আশুতোষ গোয়ারিকর

ভারতীয় অভিনেতা

আশুতোষ গোয়ারিকর (মারাঠি: आशुतोष गोवारीकर; জন্ম: ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৪) হলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চিত্রনাট্যকার। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র পহলা নশা (১৯৯৩)। তার পরিচালিত অন্যান্য চলচ্চিত্র হল লগান (২০০১), স্বদেশ (২০০৪), জোধা আকবর (২০০৯), খেলে হাম জি জান সে (২০১০), মহেঞ্জো দাড়ো (২০১৬)। লগান চলচ্চিত্রটি ৭৪তম একাডেমি পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্রের জন্য একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করে এবং এর ফলে তিনি একাডেমি পুরস্কারে ভোটিং মেম্বার হন।[]

আশুতোষ গোয়ারিকর
২০১২ সালে আশুতোষ গোয়ারিকর
জন্ম (1964-02-15) ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৪ (বয়স ৬০)
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাচলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার
কর্মজীবন১৯৮৪-বর্তমান
উল্লেখযোগ্য কর্ম
রং দে বাসন্তী (২০০৬)
ভাগ মিলখা ভাগ (২০১৩)
দাম্পত্য সঙ্গীসুনিতা গোয়ারিকর
পিতা-মাতাঅশোক গোয়ারিকর (পিতা)
কিশোরি গোয়ারিকর (মাতা)
পুরস্কারপূর্ণ তালিকা
ওয়েবসাইটআশুতোষ গোয়ারিকর

প্রাথমিক জীবন

সম্পাদনা

গোয়ারিকর ১৯৬৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভারতের মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা অশোক গোয়ারিকর ও মাতা কিশোরি গোয়ারিকর। তার পরিবার কোহলাপুরের বাসিন্দা ছিল। আশুতোষ প্রাক্তন অভিনেতা দেব মুখার্জীর প্রথম পক্ষের কন্যা সুনিতাকে বিয়ে করেন।[] তাদের দুই পুত্র - কোনার্ক ও বিশ্বাঙ্গ।

কর্মজীবন

সম্পাদনা

গোয়ারিকর তার চলচ্চিত্র কর্মজীবন শুরু করেন কেতন মেহতা পরিচালিত হোলি (১৯৮৪) এ অভিনয়ের মাধ্যমে। পরবর্তীতে তিনি সার্কাস (১৯৮৯), সি.আই.ডি টেলিভিশন ধারাবাহিক এবং নাম (১৯৮৬), গুঞ্জ, চমৎকার (১৯৯২) ও কভি হাঁ কভি না চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।[]

১৯৯৩ সালে তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র পহলা নশা মুক্তি পায়। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন দীপক তিজোরি, রবীনা ট্যান্ডনপূজা ভাট[] তার পরিচালিত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র বাজি মুক্তি পায় ১৯৯৫ সালে। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন আমির খানমমতা কুলকার্নি[]

২০০১ সালে রচনা ও পরিচালনা করেন লগান। ছবিটি প্রযোজনা করেন ও এতে অভিনয় করেন আমির খান। চলচ্চিত্রটি ১৮শ শতাব্দীর শেষের দিকে এক গ্রামবাসী ও ইংরেজদের মধ্যে অনুষ্ঠিত ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে নির্মিত হয়।[] এটি ২০০১ সালে তৃতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র। ছবিটি ৭৪তম একাডেমি পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্রের জন্য একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করে।[] ২০০৪ সালে তিনি শাহরুখ খানকে নিয়ে নির্মাণ করেন স্বদেশ[] ছবিটি সমালোচকদের প্রশংসা লাভ করে।[]

২০০৮ সালে তিনি ১৬শ শতাব্দীর মুঘল সম্রাট আকবর ও তার স্ত্রী জোধাবাইয়ের প্রণয় থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাণ করেন ঐতিহাসিক মহাকাব্যিক প্রেমধর্মী চলচ্চিত্র জোধা আকবর। এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনহৃতিক রোশন[] পরের বছর তিনি রোম্যান্টিক কমেডিধর্মী হোয়াট্‌স ইওর রাশী! নির্মাণ করেন। এতে হরমন বাওয়েজার সাথে ১২টি চরিত্রে অভিনয় করেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। পরবর্তীতে ১৯৩০ সালে অবিভক্ত বাংলার চট্টগ্রামের দাঙ্গা নিয়ে নির্মাণ করেন খেলে হাম জি জান সে (২০১০)।[১০] এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন অভিষেক বচ্চনদীপিকা পাড়ুকোন[১১]

২০১৬ সালে দীর্ঘ সতেরো বছর পর অভিনয় করেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া প্রযোজিত মারাঠি চলচ্চিত্র ভেন্টিলেটর-এ।[১২] এরপর ২০১৭ সালে প্রায় ছয় বছর পর ফিরে আসেন মহেঞ্জো দাড়ো চলচ্চিত্র পরিচালনা দিয়ে। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন হৃতিক রোশন ও নবাগত পূজা হেগড়ে[১৩]

চলচ্চিত্রের তালিকা

সম্পাদনা
বছর চলচ্চিত্র ভূমিকা টীকা
পরিচালক প্রযোজক চিত্রনাট্যকার
১৯৯৩ পহলা নশা  Y  N  Y
১৯৯৫ বাজি  Y  N  Y
২০০১ লগান  Y  N  Y বিজয়ী: ফিল্মফেয়ার পুরস্কার - শ্রেষ্ঠ পরিচালক ও শ্রেষ্ঠ কাহিনী
২০০৪ স্বদেশ  Y  Y  Y
২০০৮ জোধা আকবর  Y  Y  Y বিজয়ী: ফিল্মফেয়ার পুরস্কার - শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র (প্রযোজক) ও শ্রেষ্ঠ পরিচালক
২০০৯ হোয়াট্‌স ইওর রাশী?  Y  Y  Y
২০১০ খেলে হাম জি জান সে  Y  Y  Y
২০১৬ মহেঞ্জো দাড়ো  Y  Y  Y
২০১৯ পানিপথ  Y  N  N

পুরস্কার ও মনোনয়ন তালিকা

সম্পাদনা
পুরস্কার বছর পুরস্কারের বিভাগ মনোনীত চলচ্চিত্র ফলাফল
ফিল্মফেয়ার পুরস্কার ২০০২ শ্রেষ্ঠ পরিচালক লগান বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ কাহিনী বিজয়ী
২০০৫ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র স্বদেশ মনোনীত
২০০৯ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র জোধা আকবর বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিজয়ী
আইফা পুরস্কার ২০০২ শ্রেষ্ঠ পরিচালক লগান বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ কাহিনী বিজয়ী
২০০৫ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র স্বদেশ মনোনীত
শ্রেষ্ঠ পরিচালক মনোনীত
শ্রেষ্ঠ কাহিনী মনোনীত
২০০৯ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র জোধা আকবর বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিজয়ী

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Thomas, Rebecca (২২ ফেব্রুয়ারি ২০০৫)। "Picking Oscar winners - a juror's tale"বিবিসি নিউজ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭ 
  2. Pradhan, Bharathi S. (৪ আগস্ট ২০১৩)। "Once again, love in Bombay"দ্য টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭ 
  3. Pathak, Ankur (১৯ অক্টোবর ২০১৬)। "Ashutosh Gowariker On What Went Wrong With 'Mohenjo Daro' And His Return To Acting With 'Ventilator'"হাফিংটন পোস্ট (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭ 
  4. "Pehla Nasha"বলিউড লাইফ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭ 
  5. "Aamir Khan to playpouting club dancer in Ashutosh Gowarikar's Baazi"ইন্ডিয়া টুডে (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ এপ্রিল ১৯৯৫। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭ 
  6. "How Did the Idea of Lagaan Come to Ashutosh Gowariker?"এনডিটিভি (ইংরেজি ভাষায়)। ১ সেপ্টেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭ 
  7. "'Swades, not an anti brain-drain film'"রেডিফ (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ ডিসেম্বর ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭ 
  8. "Can't thank Ashutosh Gowariker enough for Swades: Shah Rukh Khan"ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস (ইংরেজি ভাষায়)। মুম্বই। ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭ 
  9. "I've done my research for 'Jodha-Akbar': Gowarikar"ডেইলি নিউজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ মার্চ ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭ 
  10. "Ashutosh to launch 'Khelein Hum Jee Jaan Sey'"ইন্ডিয়া টুডে (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ নভেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭ 
  11. "Abhishek Bachchan on Khelein Hum Jee Jaan Sey"ম্যানচেস্টার ইভেনিং নিউজ (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ নভেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭ 
  12. "Priyanka Chopra proud of her debut Marathi production"দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ জানুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭ 
  13. "Picking Oscar winners - a juror's tale"দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া (ইংরেজি ভাষায়)। ২৮ জানুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা