বৈদ্যুতিক রিকশা

বৈদ্যুতিক যানবাহন
(ইজি বাইক থেকে পুনর্নির্দেশিত)

বৈদ্যুতিক রিকশা[ক] একপ্রকার বিদ্যুৎচালিত তিনচাকাবিশিষ্ট বাহন। কম দাম ও বিদ্যুৎচালিত হওয়ার কারণে জ্বালানী খরচ না থাকায় এটি অর্থনৈতিক দিক থেকে বেশ লাভজনক। এ কারণে তা অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এছাড়া এই বাহনগুলো শব্দদূষণও করে না।[৫] এর ব্যাপক সমাদর, জনপ্রিয়তা ও সহজলভ্যতার কারণে খুব সহজেই এটি প্রচলিত অনেক পৌর যানবাহনের অন্যতম বিকল্প হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।[৬]

নেপালের লুম্বিনীতে একগুচ্ছ বৈদ্যুতিক রিকশা
বাংলাদেশের কুমিল্লা শহরে একাধিক বৈদ্যুতিক রিকশা
ভারতের হাওড়া শহরে একটি বৈদ্যুতিক রিকশা

সঠিকভাবে চালু করা হলে বৈদ্যুতিক রিকশা কম বায়ু দূষণ ঘটাবে এবং নিম্নবিত্ত মানুষদের পরিপূরক পরিবহন প্রদান করবে যারা পরিবহন পরিষেবার অভাবে ভুগছেন।[৭] এই বৈদ্যুতিক রিকশাগুলির বেশিরভাগই চীন, নেপাল, বাংলাদেশভারতে তৈরি হয়।[৬][৫]

ব্যবহার সম্পাদনা

বাংলাদেশ সম্পাদনা

বাংলাদেশ চীন থেকে সরাসরি বা অন্যান্য দেশের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক রিকশা আমদানি করত। সস্তা ও পরিবহনের আরও ভালো মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত শহরগুলির কাছে এটি পছন্দের ছিল। তবে ৫ মে ২০১১-এ এক আন্তঃমন্ত্রী বৈঠকের পর মূলত বেআইনিভাবে বৈদ্যুতিক সরবরাহের জন্য সরকার এই যানবাহনের আমদানি ও নির্মাণ নিষিদ্ধ করেছিল করেছিল এবং বিদ্যমান বৈদ্যুতিক রিকশাগুলিকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।[৭]

ভারত সম্পাদনা

বৈদ্যুতিক রিকশা ভারতের জনগণের জীবিকা পালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রদান করে। কম দাম ও উচ্চ দক্ষতার জন্য তারা ভারতের রাস্তায় গ্রহণযোগ্য।[৮] বৈদ্যুতিক রিকশার সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দিল্লিসহ ভারতের অন্যান্য জায়গায় এটি বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে।[৫]

প্রথমদিকে, বৈদ্যুতিক রিকশা ভারতের কোনো কেন্দ্রীয় আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল না। কিন্তু ৩১ জুলাই ২০১৪-এ নিরাপত্তার জন্য পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশনের (পিআইএল) মাধ্যমে দিল্লি উচ্চ আদালত রাজধানী দিল্লিতে বৈদ্যুতিক রিকশা নিষিদ্ধ করেছিল।[৯] দিল্লিতে বৈদ্যুতিক রিকশা নিয়ন্ত্রণের জন্য আয়োজিত এক মিছিলে তৎকালীন পরিবহন মন্ত্রী নিতিন গডকরি বলেছিলেন যে দিল্লির পৌরসংস্থাসমূহ কেবল ₹১০০ পারিশ্রমিকের দ্বারা বৈদ্যুতিক রিকশাদের নিয়ন্ত্রিত করতে পারত। রেজিস্ট্রেশনের পর পৌরসংস্থাসমূহ চালকদের জন্য পরিচয় কার্ড দিত যাতে করে তারা সহজে আয় করতে পারত।[১০] এই নীতি চালু হলে পৌরসংস্থা ও ট্রাফিক পুলিশ নীতি লঙ্ঘনের জন্য জরিমান্র পরিমাণ নির্দিষ্ট করত।[১০] কিন্তু এই নীতিকে কখনও বাস্তবায়িত করা হয়নি। ত্রিপুরার মতো কিছু রাজ্য পৌর বাই-ল বা রাজ্য আইনের দ্বারা বৈদ্যুতিক রিকশাদের নিয়ন্ত্রিত করেছিল।[৯] মার্চ ২০১৫-এ ভারতীয় সংসদ মোটর গাড়ি (সংশোধনী) আইন, ২০১৫ পাস করেছিল, যার ফলে বৈদ্যুতিক রিকশা আইনসম্মত হয়েছিল।[১১]

আরও দেখুন সম্পাদনা

টীকা সম্পাদনা

  1. অন্যান্য নাম ইজি বাইক, বৈদ্যুতিক টুকটুক,[১] ই-রিকশা,[২] টোটো[৩]ই-ট্রাইসাইকেল[৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Tripura to register battery-operated rickshaws"। Zee News। ২৫ জুন ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  2. Mohammad, Anas (২১ অক্টোবর ২০১৪)। "Meet Tabassum Bano - the first female e-rickshaw driver of Allahabad"I am in DNA of India। Allahabad। Archived from the original on ২৯ অক্টোবর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০ অক্টোবর ২০১৪ 
  3. "'Invention of Toto a stellar achievement'"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মার্চ ২০১৯ 
  4. Agaton, Casper Boongaling; Collera, Angelie Azcuna; Guno, Charmaine Samala (২০২০)। "Socio-Economic and Environmental Analyses of Sustainable Public Transport in the Philippines"। Sustainability (ইংরেজি ভাষায়)। 12 (11): 4720। ডিওআই:10.3390/su12114720  
  5. Jamil, Faiz। "Regulation threatens India's e-rickshaws"Al Jazeera। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  6. "It's cheaper: Dealers import rickshaw parts from China, assemble them here"The Indian Express। ২০ মার্চ ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  7. "Electric rickshaws run out of steam"The Daily Star। ৩০ মে ২০১১। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  8. Bose, Pratim Ranjan (১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। "Cheap rides, low costs: it's Tuk-Tuk time in Tripura"Business Line। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  9. Harding, Simon; Rojesh, Seram (৩১ আগস্ট ২০১৪)। "Battery Rickshaws in New Delhi and the Regulation Conundrum"Economic and Political WeeklyXLIX (35)। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  10. "Municipal corporations to frame policy on e-rickshaws in a month's time"The Economic Times। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  11. "E-Rickshaw Bill Passed"। ১০ মার্চ ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ 

আরও পড়ুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা