আল-জাহরা বিশ্ববিদ্যালয়
আল-জাহরা বিশ্ববিদ্যালয় ইরানের তেহরান শহরের ভানাক এলাকায় অবস্থিত একটি মহিলা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি ইরান ও মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নের জন্য ভর্তি পরীক্ষায় শীর্ষ ১% শিক্ষার্থীদের মধ্যে থাকতে হয়। ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি ইরানে দ্বিতীয় এবং বিশ্বে ২০১-৩০০ তম স্থান অর্জন করেছে।[১][২]
নীতিবাক্য | শিক্ষিত নারী, সমৃদ্ধ সমাজ |
---|---|
ধরন | সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় |
স্থাপিত | ১৯৬৪ |
আচার্য | জাহরা নাজেম বোকাই |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | ৪৩৪ |
শিক্ষার্থী | ৮,৮৬১ |
স্নাতক | ৬,২৬৩ |
স্নাতকোত্তর | ৩,৭৯১ |
৫৩৬ | |
অবস্থান | , ১৯৯৩৮৯৩৯৭৩ , ইরান ৩৫°৪৬′০৩″ উত্তর ৫১°২৩′৩৩″ পূর্ব / ৩৫.৭৬৭৫০° উত্তর ৫১.৩৯২৫০° পূর্ব |
শিক্ষাঙ্গন | শহুরে |
ওয়েবসাইট | en |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৬৪ সালে রানি ফারাহ পাহলভি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টি ৯০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে মেয়েদের জন্য উচ্চতর শিক্ষামূলক ইনস্টিটিউট শিরোনামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসাবে শুরু হয়েছিল। ইরানি বিপ্লবের পরে, বিশ্ববিদ্যালয়টি জনসাধারণের মর্যাদা অর্জন করে। ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের আগে নিহত একজন ইরানি বিপ্লবীর নামানুসারে বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম মাহবুবেহ মোত্তাহেদিন নামকরণ করা হয়। ১৯৮৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয় আল-জাহরা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদেরকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও ডিগ্রিতে অধ্যয়ন করানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে দশটি অনুষদ এবং নারী অধ্যয়নের জন্য একটি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। পাশাপাশি উরুমিয়া শহরে (পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী) একটি শাখা এবং দুটি স্ব-সহায়ক ক্যাম্পাস রয়েছে।
আল-জাহরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদগুলি হলো: কলা, জৈবিক বিজ্ঞান, শিক্ষা ও মনোবিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, সাহিত্য ও ভাষা, গাণিতিক বিজ্ঞান, শারীরিক শিক্ষা, পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়ন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিজ্ঞান এবং ধর্মতত্ত্ব।
১৯৯০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি একাডেমিক অ্যাফেয়ার্সের ভাইস চ্যান্সেলারির তত্ত্বাবধানে, স্নাতকে ১১ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করে স্টাডিজ বিষয় চালু করে এবং স্নাতকোত্তরে মনোবিজ্ঞান বিষয় চালু করে। ১৯৯৪ সালে ইসলামের ইতিহাসের মেজর বিভাগে প্রথম পিএইচডি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ইতিহাস (ইসলামি ইতিহাস এবং ইসলামি ইরানের ইতিহাস), মনোবিজ্ঞান, অর্থনীতি, শিল্পকলা গবেষণা, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিত বিভাগ চালু রয়েছে।
অনুষদ
সম্পাদনাবিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ প্রায় ৩৫০ জন পণ্ডিতদের একটি সম্প্রদায়, যারা শিক্ষাদান এবং গবেষণা পরিচালনা করে। অধ্যাপকরা ইরানের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি সহকর্মীদের সহযোগিতায় কাজ করেন।
স্বীকৃতি
সম্পাদনাআল-জাহরা বিশ্ববিদ্যালয় ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইউনিভার্সিটিস (আইএইউ) এবং ফেডারেশন অফ ইউনিভার্সিটিস অফ ইসলামিক ওয়ার্ল্ড (এফইউআইডাব্লু) এর সদস্য। এছাড়াও পাকিস্তান, ইরাক এবং জার্মানির মতো বিভিন্ন দেশ থেকে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়। গবেষণা কেন্দ্রগুলির সাথে একাডেমিক-গবেষণা সহযোগিতার জন্য ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেছে এবং ৪৫টিরও বেশি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।
সুযোগ-সুবিধা
সম্পাদনাআল-জাহরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ও অনুষদ গ্রন্থাগার রয়েছে যেখানে ৭৭,০০০ হার্ড কপি বই রয়েছে (যার মধ্যে ৩৩,০০০ ইংরেজিতে) এবং ৯৩০ টি ফার্সি ও ইংরেজি ভাষার সংবাদপত্র রয়েছে। আল-জাহরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য সুবিধাগুলির মধ্যে রয়েছে বৈদ্যুতিন গ্রন্থাগার, পেশাদার পরীক্ষাগার, ভাষা ল্যাব, কম্পিউটার ল্যাব, একটি আর্ট গ্যালারী, একটি শিক্ষাকেন্দ্র, ব্যবসায় ইনকিউবেটর, পুল এবং ক্রীড়া সুবিধা, খাদ্য কেন্দ্র এবং একটি ঐতিহ্যবাহী ইরানী রেস্তোঁরা। ইরানী রেস্তোঁরার ভবনটি ১২০ বছরেরও বেশি পুরানো। ক্যাম্পাসে একটি পোস্ট অফিস, ব্যাংক, ট্রাভেল এজেন্সি অফিস, সেলফোন সার্ভিসেস অফিস, মুদি দোকান, বইয়ের দোকান এবং ফটোকপি কিয়স্ক রয়েছে।[৩]
বিভাগ এবং গবেষণা কেন্দ্র
সম্পাদনা- শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগ
- সাহিত্য, ভাষা ও ইতিহাস বিভাগ
- পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন বিভাগ
- জীব বিজ্ঞান বিভাগ
- গণিত বিভাগ
- সামাজিক বিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিভাগ
- প্রকৌশল বিভাগ
- মনোবিজ্ঞান বিভাগ
- ধর্মতত্ত্ব বিভাগ
- শিল্পকলা বিভাগ
- মহিলা গবেষণা কেন্দ্র
ক্যাম্পাস
সম্পাদনা- আলবোর্জ ক্যাম্পাস
- আন্তর্জাতিক ক্যাম্পাস
- উর্মিয়া শাখা
গবেষণা ও প্রকাশনা
সম্পাদনাবিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ছয় হাজার থিসিস কাগজ ও গবেষণামূলক প্রবন্ধ রক্ষিত আছে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী
সম্পাদনাবিশ্ববিদ্যালয়টি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য স্নাতক, ডিগ্রি এবং স্নাতকোত্তর চালু রেখেছে। আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরাক, লেবানন, নাইজেরিয়া, তুরস্ক, সিরিয়া, তাজিকিস্তান এবং তানজানিয়া থেকে প্রায় ১২৮ জন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী আল-জাহরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু সুবিধা হলো:
- বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি ভাষা কেন্দ্রে ফারসি ভাষা কোর্স প্রদান।
- জনপ্রিয় চাহিদার প্রেক্ষিতে ইংরেজিতে কিছু কোর্স করানো।
- বীমা।
- অন-ক্যাম্পাস ছাত্রাবাস।
- বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রাবাসের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে হবে, যাতে ইরানি শিক্ষার্থীদের প্রবেশাধিকার সমান হয়। এর মধ্যে রয়েছে:
- সুইমিং পুল।
- স্পোর্টস কমপ্লেক্স।
- কম্পিউটার ল্যাব ও ফ্রি ওয়াই-ফাই সুবিধা।
- ছাত্র ক্লাব।
- সাধারণ ও পেশাদার গ্রন্থাগার।
- কাউন্সেলিং সেবা।
- ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সমাবেশে অংশগ্রহণ ও সদস্যপদ এবং শিক্ষার্থীদের অনুষ্ঠান উৎপাদনমূলক, বিনোদনমূলক ও চাষমূলক আয়োজন।
পদমর্যাদা
সম্পাদনাবিশ্ববিদ্যালয় ক্রম | |
---|---|
বৈশ্বিক – সামগ্রিকভাবে | |
টিএইচএ বিশ্ব[৪] | +১০০০ (২০২১) |
- টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাঙ্কিং ২০২০-এ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিভাগ বিশ্বে ৬০১-৮০০ তম স্থান অর্জন করেছে।
- রাউন্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং ২০১৯-এ প্রাকৃতিক বিজ্ঞান বিভাগ বিশ্বে ৫৫৭ এবং প্রযুক্তিগত বিজ্ঞান বিভাগ ৩৭১ তম স্থান অর্জন করেছে।
- টাইমস হায়ার এডুকেশন ইউনিভার্সিটি ইমপ্যাক্ট র্যাঙ্কিং 2019-এ ২০১ তম স্থান অর্জন করেছে।
- ইউআই গ্রিন মেট্রিক ২০১৮-এ ৬৮ তম স্থান অর্জন করেছে।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "رتبه دوم تاثیرگذاری بر توسعه پایدار به دانشگاه الزهرا رسید"। خبرگزاری جمهوری اسلامی। ৬ এপ্রিল ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৪-১০।
- ↑ "World University Rankings 2019 by subject: physical sciences"। Times Higher Education (THE) (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-১০-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৫-০৯।
- ↑ "about Alzahra University"। ২০১৫-১২-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১২-২৩।
- ↑ World University Rankings 2021, THE Education Ltd, ২৫ আগস্ট ২০২০, সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০২০