আবদুল্লাহ ইবনে সুহাইল
আবদুল্লাহ ইবনে সুহাইল (৫৯৪- ৬৩২ খ্রিঃ) মুহাম্মদ এর একজন বিশিষ্ট সাহাবা ছিলেন। তিনি সাহাবা সুহাইল ইবনে আমর এর সন্তান ছিলেন ।[১]
নাম ও বংশ পরিচয়
সম্পাদনাআবদুল্লাহ ইবনে সুহাইল এর মূলনাম আবদুল্লাহ এবং উপনাম আবু সুহাইল ।তার পিতার নাম সুহাইল ইবনে আমর এবং মাতার নাম ফাখতা বিনতু আমের।
ইসলাম গ্রহণ ও হিজরত
সম্পাদনাআবদুল্লাহ ইবনে সুহাইল ইসলামের প্রথম পর্যায়েই ইসলাম গ্রহণ করেন এবং হাবশা অভিমূখী দ্বিতীয় কাফিলার সাথে হাবশায় হিজরত করেন । কিছুদিন হাবশায় অবস্থানের পর মক্কায় ফিরে এলে পিতা সুহাইল ইবনে আমর তাকে বন্দী করে এবং তার ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালায় । আবদুল্লাহ অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ইসলাম ত্যাগ করে পুনরায় মুশরিকী জীবনে বা পৌত্তলিকতায় ফিরে যাওয়ার ভান করেন। তার মাতা-পিতা ও মক্কার মুশরিকরা তার বাহ্যিক আচরণ দেখে ইসলাম পরিত্যাগ সম্পর্কে নিশ্চিন্ত হয়ে যায় এবং অত্যাচার বন্ধ করে দেয় ।
যুদ্ধে অংশগ্রহণ
সম্পাদনাএদিকে মুহাম্মাদ মক্কা ছেড়ে মদীনায় চলে যান। মক্কা ও মদীনার মাঝে সামরিক সংঘর্ষ শুরু হয়। মক্কাবাসীরা আবদুল্লাহকে তাদের সহযোদ্ধা হিসেবে বদরে মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়বার জন্য নিয়ে যায়। কিন্তু আবদুল্লাহ কখনো ইসলাম ত্যাগ করেননি, তিনি শুধু সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। বদর যুদ্ধে মুসলিম ও কুরাইশ বাহিনী মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমন সময় সুযোগ বুঝে আবদুল্লাহ ইবনে সুহাইল মুসলিম বাহিনীতে যোগদান করেন এবং মুসলমান বাহিনীর হয়ে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেন ।
বদরের পর সকল প্রসিদ্ধ যুদ্ধেই আবদুল্লাহ ইবনে সুহাইল মুহাম্মদ সংগে থেকে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ অংশ নেন । হুদাইবিয়ার সন্ধি ও বাইয়াতে রিদওয়ানেও তিনি শরীক ছিলেন।[২]
মক্কা বিজয়ের সময়ও আবদুল্লাহ ইবনে সুহাইল মুহাম্মদ এর সফরসঙ্গী ছিলেন । তার পিতা সুহাইল ইবনে আমর তখনও মক্কায় ইসলাম গ্রহণ করেননি ।আবদুল্লাহ ইবনে সুহাইল তার পিতার জন্য মুহাম্মদের নিকট নিরাপত্তা চাইলেন,মুহাম্মদ তার পিতাকে নিরাপত্তা দিলে তার পিতা সুহাইল ইবনে আমর ইসলাম গ্রহণ করেন ।[৩]
খিলাফত আমলে
সম্পাদনাখলিফা আবু বকর এর খিলাফত কালে আরব উপদ্বীপে যাকাত অস্বীকারকারী ও ভন্ড নবীদের যে বিদ্রোহ দেখা দেয়, আবদুল্লাহ ইবনে সুহাইল সেই বিদ্রোহ দমনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
মৃত্যু
সম্পাদনাহিজরী ১২ সনে ইয়ামামার প্রান্তরে ভন্ড নবী মুসাইলামার সাথে যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়, আবদুল্লাহ ইবনে সুহাইল সেই যুদ্ধেই শাহাদাত বরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৩৮ বছর। তার মৃত্যুকালে তার পিতা তখনো জীবিত ছিলো ।