আফতাব শিবদাসানি

ভারতীয় অভিনেতা

আফতাব শিবদাসানি (হিন্দি: आफ़ताब शिवदासानी, জন্মঃ জুন ২৫, ১৯৭৮) হচ্ছেন ভারতের হিন্দি চলচ্চিত্র শিল্পের একজন অভিনেতা। ১৪ মাস বয়স থাকাকালীন আফতাব সর্বপ্রথম একটি টিভি কমার্শিয়ালে প্রদর্শিত হবার সুযোগ পেয়েছিলেন। চলচ্চিত্র জগতে তিনি পা দেন ১৯৮৭ সালের চলচ্চিত্র মিঃ ইন্ডিয়া এর মাধ্যমে যেখানে তিনি শিশুশিল্পীর মর্যাদা পেয়েছিলেন। এরপর শাহেনশাহ (১৯৮৮), চালবাজ (১৯৮৯), আওয়াল নাম্বার (১৯৯০), সিআইডি (১৯৯০) এবং ইনসানিয়াত (১৯৯৪) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।[]

আফতাব শিবদাসানি
জন্ম (1978-06-25) ২৫ জুন ১৯৭৮ (বয়স ৪৬)
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাচলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক
কর্মজীবন১৯৮৭-বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীনিন দুসাঞ্জ (বি. ২০১৪)
পিতা-মাতাপুটলি শিবদাসানি
প্রেম শিবদাসানি

১৯৯৯ সালে আফতাব মাস্ত চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বলিউডে প্রাপ্তবয়স্ক অভিনেতা এবং নায়ক হিসেবে প্রবেশ করেন, চলচ্চিত্রটি রাম গোপাল বর্মা পরিচালনা করেছিলেন এবং উর্মিলা মাতন্ডকর আফতাবের বিপরীতে ছিলেন, আফতাব এই চলচ্চিত্রের জন্য 'জী সিনে এ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট মেইল ডেব্যু' এবং 'স্টার স্ক্রীন এ্যাওয়ার্ড' ফর মস্ট প্রমিজিং নিউকামার - মেইল পুরস্কার জিতেছিলেন। এরপর আফতাব বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন যেমনঃ কসুর (২০০১), এই কসুর চলচ্চিত্রের জন্য তিনি 'জি সিনে এ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট এ্যাক্টর ইন এ নেগেটিভ রোল' পুরস্কার জিতেছিলেন এবং 'ফিল্মফেয়ার বেস্ট ভিলেন এ্যাওয়ার্ড'এ মনোনয়ন পেয়েছিলেন, কিয়া ইয়েহি পিয়ার হে (২০০২), আওয়ারা পাগল দিওয়ানা (২০০২), হাঙ্গামা (২০০৩), মাস্তি (২০০৪) ছিলো সফল চলচ্চিত্র। ২০০১ সালের চলচ্চিত্র পিয়ার ইশক অর মহাব্বাত, ২০০৩ সালের ডারনা মানা হে এবং ২০০৩ সালের ফুটপাত ছিলো মোটামুটি সফল।

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

আফতাবের মার নাম হচ্ছে পুটলি এবং বাবার নাম প্রেম শিবদাসানি।[] তার বাবা পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের হিন্দিভাষী এক পরিবারে জন্মেছিলেন এবং তার মা ছিলেন ইরানি বংশোদ্ভূত।[] মুম্বাইয়ের লোকমান্য তিলক মার্গ এলাকার সেন্ট জেভিয়ার্স হাই স্কুলে পড়তেন আফতাব, এরপর তিনি মুম্বাইয়েরই এইচ আর কলেজ অব কমার্স থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন।[] ২০১২ সালে আফতাব নিন দুসাঞ্জ নামের এক মেয়েকে বিয়ের আংটি পরান, নিন দুসাঞ্জ পাঞ্জাবি মেয়ে যিনি লন্ডনে বড় হয়েছিলেন এবং পরে হংকংএ বসবাস করা শুরু করেন।[] ২০১৪ সালে নিন এবং আফতাব বিয়ে করেন একটি প্রাইভেট সেরেমনিতে যেখানে শুধু তাদের পরিবারের সদস্যরা ছিলেন।[]

কর্মজীবন

সম্পাদনা

১৯৮৭-১৯৯৪ঃ শিশু চরিত্র

সম্পাদনা

আফতাবের বয়স যখন ১৪ মাস তখন তাকে একটি বিজ্ঞাপন চিত্রে কাজ করার জন্য নেওয়া হয়, ফেয়ারেক্স বেবি (শিশুদের খাবারের ব্র্যান্ড) বিজ্ঞাপনে কাজ করার জন্য আফতাবকে নেওয়া হয়েছিলো, এরপর আফতাব আরো অনেক টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। অনিল কাপুর অভিনীত ১৯৮৭ সালের চলচ্চিত্র মিঃ ইন্ডিয়াতে আফতাব শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন, এছাড়াও তিনি ১৯৯০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আওয়াল নাম্বার (দেব আনন্দ অভিনীত), ১৯৮৮ সালের শাহেনশাহ (অমিতাভ বচ্চন অভিনীত), ১৯৮৯ সালের চালবাজ (রজনীকান্ত অভিনীত) এবং ইনসানিয়াত (১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত, সানি দেওল অভিনীত) চলচ্চিত্রে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন শিশুশিল্পী হিসেবেই।

