আপেক্ষিক বলবিদ্যা
পদার্থবিজ্ঞানে আপেক্ষিক বলবিদ্যা বলতে বিশেষ আপেক্ষিকতা এবং সাধারণ আপেক্ষিকতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলবিদ্যাকে বোঝানো হয়। আলোর সমতূল্য বেগে (c) গতিশীল এমন কণা বা প্রবাহীর একটি সিস্টেমের ক্ষেত্রে সিস্টেমটির ব্যাখ্যা বিজ্ঞানের এ শাখায় কোয়ান্টাম বলবিদ্যার আলোকে না দিয়ে বরং অ-কোয়ান্টাম বলবিদ্যার মাধ্যমে দেওয়া হয়। উচ্চ গতি ও শক্তিতে ভ্রমণকারী কণার সিস্টেম ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে এই শাখার মাধ্যমে চিরায়ত বলবিদ্যার সঠিক সম্প্রসারণ ঘটে এবং এখান থেকে কণার বলবিদ্যার সাথে তড়িচ্চুম্বকত্বের একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ অন্তর্ভুক্তিও পাওয়া যায়। গ্যালিলীয় আপেক্ষিকতা যেখানে কণা এবং আলো যে কোন গতিতে ভ্রমণ করতে পারে এমনকি আলোর চেয়েও দ্রুত গতিতে ভ্রমণ যেখানে অনুমোদনযোগ্য হয় সেখানে এই ব্যাপারটি সম্ভব ছিল না। আপেক্ষিক বলবিদ্যার ভিত্তিসমূহ হচ্ছে বিশেষ আপেক্ষিকতা এবং সাধারণ আপেক্ষিকতার স্বীকার্য। কোয়ান্টাম বলবিদ্যার সাথে বিশেষ আপেক্ষিকতার একীকরণ বা সমন্বয়ই আপেক্ষিক কোয়ান্টাম বলবিদ্যা, পক্ষান্তরে সাধারণ আপেক্ষিকতার সাথে একীকরণের এই প্রচেষ্টা হলো কোয়ান্টাম মহাকর্ষ যা অদ্যাবধি পদার্থবিজ্ঞানের একটি অমীমাংসিত সমস্যা।
চিরায়ত বলবিদ্যার মতো ক্ষেত্রটিকে সৃতিবিদ্যা এবং গতিবিদ্যায় বিভাজন করা যায় যেখানে সৃতিবিদ্যায় অবস্থান, বেগ ও ত্বরণকে প্রাধান্য দিয়ে গতির বর্ণনা দেওয়া হয়; পক্ষান্তরে গতিবিদ্যায় শক্তি, ভরবেগ, কৌণিক ভরবেগ, এদের সংরক্ষণ সূত্র এবং কণার উপর প্রযুক্ত বা কণা দ্বারা প্রযুক্ত বলের আলোকে গতির পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। সে যাই হোক, প্রসঙ্গ কাঠামোয় থাকা পর্যবেক্ষকের আপেক্ষিক গতির উপর নির্ভরশীল “গতি” ও “স্থিতি”-র ব্যাপারটি নিয়ে একটি একটি সূক্ষ্মতা রয়েছে চিরায়ত বলবিদ্যায় যাকে “স্থিতিবিদ্যা” পরিভাষাটির দ্বারা অভিহিত করা হয়।
বল যা ভরবেগের সময় অন্তরজ (নিউটনের দ্বিতীয় সূত্র), কণার দ্বারা কৃত কাজ যা কণার গতিপথ বরাবর প্রযুক্ত বলের রেখা সমাকলজ এবং ক্ষমতা যা কৃত কাজের সময় অন্তরজ চিরায়ত বলবিদ্যার অন্তর্ভুক্ত এমন কিছু কিছু সংজ্ঞা এবং ধারণার জের বিশেষ আপেক্ষিকতায় টানা হলেও অবশিষ্ট সংজ্ঞা এবং সূত্রগুলোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ঘষামাজা করতে হয়। বিশেষ আপেক্ষিকতা অনুসারে গতি হল আপেক্ষিক বিষয় এবং যেকোন জড় প্রসঙ্গ কাঠামোতে সকল পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রগুলো একই থাকে। স্থান এবং সময়ের ধারণার পরিমার্জন করতে গেলে বিশেষ আপেক্ষিকতা ভর, ভরবেগ এবং শক্তির ধারণাগুলোকে পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করে যাদের সবগুলোই আবার নিউটনীয় বলবিদ্যার ভিত্তি উপাদান। বিশেষ আপেক্ষিকতা অনুসারে এই ধারণাগুলো একই ভৌত রাশির এমনই ভিন্ন আরেকটি রূপ যা মূলত স্থান ও কালের পারস্পরিক সম্পর্কের কথা বলে। প্রসঙ্গক্রমে যে আরেকটি পরিমার্জনের কথা আসে তা হলো ভরকেন্দ্রের ধারণা যাকে চিরায়ত বলবিদ্যায় সোজাসাপ্টাভাবে সংজ্ঞায়িত করা গেলেও আপেক্ষিকতায় এটি খুবই অস্পষ্ট। (বিস্তারিত জানতে আপেক্ষিক ভর কেন্দ্র দেখুন)
