আব্দুল আহাদ মোহমান্দ

আব্দুল আহাদ মোহমান্দ (জন্ম: ১ জানুয়ারি ১৯৫৯) আফগান বিমান বাহিনীর একজন সাবেক পাইলট ও মহাকাশে যাওয়া প্রথম আফগান এবং চতুর্থ মুসলিম। ১৯৯৮ সালে তিনি সুয়েজ টিএম-৬ মিশনের একজন সদস্য ছিলেন এবং মির মহাকাশ স্টেশনে আন্তঃমহাকাশ গবেবষণা নভোচারী হিসেবে ৯ দিন অতিবাহিত করেন।[১] সুলতান বিন সালমান আল সৌদ, মোহাম্মাদ ফারিস ও মূসা ম্যানারভের পর মহাকাশে যাওয়া চতুর্থ মুসলিম তিনি। সুয়েজ টিএম-৬ মিশনের সময় আব্দুল আহাদই ছিলেন প্রথম নভোচারী যিনি আফগানিস্তানে একটি কল করার সময় পশতু ভাষা ব্যবহার করেন। এছাড়া মহাকাশে পবিত্র কুরআন নিয়ে যাওয়া প্রথম নভোচারীও তিনি।

আব্দুল আহাদ মোহামান্দ
জন্ম (1959-01-01) জানুয়ারি ১, ১৯৫৯ (বয়স ৬৫)
শারদাহ্, আফগানিস্তান
অবস্থাঅবসরপ্রাপ্ত
জাতীয়তাআফগান ১৯৫৯–২০০৩
জার্মান২০০৩–বর্তমান
মাতৃশিক্ষায়তনকাবুল বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাপাইলট
মহাকাশযাত্রা
আন্তঃমহাকাশ গবেষণা নভোচারী
ক্রমকর্নেল
মহাকাশে অবস্থানকাল
৮দিন ২০ঘণ্টা ২৬মিনিট
মনোনয়ক১৯৮৮
অভিযানমির ইপি-৩ , সুয়েজ টিএম-৬/সুয়েজ টিএম-৫
অভিযানের প্রতীক

পরিচয় সম্পাদনা

মোহমান্দ জন্মগ্রহণ করেন[২] ১৯৫৯ সালে আফগানিস্তানের গজনি প্রদেশের শারদায়। তিনি পশতুন গোষ্ঠীর মোহমান্দ উপজাতির অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। মোহমান্দ পলিটেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব কাবুল এবং পরে এয়ার ফোর্স একাডেমি থেকে স্নাতক হন। তিনি আফগান বিমান বাহিনীতে নিযুক্ত ছিলেন এবং পরে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে একজন পাইলট ও পেশাদার নভোচারী হিসেবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।[৩]

কমান্ডার ভ্লাদিমির লেইখভ ও ফ্লাইট ইন্জিনিয়ার ভ্যালেরি পোলেইকভের সাথে সুয়েজ টিএম-৬ মিশনের তিন সদস্যের দলে মোহমান্দও ছিলেন। সুয়েজ টিএম-৬ ১৯৮৮ সালের ২৯ আগস্ট স্থানীয় সময় ০৪:২৩ জিএমটি সময়ে উত্‍ক্ষেপন করা হয়। মিশনে মোহমান্দের অন্তর্ভুক্তি সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের সময় অনেকটাই অর্থবহ ছিল।

মির স্পেস স্টেশনে ৯ দিন অবস্থানকালে মোহমান্দ তার দেশের ছবি তোলেন এবং অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল ও বায়োলজিক্যাল এক্সপেরিমেন্টে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও তিনি আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি মুহাম্মদ নজিবউল্লাহার সাথে কথা বলেন ও মিশনে তার সঙ্গীদের জন্য আফগান চা তৈরী করেন।

লেইখভ ও মোহমান্দ সুয়েজ টিএম-৫ এর মাধ্যমে পৃথিবীতে ফিরে আসেন। মির স্টেশনে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সুয়েজ টিএম-৫ এর ৬ সেপ্টেম্বরের পূর্বনির্ধারিত অবতরণ বিলম্বিত হয়। রেডিও মস্কো জানায় লেইখভ ও মোহমান্দ নিরাপদে আছেন ও মিশন কন্ট্রোলের সাথে সংযুক্ত রয়েছেন। তাদের আলাপচারিতার একটি রেকর্ড প্রকাশ করা হয় যেখানে তাদের হাসতে শোনা যায়। একদিন পর ০০:৫০ জিএমটি সময়ে সুয়েজ টিএম-৫ সফলভাবে অবতরন করে।

১৯৮৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মোহমান্দকে হিরো অব সোভিয়েত ইউনিয়ন উপাধি প্রদান করা হয়।[৪]

মিশনের সময় মোহমান্দের মা তার ছেলের নিরাপত্তা নিয়ে ভীষণভাবে চিন্তিত ছিলেন। আফগান রাষ্ট্রপতি মোহমান্দের মাকে তার কার্যালয়ে ডেকে পাঠান এবং ছেলের সাথে অডিও ও ভিডিও মাধ্যমে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেন, যেখানে তারা পশতু ভাষায় কথা বলেন। আর এভাবে মহাকাশে উচ্চারিত হওয়া পঞ্চম ভাষা হিসেবে পশতু স্থান করে নেয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত সেনা প্রত্যাহারের পর ১৯৯২ সালে মোহমান্দ জার্মানিতে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং সেখানে বসবাসের আবেদন জানান। পরে ২০০৩ সালে তিনি জার্মান নাগরিকত্ব লাভ করেন।[৫][৫]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Abdul Ahad Momand – The First Afghan in Space (August 29 to September 6, 1988) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত অক্টোবর ২৮, ২০০৪ তারিখে
  2. 1 January - majority of Afghans have this date of birth, i.e. they simply do not know more specific date and wrire 01/01/year
  3. "First Afghan In Space – Abdul Ahad Momand"। ২০ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১৮ 
  4. (রুশ)Biography ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে at the website on Heroes of the Soviet Union and Russia
  5. Meinhardt, Birk (1 – 2 April 2010)। "Mister Universum"। Süddeutsche Zeitung (German ভাষায়)। Munich। পৃষ্ঠা 3। Er ist der einzige Afghane, der je ins All fliegen durfte. Von dort sah Abdulahad [sic] Momand die Erde und war sehr stolz um sie. Zurück auf dem Boden aber mußte er aus seiner Heimat fliehen – und sich durch die deutsche Welt kämpfen.  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)