আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকস
আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকস শারীরিক কলা-কৌশল প্রদর্শনের ক্রীড়া জিমন্যাস্টিকসের একটি বিভাগ। এতে জিমন্যাস্টগণ ৩০ থেকে ৯০ সেকেন্ডের মধ্যে স্বল্পকালীন সময়ে তাদের ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করে থাকেন। এ ক্রীড়া বিষয়ে যে প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে থাকেন, তিনি আর্টিস্টিক জিমন্যাস্ট নামে সর্বসমক্ষে পরিচিতি লাভ করেন। ফেদারেশিও ইন্টারনেশিওনাল দ্য জিমন্যাস্টিক (ফিগ) সংস্থা কর্তৃক এ ক্রীড়াটি পরিচালিত হয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বৃহৎ প্রতিযোগিতায় সংস্থাটি পয়েন্ট নির্ধারণ ও নিয়ম-কানুন প্রণয়ন করে থাকে। নির্দিষ্ট দেশে জিমন্যাস্টিকস ক্রীড়া জাতীয় সংস্থা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়। গ্রেট ব্রিটেনে বিএজিএ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইউএসএ জিমন্যাস্টিকস এর উদাহরণ। আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকস গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে ব্যাপক দর্শকনন্দিত ক্রীড়া হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
সর্বোচ্চ ক্রীড়া পরিচালনা সংস্থা | ফেদারেশিও ইন্টারনেশিওনাল দ্য জিমন্যাস্টিক |
---|---|
নিবন্ধিত খেলোয়াড় | ১৮৮১ |
বৈশিষ্ট্যসমূহ | |
মিশ্রিত লিঙ্গ | হ্যাঁ |
ধরন | ইনডোর |
প্রচলন | |
অলিম্পিক | ১৮৯৬ থেকে |
ইতিহাসসম্পাদনা
হোমার, এরিস্টটল এবং প্লেটো’র ন্যায় বিখ্যাত লেখকগণ জিমন্যাস্টিকসের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছেন। এতে সাঁতার, দৌঁড়, কুস্তি, মুষ্টিযুদ্ধ ইত্যাদি ক্রীড়াগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল; যা পরবর্তীকালে পৃথক ক্রীড়া হিসেবে আবির্ভূত হয়।[১] এছাড়াও এটি সামরিক প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত হতো। ঊনবিংশ শতকের শুরুতে জার্মানি ও বোহেমিয়ায় বর্তমানরূপে প্রচলিত জিমন্যাস্টিকস এক সময় সামরিক বাহিনীতে প্রচলিত ফ্রি স্টাইলে ব্যবহৃত ক্রীড়াটিকে পৃথক করতে একই সময়ে আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকস ক্রীড়া বিষয়ের প্রবর্তন করা হয়।[২] জিমন্যাস্টিকসের জনক[৩] হিসেবে পরিচিত জার্মান শিক্ষাবিদ ফ্রেদরিখ লাদিগ জন হরাইজন্টাল বার ও প্যারালাল বারসহ অনেকগুলো অ্যাপারেটাস উদ্ভাবন করেছিলেন, যা অদ্যাবধি ব্যবহার করা হচ্ছে। টার্নভেরেইন ও সোকোল প্রথমদিককার দুইটি জিমন্যাস্টিকস ক্লাবের মর্যাদা পেয়েছে।
আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনসম্পাদনা
১৮৮১ সালে আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। তারপর থেকেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জিমন্যাস্টিকসের সর্বোচ্চ ক্রীড়া পরিচালনাকারী সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। ১৯২১ সাল পর্যন্ত কেবলমাত্র তিনটি দেশ এর সদস্য ছিল ও তখন একে ইউরোপীয়ান জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন নামে পরিচিত ছিল। ইউরোপ বহির্ভূত দেশ ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত হলে এর পূণঃর্গঠন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে ও বর্তমানে এসে দাঁড়ায়। ১৮৯৬ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে জিমন্যাস্টিকস অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু ১৯২৮ সালের পূর্ব পর্যন্ত অলিম্পিকের আসরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ছিল না। ১৯০৩ সাল থেকে প্রবর্তিত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপে পুরুষদের অংশগ্রহণ ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত ছিল। এরপর থেকে মহিলা ও পুরুষ বিভাগের দুইটি শাখায় বিভাজন ঘটানো হয়।
১৯২৮ সালে অলিম্পিকে মহিলাদের আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকস ক্রীড়াবিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৫০ সালে বিশ্ব জিমন্যাস্টিকস চ্যাম্পিয়নশীপের দ্বাদশ আসরে মহিলা আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকস যুক্ত হয়। দলগত প্রতিযোগিতা, অল-এরাউন্ড ও অ্যাপারেটাস মূল খেলার মর্যাদা পায়। ১৯৫২ সালে হেলসিঙ্কিতে অনুষ্ঠিত গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকস যুক্ত হয় ও অদ্যাবধি সংযুক্ত আছে।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ (রুশ)"Sportivnaya gimnastika"। Enciklopediya Krugosvet। ২০০৮-০৬-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১১, ২০০৬।
- ↑ "Artistic Gymnastics — History"। IOC। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১১, ২০০৬।
- ↑ "Gymnastics"। Encarta। অক্টোবর ৩১, ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১১, ২০০৬।