লরেন্টজ ফ্যাক্টরের অরৈখিকতা যা সমস্ত ক্ষেত্রের এবং কণার আপেক্ষিক বেগের উপর নির্ভরতার এবং গতির সীমাবদ্ধতার সঠিক ব্যাখ্যা দেয় তার কারণে সমীকরণসমূহ অতি পরিচিত ত্রিমাত্রিক ভেক্টর ক্যালকুলাসের আনুষ্ঠানিকতার ক্ষেত্রে অত্যাধিক জটিল হয়ে পড়ে। তথাপি চতুর্মাত্রিক স্থান-কালে এদের একটি সরলতর ও মার্জিত রূপ বিদ্যমান যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে মিনকভস্কি স্থান (বিশেষ আপেক্ষিকতা) এবং বক্র স্থানকাল (সাধারণ আপেক্ষিকতা)। এর কারণ হলো, স্থান থেকে প্রতিপাদিত ত্রিমাত্রিক ভেক্টর এবং সময় থেকে প্রতিপাদিত স্কেলারগুলোকে চার-ভেক্টরে বা চতুর্মাত্রিক টেন্সরে সংকলিত সম্ভব। এমনকি ছয়টি উপাদান নিয়ে গঠিত কৌণিক ভরবেগ টেন্সরকে কখনও কখনও দ্বিভেক্টর বলা হয়। কারণ ত্রিমাত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি “দুটি ভেক্টর”[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন] (ছদ্মভেক্টর হওয়ায় যাদের একটি গতানুগতিক কৌণিক ভরবেগ)।
আপেক্ষিক সৃতিবিদ্যাসম্পাদনা
আপেক্ষিক চার-বেগ যা আপেক্ষিকতার অধীনে বেগের প্রতিনিধিত্বকারী চার-ভেক্টর তাকে নিম্নোক্তভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়:
এখানে হচ্ছে স্থান-কাল বরাবর পথরেখার প্রকৃত সময়। এই পথরেখাকে বিশ্ব-রেখা বলা হয় যা সূত্রে উপস্থাপিত বেগ কর্তৃক অনুসৃত হয়। এবং হচ্ছে চার-অবস্থান যা কোন ঘটনার স্থানাঙ্ক যেখানে—
সময়ের প্রসারণের কারণে প্রকৃত সময় হলো একই প্রসঙ্গ কাঠামোর একই অবস্থানে সংঘটিত দুটি ঘটনার মধ্যকার সময়। প্রকৃত সময় নিম্নোক্ত সমীকরণের মাধ্যমে স্থানাঙ্ক সময়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত:
এখানে হলো লরেন্টজ ফ্যাক্টর যখন:
এই দুটি সংস্করণের যে উভয়কেই ব্যবহার করা যেতে পারে। ফলে আপেক্ষিক চার-বেগকে লেখা যাবে:
আপেক্ষিক গতিবিদ্যাসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- C. Chryssomalakos; H. Hernandez-Coronado; E. Okon (২০০৯)। "Center of mass in special and general relativity and its role in an effective description of spacetime"। J. Phys. Conf. Ser.। Mexico। 174 (1): 012026। arXiv:0901.3349 । এসটুসিআইডি 17734387। ডিওআই:10.1088/1742-6596/174/1/012026। বিবকোড:2009JPhCS.174a2026C।
আরও পড়ুনসম্পাদনা
- General scope and special/general relativity
- P.M. Whelan; M.J. Hodgeson (১৯৭৮)। Essential Principles of Physics (2nd সংস্করণ)। John Murray। আইএসবিএন 0-7195-3382-1।
