এম. আবদুল লতিফ
আব্দুল লতিফ সংক্ষেপে এম. এ লতিফ নামে ও পরিচিত, বাংলাদেশের একজন বিত্তশালী ও ব্যবসায়ী নেতা[১] এবং সংসদ সদস্য ছাড়াও আরো বিভিন্ন সংসদীয় কার্যক্রমের দায়িত্বে ছিলেন।[২] তিনি চট্টগ্রামের সংসদীয় আসনে নির্বাচনে জয়ী হয়ে পরপর দুই মেয়াদে দশ বছরেরর জন্য দায়িত্বভার পান। তার জন্ম চট্টগ্রামে এবং সেখানেই অজানা কারণে তাকে ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের জন্য মনোনীত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।[৩] এর অব্যাবহিত কিছু সময়ের মাঝে বিভিন্ন অসদাচরণ ও খামখেয়ালি পূর্ণ কাজের জন্য তিনি প্রায়ই সংবাদপত্রের বিভিন্ন খবরে স্থান পেতে থাকেন।[৪] সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের স্থিরচিত্রের বিকৃত রুপ কে নিজের প্রচারে যুক্ত করে সংবাদপত্রে উদ্ধৃত হন।[৫]
মাননীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফ | |
---|---|
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সদস্য | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ২৯ জানুয়ারি ২০১৪ - চলমান | |
পূর্বসূরী | শামসুল হক চৌধুরী |
সংসদীয় এলাকা | চট্টগ্রাম-১১ |
কাজের মেয়াদ ২০০৮ – ২০১৪ | |
পূর্বসূরী | মোরশেদ খান |
উত্তরসূরী | আফছারুল আমীন |
সংসদীয় এলাকা | চট্টগ্রাম-১০ |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | মোহাম্মদ আবদুল লতিফ ১০ মার্চ ১৯৫৫ চট্টগ্রাম |
নাগরিকত্ব | পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
পেশা | রাজনীতি |
জীবিকা | ব্যবসা |
ধর্ম | ইসলাম |
পেশা ও কার্যক্রম
সম্পাদনাআব্দুল লতিফ ২০০৯ সালে দুই বছরের জন্য চিটাগাং চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি নির্বাচিত হন ।[১] তিনি চট্টগ্রাম শহরের, চট্টগ্রাম-১০ সংসদীয় আসন হতে ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবং চট্টগ্রাম-১১ সংসদীয় আসন ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হন।[৬] নির্বাচিত হবার পর তিনি চিহ্নিত দেশবিরোধীদের সাথে জামাতে ইসলামী এর আয়োজনে প্রচারণা মূলক অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং ইতিপূরবে উক্ত দলের সাথে তার শখ্যতার গুজব[৭] থাকলেও তা উল্লেখযোগ্য সুত্র দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করা যায়নি[৮] ২০০৯ সালে সংসদীয় স্থায়ী স্ট্যান্ডিং কমিটি নামে অভিহিত নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির উপ-কমিটির "আহ্বায়ক" নিযুক্ত হন ।[৯] এছাড়া তিনি চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাংসদ এবং বিদ্যুৎ-জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ, নৌ-পরিবহন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য।[২]
সমালোচিত কার্যক্রম
সম্পাদনা২০০৯ সালের ৩১শে জানুয়ারী একটি অরাজনৈতিক আবহের অনুষ্ঠানে আব্দুল লতিফ প্রধান অতিথি এবং শামসুদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যা ছিল জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন চাষী কল্যাণ সমিতি মহানগর শাখা আয়োজিত 'যৌতুকবিহীন' এক বিয়ের অনুষ্ঠানে। সেখানে মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর আফসার উদ্দিন চৌধুরী ও উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত জামায়াত নেতা ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ রয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদপ্ত্র প্রচার করে। এ ব্যাপারে আব্দুল লতিফ বলেন, "আমি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। যেখানে আমার ছেলেসহ ১৭ জন নব দম্পতি যৌতুকবিহীন বিবাহ বন্ধনে অংশ নেন।" [৮] চট্টগ্রাম চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি হিসেবে থাকা কালে তিনি প্রায়ই নৌ-মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রী ও চট্টগ্রাম সমুন্দ্র বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে বিরধে জড়িয়ে পড়েন।[১০] চট্টগ্রাম সমুন্দ্র বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) দরপত্র নিয়ে নিজের স্বারথ রক্ষার্থে তিনি তার নিজ রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন।[১১][১২][১৩][১৪]
২০০৯ সালের জুন মাসে,আবদুল লতিফ চট্টগ্রামে "ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো-অরডিনেশন সেল" নামে সরকারী সভায় বিধিবহির্ভূত ভাবে প্রবেশের ও কার্যাদি তে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করেন।[১৫]
"আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার" নামে একটি সংস্থার, ১৯৫ পাকিস্তানির 'প্রতীকী বিচার' কার্যে বিভিন্ন প্রভাব খাটিয়ে আহ্বায়ক হন আবদুল লতিফ[১৬]
২০০৯ সালে আবদুল লতিফ চট্টগ্রাম বন্দরের কর্তব্যরত নৌবাহিনীর একজন সদস্যকে লাঞ্ছিত করেন এবং ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকরতার সাথে দূর্ব্যবহার করেন।[১৭] ২রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ তারিখে রাঙামাটি শহরের আরণ্যক পর্যটন কেন্দ্রে সংবাদকর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন তিনি।[১৮] ২০১৬ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি, আওয়ামী লীগের সমর্থকরা অভিযোগ করেন, আবদুল লতিফের ফেস্টুনে ব্যবহার করা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ‘বিকৃত’ করা হয়েছে। আবদুল লতিফ বলেন,প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রামে আগমন উপলক্ষে আমি প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর আপাদমস্তক ছবি টাঙানোর জন্য বলেছিলাম।[১৯]
গঠনমূলক কার্যক্রম
সম্পাদনাবাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে, দরিদ্র জনগণের জন্য স্বল্প মুল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় ও খাদ্যদ্রবয বিক্র্যের কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আবদুল লতিফ উপস্থিত ছিলেন। [২০]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "চিটাগাং চেম্বারের নেতৃত্ব এমপি লতিফের"। আমাদের সময়। চট্টগ্রাম ব্যুরো। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ ক খ Mr. M.Abdul Latif,, MP। "17. Standing Committee on Ministry of Commerce"। 9th Parliament Committees Name। বাংলাদেশ সরকার। ১৪ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ শিল্পপতি এমএ লতিফ (৪ ডিসেম্বর ২০০৮)। "চট্টগ্রাম-১০ আসনে এম এ লতিফের প্রার্থিতা চূড়ান্ত"। দৈনিক আজাদী। Archived from the original on ৪ ডিসেম্বর ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "MA Latif MP attacked"। The Financial Express। The Financial Express। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "লতিফের সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে বিক্ষোভ"। প্রথম আলো সংবাদপত্র। নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম।
- ↑ "জাতীয় সংসদীয় আসনবিন্যাস (২০১৩) গেজেট" (পিডিএফ)। ইসি। ১৬ জুন ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ শিবিরের ডায়েরি। "শুভাকাঙ্ক্ষীর তালিকায় আ.লীগ-বিএনপি নেতাদের নাম!"। prothom-alo। প্রকাশক: মতিউর রহমান। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ ক খ "'যুদ্ধাপরাধীর' সঙ্গে আওয়ামী সাংসদ লতিফ"। bdnews24.com। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "বন্দরের ৬ প্রকল্পের অনিয়ম দুর্নীতির তদন্ত শুরু"। দৈনিক আজাদী। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ চট্টগ্রাম বন্দরের অবনতিশীল পরিস্থিতি (২৭ সেপ্টেম্বর ২০১০)। "নৌমন্ত্রী ও বন্দর চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি সাংসদ লতিফের" (চট্টগ্রাম)। মতিউর রহমান। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ সাংসদ লতিফের ওপর হামলা (২৮ সেপ্টেম্বর ২০১২)। "চট্টগ্রাম বন্দর ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ" (চট্টগ্রাম)। prothom-alo। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "দুর্নীতি ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ"। চট্টগ্রাম ব্যুরো। আমার দেশ পাবলিকেশন্স লিঃ। ১ সেপ্টেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত সাংসদ লতিফ"। নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম। প্রথম আলো। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১২। ২০১৬-০৬-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "MA Latif MP attacked"। the financial express। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ MA Latif, ruling party lawmaker, though abortively.। "Law Makers of the Bangladesh Awami League!"। ২৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "'প্রতীকী বিচার' হবে ১৯৫ পাকিস্তানি সেনার"। ২০১৫-১২-১৮। ২০১৬-০৩-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "আমাকে চিনেন আমি সরকারী দলের"। ২০০৯-০২-০৫। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "এমপি লতিফের আচরণে ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা"। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃত করার অভিযোগ সাংসদের বিরুদ্ধে"। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ [www.chittagongchamber.com/details_p.php?id=11 "বিত্তশালী ও কর্পোরেট হাউসগুলোকে চিটাগাং চেম্বারের দৃষ্টান্ত অণুসরণের আহবান"]
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।