আরনমুলা পোন্নাম্মা

ভারতীয় অভিনেত্রী

আরনমুলা পোন্নাম্মা (৮ই এপ্রিল ১৯১৪ – ২১শে ফেব্রুয়ারি ২০১১) ছিলেন একজন জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী ভারতীয় অভিনেত্রী, যিনি পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ের কর্ম জীবনে অসংখ্য চলচ্চিত্রে নায়কের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।মালয়ালম চলচ্চিত্রে তাঁকে ব্যাপকভাবে একজন মাতৃমূর্তি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।[১][২] ২০০৫ সালে, কেরালা সরকার তাঁকে মালয়ালম চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান জে. সি. ড্যানিয়েল পুরস্কারে সম্মানিত করে।

আরনমুলা পোন্নাম্মা
জন্ম(১৯১৪-০৪-০৮)৮ এপ্রিল ১৯১৪
মৃত্যু২১ ফেব্রুয়ারি ২০১১(2011-02-21) (বয়স ৯৬)
পেশাঅভিনেত্রী
কর্মজীবন১৯৪৩ – ২০০৪
দাম্পত্য সঙ্গীকচু কৃষ্ণ পিল্লাই
সন্তানরাজাম্মা
রাজশেখরন
পিতা-মাতামালেথু কেশব পিল্লাই
পারকুট্টি আম্মা
আত্মীয়
পুরস্কার২০০৬ - আজীবন কর্মের জন্য জে সি ড্যানিয়েল পুরস্কার

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

পোন্নাম্মার জন্ম ত্রিবাঙ্কুরের পত্তনমতিট্টার আরনমুলায়, তিনি ছিলেন মালেথু কেশব পিল্লাই এবং পারকুট্টি আম্মার পাঁচ সন্তানের মধ্যে একজন।[৩] তাঁর অপর চার ভাইবোনের নাম রামকৃষ্ণ পিল্লাই, পাঙ্কিয়াম্মা, ভাস্কর পিল্লাই এবং থানকাম্মা।[৪] তিনি ১২ বছর বয়সে একজন কর্ণাটকী সঙ্গীত কণ্ঠশিল্পী হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। পম্পা নদীর তীরে হিন্দু মহামণ্ডল আয়োজিত সভা শুরুর আগে গান গেয়ে তিনি শুরু করেছিলেন। ১৫ বছর বয়সে, উঁচু ক্লাসে পড়াতে শুরু করার আগে তিনি পালৈয়ের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। পরে তিনি স্বাতী তিরুনাল মিউজিক একাডেমির প্রথম দলের শিক্ষার্থীদের সাথে যোগ দেন। কোর্সের পর, তিনি তিরুবনন্তপুরমের কটন হিল গার্লস হাই স্কুলে সঙ্গীত শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন।[৫]

পরিবার সম্পাদনা

তিনি প্রয়াত কোচু কৃষ্ণ পিল্লাইকে বিবাহ করেছিলেন। এই দম্পতির একটি পুত্র ছিল, প্রয়াত রাজশেখরন এবং একটি কন্যা, রাজাম্মা। তাঁর নাতনি রাধিকা সুরেশ বিবাহ করেছেন সুরেশ গোপীকে[৬]