- G. Woan (২০১০)। The Cambridge Handbook of Physics Formulas । Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-57507-2।
- P.A. Tipler; G. Mosca (২০০৮)। Physics for Scientists and Engineers: With Modern Physics (6th সংস্করণ)। W.H. Freeman and Co। আইএসবিএন 978-1-4292-0265-7।
- R.G. Lerner; G.L. Trigg (২০০৫)। Encyclopaedia of Physics (2nd সংস্করণ)। VHC Publishers, Hans Warlimont, Springer। আইএসবিএন 978-0-07-025734-4।
- Concepts of Modern Physics (4th Edition), A. Beiser, Physics, McGraw-Hill (International), 1987, আইএসবিএন ০-০৭-১০০১৪৪-১
- C.B. Parker (১৯৯৪)। McGraw Hill Encyclopaedia of Physics (2nd সংস্করণ)। McGraw Hill। আইএসবিএন 0-07-051400-3।
- T. Frankel (২০১২)। The Geometry of Physics (3rd সংস্করণ)। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-1-107-60260-1।
- L.H. Greenberg (১৯৭৮)। Physics with Modern Applications । Holt-Saunders International W.B. Saunders and Co। আইএসবিএন 0-7216-4247-0।
- A. Halpern (১৯৮৮)। 3000 Solved Problems in Physics, Schaum Series। Mc Graw Hill। আইএসবিএন 978-0-07-025734-4।
- Electromagnetism and special relativity
- G.A.G. Bennet (১৯৭৪)। Electricity and Modern Physics (2nd সংস্করণ)। Edward Arnold (UK)। আইএসবিএন 0-7131-2459-8।
- I.S. Grant; W.R. Phillips; Manchester Physics (২০০৮)। Electromagnetism (2nd সংস্করণ)। John Wiley & Sons। আইএসবিএন 978-0-471-92712-9।
- D.J. Griffiths (২০০৭)। Introduction to Electrodynamics (3rd সংস্করণ)। Pearson Education, Dorling Kindersley। আইএসবিএন 978-81-7758-293-2।
- Classical mechanics and special relativity
- J.R. Forshaw; A.G. Smith (২০০৯)। Dynamics and Relativity। Wiley। আইএসবিএন 978-0-470-01460-8।
- D. Kleppner; R.J. Kolenkow (২০১০)। An Introduction to Mechanics। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-19821-9।
- L.N. Hand; J.D. Finch (২০০৮)। Analytical Mechanics। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-57572-0।
- P.J. O'Donnell (২০১৫)। Essential Dynamics and Relativity। CRC Press। আইএসবিএন 978-1-4665-8839-4।
- General relativity
- D. McMahon (২০০৬)। Relativity DeMystified। Mc Graw Hill। আইএসবিএন 0-07-145545-0।
- J.A. Wheeler; C. Misner; K.S. Thorne (১৯৭৩)। Gravitation। W.H. Freeman & Co। আইএসবিএন 0-7167-0344-0।
- J.A. Wheeler; I. Ciufolini (১৯৯৫)। Gravitation and Inertia। Princeton University Press। আইএসবিএন 978-0-691-03323-5।
- R.J.A. Lambourne (২০১০)। Relativity, Gravitation, and Cosmology। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-13138-4।
পদার্থবিজ্ঞান-সম্পর্কিত বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |