ্জ জেলার মুন্সীগঞ্জ শহরে অবস্থিত একটি মোঘল স্থাপত্য। সম্ভবত বাংলার সুবাদার ইসলাম ইসলাম খাঁ অথবা মীর জুমলা ষোলশ শতকের দিকে জাহাঙ্গীর নগর (বর্তমান ঢাকা) কে পর্তুগিজ ও মগ জলদস্যু থেকে রক্ষা করতে কিছু স্থানে তিনটি জল দুর্গ তৈরি করে তার মধ্যে এটি একটি, মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরের ইছামতি নদীর পশ্চিম তীরে ইদ্রাকপুর নামক স্থানে এই দুর্গটি নির্মাণ করেন।[১] দুর্গটি নারায়নগঞ্জের হাজীগঞ্জ ও সোনাকান্দা দুর্গের চেয়ে আয়তনে কিছুটা ছোট।[২]
সুরঙ্গপথে ঢাকার লালবাগ দুর্গের সাথে এই দুর্গের যোগাযোগ ছিল বলে একটি জনশ্রুতি প্রচলিত আছে। সুউচ্চ প্রাচীরবিশিষ্ট এই দুর্গের প্রত্যেক কোনায় রয়েছে একটি বৃত্তাকার বেষ্টনী। দুর্গাভ্যন্তর থেকে শত্রুর প্রতি গোলা নিক্ষেপের জন্য প্রাচীরের মধ্যে অসংখ্য চতুষ্কোণাকার ফোঁকর রয়েছে একমাত্র খিলানাকার দরজাটির অবস্থান উত্তর দিকে। মূল প্রাচীরের পূর্ব দেয়ালের মাঝামাঝি অংশে ৩৩ মিটার ব্যাসের একটি গোলাকার উঁচু মঞ্চ রয়েছে। দূর থেকে শত্রুর চলাচল পর্যবেক্ষণের জন্য প্রায় প্রতি দুর্গে এই ব্যবস্থা ছিল। এই মঞ্চকে ঘিরে আর একটি অতিরিক্ত প্রাচীর মূল দেয়ালের সাথে মিলিত হয়েছে। দুর্গের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সূদৃঢ় করার জন্য এটি নির্মিত হয়েছিল। কেল্লাটির তিন কিলোমিটারের মধ্যেই ইছামতী, ধলেশ্বরী, মেঘনা এবং শীতলক্ষা নদীর অবস্থান। মোঘল স্থাপত্যের একটি অনন্য কীর্তি হিসেবে ইদ্রাকপুর দুর্গটি ১৯০৯ সালে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষিত হয়।
মোঘলরা যখন বাংলাদেশে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার প্রচেষ্টা নেয়, তখন দেখতে পায়, বাংলার বার ভুঁইয়া ও প্রতিকুল নদীবেষ্ঠিত জনপদ ছাড়াও তাদের আরেক শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হল মগ (আরাকানী), পর্তুগীজ ও ওলন্দাজ জলদস্যু, যারা কিনা মেঘনা নদী দিয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে এসে মূল ভূখন্ডে লুঠতরাজ করতো। মধ্যএশিয়ার নদীবিবর্জিত অঞ্চল থেকে আসা মূলত ঘোড়সওয়ার মুঘলরা অচীরেই বুঝতে পারে, বাংলাদেশে সাম্রাজ্য সুদৃঢ় করার গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল এদেশের জলপথকে সুরক্ষিত করা। ধারণা করা হয় সুবাদার ইসলাম খান, বাংলায় মুঘল নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করার প্রক্রিয়া শুরু করেন এবং একজন নৌপ্রধান বা মীর-ই-বহর নিয়োগ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তি ১০০ বছরে তিনটি দূর্গ গড়ে ওঠে যার একটি হলো ইদ্রাকপুর দূর্গ (অন্য দু'টি হাজিগঞ্জ দূর্গ ও সোনাকান্দা দূর্গ)।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Sahanaoyaja, AKM (২০১৫-০১-২৬)। "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য [Cultural Heritage]। Daily Jugantor। ২০১৫-০১-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০২-০২।
- ↑ Ali Imam (২০০৯)। জাহাঙ্গীরনগর থেকে ঢাকা। সৃজনী।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাএই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |