আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (সংক্ষেপে আইআইইউসি) বাংলাদেশের সরকার কর্তৃক অনুমোদিত একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।[২] ২০০৪ সালে ইউজিসি চালিত একটি জরিপে এটি শীর্ষ ৯ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান লাভ করে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টি ৪৩০ জন শিক্ষক (৩১৭ জন পূর্ণকালীন) ও ১২০০০ জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। সর্বমোট ৬০ একর আয়তনের ক্যাম্পাস নিয়ে গঠিত।[৩][১] এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম।[৪]
আইআইইউসি | |
![]() | |
প্রাক্তন নাম | ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম |
---|---|
নীতিবাক্য | Combines quality with morality নৈতিকতার সাথে মানকে সম্মিলিত করে |
ধরন | বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় |
স্থাপিত | ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৫ |
ইআইআইএন | ১৩৬৬৮৪ |
আচার্য | রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন |
উপাচার্য | প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | ৪৩০[১] |
শিক্ষার্থী | আনু. ১২০০০ |
অবস্থান | কুমিরা, চট্টগ্রাম , ২২°২৯′৪৮″ উত্তর ৯১°৪৩′১৭″ পূর্ব / ২২.৪৯৬৭৭৭° উত্তর ৯১.৭২১৪৪৭° পূর্ব |
সংক্ষিপ্ত নাম | আইআইইউসি |
অধিভুক্তি | বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন |
ওয়েবসাইট | www |
![]() |
ইতিহাস
সম্পাদনাইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম ট্রাস্ট (আইইউসিটি) এর তত্ত্বাবধানে থাকা এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ১১ই ফেব্রুয়ারি ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশের ১৯৯২ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় [৫][৬] আইনের আওতায় অনুমোদন লাভ করে এবং সেই বছর থেকেই এর কার্যক্রম আরম্ভ হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০০০ সালে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) নামে উন্নীত হয়।[১]
২০১০ সালে সংশোধিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী শাখা ক্যাম্পাস আইনানুগ নয় সাব্যস্ত হলে ২০১৬ সালে চট্টগ্রামের বাইরে থাকা ঢাকা ক্যাম্পাসসহ চট্টগ্রাম নগরীতে থাকা ফিমেল ক্যাম্পাস ও চকবাজারে থাকা প্রথম ক্যাম্পাস বন্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়টির সীতাকুণ্ডের স্থায়ী কুমিরা ক্যাম্পাসে বর্তমানে পাঠদান করছে।[৭] ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়টির ৫ম তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।[৮]
২০২১ সালের মার্চ মাসে বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে পূর্ববর্তী ট্রাস্টি বোর্ড বাতিল করে আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীকে চেয়ারম্যান হিসেবে নতুন ট্রাস্টি বোর্ড অনুমোদন করে তৎকালীন সরকার।[৯] আবু রেজা নদভীর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে হরিলুট শুরু হয়।[১][২]
২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুনরায় ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন শামসুল ইসলাম।[৩]
ক্যাম্পাস
সম্পাদনাআন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের স্থায়ী ক্যাম্পাস চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার কুমিরায় অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাস মেইল ও ফিমেল একাডেমিক জোনে বিভক্ত। যেখানে, পৃথক অ্যাকাডেমিক ভবনে ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদাভাবে পাঠদান করা হয়। পাঁচটিরও অধিক অ্যাকাডেমিক ভবন, পাঁচটি অনুষদ ভবন, একটি গ্রন্থাগার ভবন, কেন্দ্রীয় মসজিদ ও অডিটোরিয়াম নিয়ে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কার্যক্রম।
অনুষদ ও বিভাগসমূহ
সম্পাদনাবিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ
সম্পাদনা- কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ
- বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং [আইইবি স্বীকৃত ও প্রত্যয়িত]
- কম্পিউটার বিজ্ঞানে পেশাদার ডিপ্লোমা (ডিসিএস)
- কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে মাস্টার্স অব সায়েন্স (এমএসসি)
- তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক্স প্রকৌশল বিভাগ
- কম্পিউটার ও যোগাযোগ প্রকৌশল বিভাগ
- ইলেকট্রনিক্স ও যোগাযোগ প্রকৌশল বিভাগ
- পুরকৌশল বিভাগ
- ফার্মেসি বিভাগ
ব্যবসায় অধ্যয়ন অনুষদ
সম্পাদনা- ব্যবসায় প্রশাসনের মাস্টার্স (এমবিএ) [নিয়মিত]
- ব্যবসায় প্রশাসনের মাস্টার্স (এমবিএ) [নির্বাহী]
- ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স (এমবিএম)
- ব্যবসায় প্রশাসনে ব্যাচেলর (বিবিএ)
আইন অনুষদ
সম্পাদনা- ব্যাচেলর অব ল (এলএলবি অনার্স)
- মাস্টার্স অব ল'স (এলএলএম) [১০]
চারুকলা ও মানবিক অনুষদ
সম্পাদনা- ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য (ইএলএল): ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে মাস্টার্স অব আর্টস, ইংরেজি ভাষা শিক্ষকতায় (আরএলটি) স্নাতকোত্তর,
- ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (অনার্স)
- আরবি ভাষা ও সাহিত্যে ব্যাচেলর অব আর্টস
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ
সম্পাদনা- অর্থনীতি ও ব্যাংকিংয়ে স্নাতক বি এস এস (অনার্স) [১১]
- অর্থনীতি ও ব্যাংকিংয়ে মাস্টার্স এম এস এস
- গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা (পিজিডিএলআইএস)
শরীয়াহ ও ইসলামি শিক্ষা অনুষদ
সম্পাদনা- কুরআন বিজ্ঞান ও ইসলামি শিক্ষা (কিউএসআইএস):
- কুরআন বিজ্ঞান ও ইসলামি শিক্ষায় (এমকিউএসআইএস) মাস্টার্স অব আর্টস
- কুরআন বিজ্ঞান ও ইসলামি শিক্ষা, দাওয়াহ ও ইসলামি শিক্ষায় (ডিআইএস) ব্যাচেলর অব আর্টস
- দাওয়াহ ও ইসলামি শিক্ষায় (এমডিআইএস) মাস্টার্স অব আর্টস
- দাওয়াহ ও ইসলামি শিক্ষায় ব্যাচেলর অব আর্টস (অনার্স) [১২]
গ্রন্থাগার
সম্পাদনাএই অনুচ্ছেদটি মেয়াদোত্তীর্ণ। |
বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট গ্রন্থাগারের সংখ্যা ৭ টি, নিচে এই বিষয়ক আরও তথ্য দেওয়া হলো:
ক্রম | গ্রন্থাগারের নাম | গ্রন্থ |
---|---|---|
১ | কাতার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, স্থায়ী ক্যাম্পাস, কুমিরা | ৩৩,০০০ |
২ | সিটি গ্রন্থাগার, চকবাজার, চট্টগ্রাম | ৩,০০০ |
৩ | সিটি গ্রন্থাগার (মেয়েদের), চকবাজার, চট্টগ্রাম | ২,০০০ |
৪ | ইংরেজি সাহিত্য সেমিনার গ্রন্থাগার, চট্টগ্রাম | ১,০০০ |
৫ | বাণিজ্য বিভাগ সেমিনার গ্রন্থাগার, চট্টগ্রাম | ৩,৫০০ |
৬ | স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস গ্রন্থাগার, চট্টগ্রাম | ১,৫০০ |
বইয়ের বিষয়ভিত্তিক পরিসংখ্যান:
ক্রম | অনুষদসমূহ | শিরোনাম | সংখ্যা |
---|---|---|---|
১ | শরিয়াহ ও ইসলামি শিক্ষা অনুষদ | ৪,৯৭২ | ২২,৬৬৬ |
২ | বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ | ৯০৮ | ২৩,৯০৯ |
৩ | বাণিজ্য অনুষদ | ৮২৭ | ২২,৬৯০ |
৪ | স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদ | ১৫৭ | ৮০৩ |
৫ | কলা অনুষদ | ৭৫০ | ৫,৭৩৬ |
৬ | আইন অনুষদ | ৫৬০ | ২,৯০৭ |
৭ | সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ ও অন্যান্য | ২৩০ | ৩,৯৩২ |
সর্বমোট | ৮,৪০৪ | ৮২,৬৪৩ |
ছাত্রাবাস
সম্পাদনাএই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা উপলব্ধ রয়েছে। ছাত্রাবাসগুলো নিম্নরূপ (বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক ছাত্রাবাস):
স্থায়ী ক্যাম্পাস (কুমিরা):
- হজরত উসমান (রা.) হল
এছাড়া পূর্বে আরও কয়েকটি হল ছিল যা বর্তমানে অ্যাকাডেমিক ভবন হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
ছাত্র সংগঠন
সম্পাদনাএখানে নিম্নলিখিত ছাত্র সংগঠন রয়েছে:
- আইআইইউসি এরাবিক ক্লাব
- আইআইইউসি বিতর্ক সোসাইটি
- আইআইইউসি আইন ক্লাব
- আইইইই আইআইইউসি স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চ
- আইআইইউসি ইইই ক্লাব
- আইআইইউসি কম্পিউটার ক্লাব
- আইআইইউসি ইটিই ক্লাব
- আইআইইউসি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ক্লাব
- আইআইইউসি হাদীস ক্লাব
- আইআইইউসি রোবোটিক্স ক্লাব
- আইআইইউসি ইবি ক্লাব
- আইআইইউসি দাওয়াহ ক্লাব
- আইআইইউসি কুর'আনিক সাইন্সেস ক্লাব
- আইআইইউসি ফটোগ্রাফি ক্লাব
- আইআইইউসি ক্রীড়া ক্লাব
- আইআইইউসি সাংস্কৃতিক ক্লাব
- আইআইইউসি ব্যবসায় ক্লাব
- আইআইইউসি ফার্মা ক্লাব
- আইআইইউসি ভাষা ক্লাব
- বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির,আইআইইউসি
- রোভার স্কাউট
চিত্রশালা
সম্পাদনা-
সাইনবোর্ড
-
স্টুডেন্ট বাস
-
কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার
-
কেন্দ্রীয় মসজিদ
-
অডিটোরিয়াম
-
গ্রন্থাগার
-
একাডেমিক ভবন ৫
-
কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ "IIUC History"। iiuc.ac.bd। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০২২।
- ↑ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ আগস্ট ২০১৫ তারিখে ইউজিসি
- ↑ "উচ্চশিক্ষায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে আইআইইউসি"। বণিক বার্তা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মার্চ ২০২৩।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৬ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১০।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৭ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১৬।
- ↑ http://bdlaws.minlaw.gov.bd/print_sections_all.php?id=10
- ↑ "আইআইইউসি'র পাঁচ ক্যাম্পাস অবৈধ, ইউজিসির সতর্কতা"। banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-১৩।
- ↑ "পঞ্চম সমাবর্তনে আইআইইউসি'র ২৯ শিক্ষার্থীকে দেওয়া হবে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল"। বাংলা নিউজ ২৪। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ "আইআইইউসিকে যেভাবে 'লুটের মাল' বানায় জামায়াত নেতারা, ৫ কোটি টাকা হাতানোর প্রমাণ"। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-১৩।
- ↑ আইন অনুষদ, IIUC
- ↑ http://www.iiuc.ac.bd/Facants/factory_business_studies.html
- ↑ অনুষদ শরিয়াহ ও ইসলামী শিক্ষা, IIUC