আবুল কালাম শামসুদ্দীন
আবুল কালাম শামসুদ্দীন (৩ নভেম্বর ১৮৯৭ - ৪ মার্চ ১৯৭৮) ছিলেন একধারে একজন সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সাহিত্যিক। তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশালের ধানিখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
আবুল কালাম শামসুদ্দীন | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | ৩ নভেম্বর, ১৮৯৭ |
মৃত্যু | ৪ মার্চ ১৯৭৮ | (বয়স ৮০)
জাতীয়তা | ![]() |
পরিচিতির কারণ | ভাষাসৈনিক |
পুরস্কার | বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৭০), একুশে পদক (১৯৭৬) |
প্রারম্ভিক জীবনসম্পাদনা
তিনি ১৯১৯ সালে ঢাকা কলেজ হতে আইএ পাস করার পর কলকাতার রিপন কলেজে (অধুনা সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) বিএ শ্রেণীতে ভর্তি হন। কিন্তু ওই সময় (১৯২০-২১) খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে তিনি তাতে যোগ দেন এবং বি.এ পরীক্ষা না দিয়ে কলকাতার গৌড়ীয় সুবর্ণ বিদ্যায়তন থেকে উপাধি পরীক্ষা (১৯২১) পাস করেন।
সাংবাদিকতাসম্পাদনা
১৯২৩ সালে দৈনিক মোহাম্মদী পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক হিসেবে তার সাংবাদিকতা চর্চা শুরু হয়। পরবর্তিতে তিনি ১৯২৪ সালে সাপ্তাহিক মোসলেম জগৎ, দি মুসলমান, দৈনিক সোলতান, মাসিক মোহাম্মদী প্রভৃতি পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন। ১৯৩৬ সালে দৈনিক আজাদে যোগদান করে তিনি ১৯৪০-৬২ সাল পর্যন্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।বাঙালি মুসলিম সমাজকে ইসলামী ভাবনাধারায় অনুপ্রাণিত করার জন্য কলকাতায় যে "পূর্ব পাকিস্তান রেনেসাঁ সোসাইটি (১৯৪০)" প্রতিষ্ঠিত হয় তিনি তার সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৪ সালে প্রেস ট্রাস্ট অব পাকিস্তান পরিচালিত দৈনিক পাকিস্তানের সম্পাদক নিযুক্ত হন, তিনি ১৯৭২ সালে অবসর গ্রহণ করেন।[১]
রাজনৈতিক জীবনসম্পাদনা
ছাত্রাবস্থায় মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে প্রাণিত হয়ে জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। পরিনত বয়সে প্রথমে তিনি প্রচণ্ড পরিমাণে আইয়ুব খানের বিরোধী ছিলেন এবং ভাষা অন্দোলনেও সক্রিয় ভুমিকা রেখেছিলেন, কিন্তু স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় তিনি পাকিস্তানের অখণ্ডতার পক্ষে মত দিয়েছিলেন।
ভাষা আন্দোলনের সম্পৃক্ততাসম্পাদনা
ভাষা আন্দোলনে তার সম্পাদিত 'দৈনিক আজাদ' পত্রিকা ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। বাংলা ভাষার দাবি সংক্রান্ত সম্পাদকীয় প্রকাশ করতেন নিয়মিত। তিনি ২১ শে ফেব্রুয়ারির গুলিচালনার প্রতিবাদে পরের দিন আইনসভার সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে প্রথমবার যে শহীদ মিনার নির্মিত হয়েছিল, আবুল কালাম শামসুদ্দীন এটার উদ্বোধন করেছিলেন।[১][২]
পুরস্কারসম্পাদনা
- সিতারা-ই-খিদমত (১৯৬১);
- সিতারা-ই-ইমতিয়াজ (১৯৬৭) (কিন্তু ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময় তিনি সরকারি দমননীতির প্রতিবাদে উভয় খেতাব বর্জন করেন);
- বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৭০);
- একুশে পদক (১৯৭৬)
গ্রন্থাবলীসম্পাদনা
- কচিপাতা
- অনাবাদী জমি
- ত্রিস্রোতা
- খরতরঙ্গ
- ইলিয়ড
- পলাশী থেকে পাকিস্তান
- অতীত দিনের স্মৃতি[৩]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ শহিদুল ইসলাম (জানুয়ারি ২০০৩)। "শামসুদ্দীন, আবুল কালাম"। সিরাজুল ইসলাম। আবুল কালাম শামসুদ্দীন। ঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশ। আইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১৯, ২০১৬।
- ↑ "Journalist litterateur Abul Kalam Shamsudin"। The New Nation। ২৪ নভেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ সেলিনা হোসেন ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান; দ্বিতীয় সংস্করণ: ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা: ৫৩, আইএসবিএন ৯৮৪-০৭-৪৩৫৪-৬