আবুল কালাম আজাদ (জামালপুরের রাজনীতিবিদ)
আবুল কালাম আজাদ একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ এবং জামালপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য। তিনি ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১][২] সংবিধান অনুযায়ী দশম জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ৩ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে একাদশ সংসদের সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি শপথবাক্য পাঠ করেন।[৩]
আবুল কালাম আজাদ | |
---|---|
তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সাবেক মন্ত্রী | |
জামালপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ২০১৪ জানুয়ারী – ৭ জানুয়ারি ২০২৪ | |
পূর্বসূরী | নূর মোহাম্মদ |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | জামালপুর, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ) | মার্চ ১, ১৯৩৯
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশ |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
দাম্পত্য সঙ্গী | আনোয়ারা |
পিতামাতা | পিতা মরহুম সৈয়দুর রহমান |
শিক্ষা | এম এ |
পেশা | রাজনীতি |
ধর্ম | ইসলাম |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাআবুল কালাম আজাদ ১৯৩৯ সালের পহেলা মার্চ জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলাধীন খেওয়ারচর উজান গ্রামের মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম সৈয়দুর রহমান এবং মাতা আলহাজ্ব মরহুমা ছামিরন নেছা। ৮ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।
আবুল কালাম আজাদ ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর রাজেন্দ্র কিশোর হাই স্কুল হতে ১৯৫৬ সালে ম্যাট্রিক এবং আনন্দমোহন কলেজ থেকে ১৯৫৮ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে বি,এ (অর্নাস) ডিগ্রী অর্জন করেন, ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম এ ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৭২ সালে ঢাকা সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এল,এল,বি ডিগ্রি অর্জন করেন।
কর্মজীবন
সম্পাদনাআবুল কালাম আজাদ ১৯৬৩ সালে প্রথম তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তান ওয়াটার এন্ড পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অথরিটিতে কর্মকর্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান ওয়াপদা বিভক্ত হওয়ায় তিনি পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের অধীনে ন্যস্ত হন। তিনি এখান থেকে ১৯৭৫ সালে কলেরা রিসার্চ ল্যাবরেটরি ঢাকায় লিঁয়াজো প্রধান হিসেবে যোগদান করেন।
একই প্রতিষ্ঠানে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত পারসনাল ম্যানেজমেন্ট ব্রাঞ্চের প্রধান ও প্রশাসনিক উপ-প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীকালে কলেরা রিসার্চ ল্যাবরেটরি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান/সংস্থা আই,সি,ডিডি,আর,বি(ICDDRB) হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি সেখানে পারসনাল ম্যানেজমেন্টের প্রধান এবং জনসংযোগ ও তথ্য কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯১ সালের ১২ জানুয়ারি আইসিডিডিআরবি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন।
তিনি ১৯৭০ সাল থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব ঢাকার অ্যাসোসিয়েট সদস্য এবং ১৯৮০ সাল থেকে ঢাকা ক্লাব লিমিটেডের সদস্য। তিনি ১৯৮৪ও ৮৫ এবং ১৯৮৬ ও ৮৭ সালে বাংলাদেশ জনসংযোগ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি আইসিডিডিআরবি-এর স্টাফ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি, ওয়াটার এন্ড পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক জনসংযোগ সমিতির ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর ছিলেন।
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনাআবুল কালাম আজাদ ১৯৫৪ সাল থেকে ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নকালে ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৯ ও ৬০ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগের হল শাখার সভাপতি ছিলেন। ডাকসুর নির্বাচনে ১৯৬১ ও ৬২ সালে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল সংসদের প্রতিনিধি নির্বাচিত হন এবং ড্রামা ও এন্টারটেইনমেন্ট সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ঐ সময় হামিদূর রহমান শিক্ষা কমিশন রিপোর্টের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে ১৯৬২ সালে কারাবরণ করেন। তিনি ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
আবুল কালাম আজাদ ১৯৯১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৩৮-জামালপুর-১, দেওয়ানগঞ্জ - বকশীগঞ্জ নির্বাচনি এলাকা থেকে ৪ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রথমবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনি তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান, সংসদীয় সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সংসদীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির সদস্য ছিলেন। এছাড়াও জাতীয় সংসদের প্যানেল স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০০৮ সালের ২৯ শে ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী নিযুক্ত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে সংসদস সদস্য হওয়ার পর তিনি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
আবুল কালাম আজাদ ১৯৮২ সালে মুম্বাই, ইন্ডিয়ায় ৯ম বিশ্ব জনসংযোগ কংগ্রেসে, ১৯৮৫ সালে আমস্টার্ডাম, নেদারল্যান্ডে ১০ম বিশ্ব জনসংযোগ কংগ্রেসে, ১৯৮৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ১১তম বিশ্ব জনসংযোগ কংগ্রেসে যোগদান, ১৯৯৩ সালে নমপেন, কম্বডিয়াতে জাতীয় গণতান্ত্রিক ইন্সটিটিউট কর্তৃক পরিচালিত আন্তর্জাতিক সংসদীয় সেমিনারে, ১৯৯৬ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং ইউএস কংগ্রেসের ভূমিকা পর্যবেক্ষণে ইউএস ইনফরমেশন এজেন্সির ইন্টারন্যাশনাল ভিজিটর প্রোগ্রামে সেদেশে বিভিন্ন স্টেটে পর্যবেক্ষক হিসেবে এবং ১৯৯৭ সালে সার্ক সম্মেলনে ভারতে পাবলিক একাউন্সের স্থায়ী কমিটির সভায় যোগদান করেন।
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাআবুল কালাম আজাদ ১৯৬৫ সালের ৩ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দির সুলতান আহমেদ চৌধুরীর মেয়ে আনোয়ারার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির এক ছেলে ও এক কন্যা রয়েছে। তিনি বঙ্গবন্ধু পরিবারের শেখ সেলিমের আত্মীয়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ আবুল কালাম আজাদ, জামালপুর-১। "নির্বাচনী এলাকাঃ ১৩৮ জামালপুর-১"। ২০২০-০৭-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-২৩।
- ↑ আলহাজ আবুল কালাম আজাদ এমপি, উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ। [[[বকশীগঞ্জ উপজেলা]] "বকশীগঞ্জ উপজেলা"]
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-২৮। - ↑ "শপথ নিলেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা"। www.prothomalo.com। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১৯।