আব্দুর রহমান (ফরিদপুরের রাজনীতিবিদ)
মো: আব্দুর রহমান (জন্ম: ১ জানুয়ারি ১৯৫৪) বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ যিনি ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।[১] তিনি শেখ হাসিনার পঞ্চম মন্ত্রিসভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিল।[২] ২০২৪ সালে অসহযোগ আন্দোলনের পর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করলে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান।[৩]
আব্দুর রহমান | |
---|---|
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ১১ জানুয়ারি ২০২৪ – ৬ আগস্ট ২০২৪ | |
পূর্বসূরী | শ ম রেজাউল করিম |
উত্তরসূরী | ফরিদা আখতার (উপদেষ্টা) |
ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১০ জানুয়ারি ২০২৪ – ৬ আগস্ট ২০২৪ | |
পূর্বসূরী | মঞ্জুর হোসেন বুলবুল |
কাজের মেয়াদ ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ – ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ | |
পূর্বসূরী | শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর |
উত্তরসূরী | মঞ্জুর হোসেন বুলবুল |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | মো: আব্দুর রহমান ১ জানুয়ারি ১৯৫৪ ফরিদপুর জেলা, বাংলাদেশ |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি ইয়াছিন কলেজ |
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
সম্পাদনামো: আব্দুর রহমানের জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৫৪ সালে পৈতৃক বাড়ি ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার কামালদিয়া গ্রামে।
তার পিতা মো. শরিয়তউল্যা ও মাতা আয়েশা শরিয়তউল্যা। তিন চার সন্তানের জনক।
তিনি ফরিদপুর সরকারি ইয়াছিন কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সমাপ্ত করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন এবং পরবর্তীতে এল.এল.বি ডিগ্রি অর্জন করেন।[১]
কর্মজীবন
সম্পাদনাআব্দুর রহমান পেশায় একজন ব্যবসায়ী।
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনাআব্দুর রহমান ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের কার্যনির্বাহী সদস্য এবং ১৯৮৪ সালে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। আব্দুর রহমান ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়ে ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০১-২০০২ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্বেক্ষক সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ১৭তম সম্মেলনে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান এবং ২০০২-০৯ মেয়াদে এ দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ফরিদপুর-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৪]
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ১৯তম সম্মেলনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য হয়ে তিনি ২০০৯-২০১২ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ফরিদপুর-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৫]
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে তিনি ২০১৬-২০১৯ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ২০১৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে সভাপতিমন্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন।
তিনি আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে ২০২২ সালে সভাপতিমন্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।[৬]
২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ফরিদপুর-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
১০ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী হিসাবে আব্দুর রহমানকে নিয়োগ দেয়া হয়।
অপরাধসমূহ
সম্পাদনা২০২৪ সালের আগস্টে, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রহমানের বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়।[৭]
একটি প্রখ্যাত জাতীয় সংবাদমাধ্যম একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে[৮], এবং অন্য একটি জাতীয় সংবাদমাধ্যম একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে[৯], যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে যে আব্দুর রহমান মানি লন্ডারিং কার্যক্রমে জড়িত, পাঁচটি বিভিন্ন দেশে অর্থ স্থানান্তর করেছেন এবং সেখানে একাধিক সম্পত্তি কিনেছেন। মানি লন্ডারিং ও সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ তুলে ধরে, একদল বাংলাদেশি নাগরিক ঢাকার পারিবাগে রহমানের বাসায় সমবেত হন এবং তার প্রকাশ্য উপস্থিতি দাবি করেন। তবে পরে জানা যায় যে তিনি ইতোমধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। [১০]
ফরিদপুরের সাটাইরের স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, রহমান অবৈধভাবে জমি অধিগ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ, যা তার জামাতা জুবায়ের নিলয় এবং তার স্ত্রী মির্জা নাহিদা হোসেন, যিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, তাদের নামে "রাজ সিরামিক ব্রিকস" [১১]নামে একটি স্বয়ংক্রিয় ইট প্রস্তুতকারক কারখানা প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই প্রকল্পটি তার অবৈধ অর্থকে বৈধ সম্পদে রূপান্তরিত করে পরিবারের মধ্যে বিতরণ করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ ফরিদপুর-১, মো: আব্দুর রহমান। "Constituency 211_10th_Bn"। www.parliament.gov.bd। ২০১৯-০১-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-০৫।
- ↑ "কে কোন মন্ত্রণালয় পেলেন"। অর্থসংবাদ। ১১ জানুয়ারি ২০২৪। ১১ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২৪।
- ↑ "দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত"। যমুনা টিভি। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৭।
- ↑ "৯ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ২০১৬-১১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ "১০ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ২০১৯-০১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ "যারা আছেন আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-১৪।
- ↑ Report, Star Digital (২০২৪-০৮-২৮)। "ACC to probe corruption allegations against 4 ex-MPs"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-০৫।
- ↑ ATN News (২০২৪-০৮-২৮)। "বিশ্বের পাঁচ দেশে বাড়ি করেছেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমান | ACC | Abdur Rahman | Awamileague|ATN News"।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০২৪-০৮-২৮)। "সাবেক মন্ত্রী আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-০৫।
- ↑ Pratidin, Bangladesh (২০২৪-০৮-০৬)। "মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমানের বাসায় হামলা"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-০৫।
- ↑ "আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার আব্দুর রহমান রাজ সিরামিকস ব্রিকস এলটিডি · Vatiapara Gopalganj Highway, বোয়ালমারী 7860, বাংলাদেশ"। আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার আব্দুর রহমান রাজ সিরামিকস ব্রিকস এলটিডি · Vatiapara Gopalganj Highway, বোয়ালমারী 7860, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-০৫।