কর্মজীবন সম্পাদনা

পোন্নাম্মার অভিনয়ের অভিষেক ঘটেছিল ২৯ বছর বয়সে, ভাগ্যলক্ষ্মী নামে একটি নাটকে।[৫] চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশের আগে তিনি প্রসন্ন, চেচি, জীবনযাত্রা এবং রক্তবন্ধম-এর মতো নাটকে অভিনয় করেছিলেন। তাঁর প্রথম অভিনীত চরিত্রটি ছিল শশীধরন (১৯৫০) ছবিতে সেই সময়ের একজন বিশিষ্ট অভিনেত্রী মিস কুমারী দ্বারা অভিনয় করা চরিত্রের মায়ের ভূমিকা।[২] একই বছর তিনি থিক্কুরিসি সুকুমারন নায়ার অভিনীত আম্মা ছবিতে মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন। এটি ছিল প্রখ্যাত প্রযোজক টি.ই. বাসুদেবনের প্রথম চলচ্চিত্র এবং ১৮তম মালায়ালাম চলচ্চিত্র।[৭] ১৯৬৮ সালে, তিনি পি. ভেনু পরিচালিত বিরুথান শঙ্কু ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। এটি ছিল মালয়ালম চলচ্চিত্র শিল্পের প্রথম পূর্ণ-দৈর্ঘ্যের হাস্য রসাত্মক চলচ্চিত্র। এরপর তিনি মায়ের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য নির্ধারিত হয়ে যান। তাঁর নিজের ভাষায়: আমি পাড়ুন্না পুঝা ছবিতে অবশ্যই নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করেছি এবং ইয়াচাকান ছবিতেও ছিলাম একজন বিপথগামী মহিলা। কিন্তু তারপরে আমাকে সবসময় মায়ের চরিত্রের জন্যই নির্বাচন করা হয়েছে। দুই সন্তানের মা হিসেবে, এই চরিত্রে আমি খুব স্বচ্ছন্দ্য ছিলাম। আমার আদর্শ ছিলেন আমার মা, পারকুট্টি আম্মা। আমার বাবা মালেথু কেশব পিল্লাই যখন মারা যান আমার বয়স যখন নয় বছর। তিনি মারা যাওয়ার পর মাকে তাঁর পাঁচ সন্তানের দেখাশোনা করতে হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে, আমার পঞ্চম ছবি আম্মাতে আমি শুধু আমার মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করছিলাম।"[২] ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিস্তৃত তাঁর কর্মজীবনে, তিনি প্রথম প্রজন্মের অভিনেতা যেমন থিক্কুরিসি সুকুমারণ নায়ার, দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিনেতা যেমন প্রেম নাজির এবং সাথিয়ান এবং তৃতীয় প্রজন্মের অভিনেতা যেমন মম্মুট্টী, মোহনলাল এবং সুরেশ গোপীর মা বা দিদিমার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।

তিনি শেষবার গৌরিশঙ্করম (২০০৪) ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। তিনি ২০১১ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি তিরুবনন্তপুরমের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৯৬ বছর বয়সে মারা যান।[৮][৯][১০]

পুরস্কারসমূহ সম্পাদনা

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (ভারত) সম্পাদনা

১) ১৯৯৬: শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী - কথাপুরুষাণ[৫]

কেরল রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার সম্পাদনা

১) ২০০৫: জে. সি. ড্যানিয়েল পুরস্কার[৫]
২) ১৯৯৬: দ্বিতীয় সেরা অভিনেত্রী - কথাপুরুষাণ

এশিয়ানেট চলচ্চিত্র পুরস্কার সম্পাদনা

১) ১৯৯৮: আজীবন কর্মের জন্য পুরস্কার

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Notice of Aranmula Ponnamma's death"। Archived from the original on ২০ ফেব্রুয়ারি ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০০৯ 
  2. "Matriarch of Mollywood"। ১২ জানুয়ারি ২০০৭ – www.thehindu.com-এর মাধ্যমে। 
  3. "Archived copy"। ৩ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৩ 
  4. "CINIDIARY - A Complete Online Malayalam Cinema News Portal"cinidiary.com। ৫ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০২২ 
  5. "Aranmula Ponnamma cremated"The New Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-১৫ 
  6. Correspondent), (Our। "Kerala's 'screen mother' Ponnamma dies at 96"Khaleej Times 
  7. Excerpt from www.thehindujobs.com ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে
  8. "Aranmula Ponnamma dies at 96"Deccan Herald। ২০১১-০২-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০২-২১ 
  9. "Aranmula Ponnamma dies"The Indian ExpressKerala। ২০১১-০২-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০২-২১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  10. "Aranmula Ponnamma passes away"Kerala: "SansCinema"। ২০১১-০২-২১। ২০১১-০৭-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০২-২৭ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

টেমপ্লেট:J. C. Daniel Award