আব্দুল ওহাব খাঁন
আব্দুল ওহাব খাঁন (আনু. ১৯৫৩ - ১২ ডিসেম্বর ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতা প্রদর্শনের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।
আব্দুল ওহাব খাঁন | |
---|---|
জন্ম | আনু. ১৯৫৩ আহলাদীপুর, বৃহত্তর ফরিদপুর |
মৃত্যু | ১২ ডিসেম্বর, ১৯৭১ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
নাগরিকত্ব | পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পরিচিতির কারণ | বীর প্রতীক |
আত্মীয় |
|
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাওহাব খাঁন রাজবাড়ী জেলার তৎকালীন মামুনপুর (বর্তমান বসন্তপুর ও শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের সমন্বিত ইউনিয়ন) ইউনিয়নের আহলাদীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আব্দুর রহমান খাঁন এবং মাতার নাম ছিলো মোসাম্মৎ আজিমুন্নেসা। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে আব্দুস সাত্তার খাঁন সেজ ও ওহাব খাঁন ছিলেন ছোট। রাজবাড়ী সদর উপজেলার মামুনপুর ইউনিয়নের আলাদিপুর গ্রামের খাঁন পরিবারই ছিলো তাদের আদি নিবাস।
এই খান পরিবারের বড় ছেলে আব্দুল আজিজ খাঁন ছিলেন সবার বড়। আব্দুল আজিজ খাঁন তৎকালীন সময়ে এইচডিও কোর্টের হেডক্লার্ক ছিলেন। তার সেজ ভাই আব্দুস সাত্তার খাঁন আততায়ীর গুলিতে নিহত হবার পর তিনি ১৯৭৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিয়ে গ্রামে চলে আসেন।
তিনি রাজবাড়ী জেলার সুরাজ মোহিনী ইনিস্টিটিউডে মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করেন। তারপর রাজবাড়ী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন।
মুক্তিবাহিনীতে যোগদান
সম্পাদনা১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাস, তখন আব্দুল ওয়াহাব খানখানাপুর সুরাজ মোহিনী ইনস্টিটিউটের নিউ টেনের ছাত্র ছিলেন। যুদ্ধের দামামা বেজে উঠলে '৭১ এর সেই উত্তাল দিনগুলোতে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে তিনিও মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে যোগাযোগ করে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং সিপাই পদে অভিষিক্ত হন। এরপর তিনি গ্রুপ কমান্ডার শহীদ কাজী সালাউদ্দিনের (নাসির) নেতৃত্বে ফরিদপুর সদর থানা এলাকায় বিভিন্ন অপারেশনে অংশ নেন। সর্বশেষ ফরিদপুর শহরের অদূরে কানাইপুরে ডিসেম্বর মাসের ১২ তারিখে চুড়ান্ত লড়াইয়ে অংশ নেন। তবে এ নিয়ে মতোবিরোধ রয়েছে। কারো কারো মতে দিনটা ছিল ৯ ডিসেম্বর।
যেভাবে মারা গেলেন
সম্পাদনাতিনি ছিলেন আব্দুর রহমানের ছােট ছেলে। ১৯৭১ সালের ১২ই ডিসেম্বর ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত কানাইপুর, করিমপুর ব্রীজের পাশে পাক-বাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধে তিনি নিহত হন। তার নামেই ৭নং শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়।
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনাস্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।
এছাড়া তার নামেই রাজবাড়ী সদর উপজেলার ৭নং শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের নামকরণ করা হয়।