শ্রবণাতীত শব্দ
শ্রবণাতীত শব্দ বলতে এমন সব শব্দতরঙ্গকে বোঝায় যাদের কম্পাঙ্ক মানুষের ঊর্ধ্ব-শ্রবণসীমার (২০ হাজার হার্জ) উপরে অবস্থিত। একে অতিস্বনক শব্দ, শ্রবণোত্তর শব্দ, ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। ইংরেজিতে একে "আলট্রাসাউন্ড" (Ultrasound) বলে। শ্রবণাতীত শব্দগুলির ভৌত ধর্ম "স্বাভাবিক" শ্রবণযোগ্য শব্দের তুলনায় ভিন্ন নয়, কিন্তু মানুষ এগুলি শুনতে পারে না। ব্যক্তিভেদে শ্রবণসীমা ভিন্ন হলেও সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক তরুণ-তরুণীদের শ্রবণসীমা ২০ হার্জ থেকে ২০,০০০ হার্জ (২০ কিলোহার্জ) পর্যন্ত হয়ে থাকে। শ্রবণাতীত যন্ত্রগুলি ২০ কিলোহার্জ থেকে একাধিক গিগাহার্জ (১ লক্ষ হার্জ) পর্যন্ত কম্পাঙ্কে কাজ করতে পারে।
শ্রবণাতীত শব্দ বহু বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। শ্রবণাতীত বা অতিস্বনক যন্ত্রগুলি দিয়ে বস্তু শনাক্ত করা হয় ও দূরত্ব পরিমাপ করা হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে শ্রবণাতীত শব্দচিত্রগ্রহণ বা অতিস্বনক চিত্রগ্রহণ (Ultrasound imaging) এবং শ্রবণাতীত শব্দচিত্রলেখ বা অতিস্বনক চিত্রলেখ (Ultrasonography) নামক পদ্ধতি ব্যবহার করে দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গসমূহের স্থির বা চলমান চিত্রগ্রহণ ব্যাপক প্রচলিত। উৎপন্ন পণ্যদ্রব্য ও কাঠামোর ধ্বংসহীন পরীক্ষণের সময় শ্রবণাতীত শব্দ ব্যবহার করে খালি চোখে অদৃশ্য ত্রুটি শনাক্ত করা হয়। শিল্পক্ষেত্রে শ্রবণাতীত শব্দ পরিস্করণ, মিশ্রণ ও রাসায়নিক প্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণের কাজে ব্যবহার করা হয়। বাদুড় এবং শিশুমার (এক ধরনের শুশুক বা ডলফিন জাতীয় সামুদ্রিক প্রাণী) শ্রবণাতীত শব্দ ব্যবহার করে শিকার বা প্রতিবন্ধকতার অবস্থান নির্ণয় করে।[১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Novelline R (১৯৯৭)। Squire's Fundamentals of Radiology (5th সংস্করণ)। Harvard University Press। পৃষ্ঠা 34–35। আইএসবিএন 978-0-674-83339-5।