১৯৯৯-২০০৮ঃ প্রাপ্তবয়স্ক চরিত্রে অভিনয় এবং বলিউডে মোটামুটি জায়গা করে নেওয়া

সম্পাদনা

১৯ বছর বয়স পর্যন্ত আফতাব টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে কাজ করে যাচ্ছিলেন হঠাৎ তিনি চলচ্চিত্র পরিচালক রাম গোপাল বর্মার মাস্ত চলচ্চিত্রে কাজ করার প্রস্তাব পেয়ে যান, তখনো তিনি এইচ আর কলেজে অধ্যায়নরত ছিলেন। মাস্ত চলচ্চিত্রটিতে উর্মিলা মাটন্ডকর ছিলেন। মাস্ত চলচ্চিত্রটি ১৯৯৯ সালে মুক্তি পায়; মোটামুটি ব্যবসাসফলতা পায় চলচ্চিত্রটি এবং চলচ্চিত্রটির গানগুলো তখনকার তরুণ-তরুণীদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলো। আফতাব এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জি সিনে পুরস্কার (সেরা নবাগত অভিনেতা) এবং শ্রেষ্ঠ নবাগত অভিনেতা বিভাগে স্ক্রিন পুরস্কার পেয়েছিলেন। চলচ্চিত্রটির রিভিউে 'প্ল্যানেট বলিউড' এর ইকরাম নামক এক ব্যক্তি আফতাবের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন।[]

২০০১ সালে আফতাব আবার চলচ্চিত্র জগতে ফিরে আসেন, বিক্রম ভাটের কসুর চলচ্চিত্রে তিনি লিসা রায়ের বিপরীতে অভিনয় করেন। তিনি এখানে ঋণাত্মক চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, একজন সাংবাদিক যে তার স্ত্রীকে খুন করে। এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার (বেস্ট ভিলেন ক্যাটাগরি) জিতেছিলেন এবং তাকে ঋণাত্মক চরিত্রে অভিনয়ের জন্য জি সিনে পুরস্কার ও দেয়া হয়েছিলো।[] আফতাব এরপর সাইফ আলী খান, ফারদীন খান, টুইংকেল খান্না এবং সোনালী বেন্দ্রের সঙ্গে লাভ কে লিয়ে কুচ ভি কারেগা (২০০১) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, এটির পরিচালক আফতাবের মাস্তএর রাম গোপাল বর্মা ছিলেন। চলচ্চিত্রটি ব্যর্থ হলেও আফতাবের অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিলো।[]

এরপর আফতাব পেয়ার ইশক অর মহাব্বাত (২০০১) এ অভিনয় করেন, এখানে ছিলেন অর্জুন রামপাল, সুনীল শেঠি এবং কীর্তি রেডি।[][] এষা দেওল এর সঙ্গে আফতাব কোই মেরে দিল সে পুছে (২০০২) এবং অমীশা প্যাটেল এর সঙ্গে কিয়া ইয়েহি পেয়ার হে (২০০২) তে অভিনয় করেন। এছাড়াও ২০০২ সালে জানে দুশমনঃ এক আনোখি কাহানি, আওয়ারা পাগল দিওয়ানা এবং পিয়াসা মুক্তি পায়। আওয়ারা পাগল দিওয়ানাতে তিনি অক্ষয় কুমার এবং পরেশ রাওয়াল এর সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন, চলচ্চিত্রটি ২০০২ সালের অন্যতম বড় সফল চলচ্চিত্র ছিলো।

২০০৩ সালে আফতাব ডারনা মানা হে, ফুটপাথ এবং হাঙ্গামা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, হাঙ্গামা চলচ্চিত্রটি দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিলো, এটাতে অক্ষয় খান্না এবং রিমি সেন ছিলেন। ২০০৪ সালের চলচ্চিত্র মাস্তি ছিলো অনেক বড় হিট, মাস্তিতে বিবেক ওবেরয়, রিতেশ দেশমুখ, অমৃতা রাও, জেনেলিয়া ডি সুজা ছিলেন।

২০০৫ সালে আফতাব অন্তরা মালির সঙ্গে মিঃ ইয়া মিস এবং অনিতা হাস্যনন্দনীর সঙ্গে কোই আপ সা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

চলচ্চিত্র

সম্পাদনা
এই তালিকাটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সমৃদ্ধ করতে পারেন

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Aftab Shivdasani to get married – Bollywood Movie News. Indiaglitz.com (5 November 2012). Retrieved on 2016-02-14.
  2. "Aftab Shivdasani"Koimoi। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০১৪ 
  3. "Aftab Shivdasani honored with Nation Honor Awards for his performance in 'Kya Yehi Pyaar Hai'."kaneesha.com। ১৬ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৯ 
  4. "Aftab Shivdasani ties the knot"The Times of India 
  5. Mohammad Ali Ikram। "Mast Review"। Planet Bollywood। ৭ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১২ 
  6. Taran Adarsh। "Kasoor Review"। Bollywood Hungama। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১২ 
  7. Taran Adarsh। "Love Ke Liye Kuch Bhi Karega Review"। Bollywood Hungama। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১২ 
  8. Taran Adarsh। "Pyaar Ishq Aur Mohabbat Review"। Bollywood Hungama। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১২ 
  9. Pankaj Shukla। "Three Boys, One Girl, And Some Heart Surgery"। SmasHits.com। ২৭ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১২ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা