আবুল কাসেম খান

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

আবুল কাশেম খান (১৯০৫-৩১ মার্চ ১৯৯১) যিনি এ কে খান নামে পরিচিত। একজন রাজনীতিবিদ, আইন শাস্ত্রজ্ঞ, ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতি। তিনি সাধারণত একে খান হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার পিতার নাম আবদুল লতিফ খান এবং মাতার নাম মা ওয়াহাবুন্নিসা চৌধুরানী। তাদের পরিবার ষোড়শ শতাব্দীতে গৌড়ের আমীর হামযা খানের বংশধর বলে দাবি করেন।

আবুল কাসেম খান
১৯৬০ সালে এ কে খান (ডানে) চট্টগ্রামে এর বাসায় আয়ুব খান (বামে)
জন্ম১৯০৫
মোহরা, পাচলাইশ, চট্টগ্রাম

বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত

(বর্তমানঃ মোহরা, চান্দগাও, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ)
মৃত্যু৩১ মার্চ ১৯৯১
নাগরিকত্বব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
বাংলাদেশ
মাতৃশিক্ষায়তনপ্রেসিডেন্সি কলেজ
পেশাব্যবসায়ী, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ
প্রতিষ্ঠানএ. কে. খান এন্ড কোম্পানি লিমিটেড
আদি নিবাসচট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
সন্তানএ এম জহিরুদ্দিন খান

জন্ম ও শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

আবুল কাশেম খান ১৯০৫ সালের ৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম শহরের চান্দগাঁও থানার ৫ নং মোহরা ওয়ার্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবদুল লতিফ খান চট্টগ্রামের ফতেয়াবাদের সাবরেজিষ্টার ছিলেন। তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে বি.এ. (সম্মান) এবং পরে এম.এ. পাশ করেন। ১৯৩৫ সালে বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় পাশ করেবিচার বিভাগে মনোনয়ন লাভ করেন।[১]

কর্মজীবন সম্পাদনা

১৯৩৪ সালে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। ১৯৩৫ সালে মুনসেফ হিসেবে যোগদান করে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসের সদস্য হিসেবে কাজ করেন। এরপর তিনি তার শ্বশুর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবদুল বারী চৌধুরী কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে সিভিল সার্ভিস ত্যাগ করে ব্যবসা শুরু করেন। তার শ্বশুরের পৃষ্টপোষকতায় ব্যবসা বাণিজ্যে তিনি অসাধারণ সফলতা অর্জন করেন।[১] বাঙ্গালী মালিকানাধীন প্রথম ব্যাংক ইস্টার্ন মার্কেন্টাইল ব্যাংক (বর্তমানে পূবালী ব্যাংক) প্রতিষ্ঠায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৪৬ সালে মুসলিম লীগের প্রার্থী হিসেবে তিনি ভারতীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান আইন সভার সদস্য হন। ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার সম্প্রচার কেন্দ্র থেকে তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান ইংরেজিতে স্বাধীনতার যে ঘোষণাটি দেন, সেটি লিখে দিয়েছিলেন এ.কে. খান।[২]

পারিবারিক জীবন সম্পাদনা

ব্রিটিশ আমলে ব্যবসা-বাণিজ্যের অগ্রদূত বেঙ্গল-বার্মা স্টিম নেভিগেশন কোম্পানির মালিক জনাব আবদুল বারী চৌধুরীর প্রথমা কন্যা শামসুন্নাহার বেগমের সাথে ১৯৩৫ সালে কলিকাতা হাইকোর্টের এডভোকেট থাকাকালীন তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। পারিবারিক জীবনে তিনি পাঁচ পুত্র ও চার কন্যা সন্তানের জনক। তার বড় সন্তান মরহুম এ.এম. জহিরুদ্দিন খান বাংলাদেশ সরকারের একজন স্বনামধন্য মন্ত্রী ছিলেন। ২য় সন্তান এ.কে. শামসুদ্দিন খান বর্তমানে এ.কে.খান শিল্প গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এবং সালাহ উদ্দীন কাসেম খান ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও তুরস্কের অনারারি কনসাল জেনারেল।

মৃত্যু সম্পাদনা

তার স্ত্রী বিয়োগের দুইমাস পর ১৯৯১ সালের ৩১ মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরদিন চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. আবুল কাসেম খান, বাংলাপিডিয়া
  2. বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলঃ পঞ্চদশ খন্ড ,পৃ. ১৯১

বহি:সংযোগ সম্পাদনা