আনোয়ার হোসেন (বীর উত্তম)
শহীদ আনোয়ার হোসেন (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ২৬ জুলাই, ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে। তার গেজেট নম্বর ৫৫। [১]
আনোয়ার হোসেন | |
---|---|
মৃত্যু | ২৬ জুলাই, ১৯৭১ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পরিচিতির কারণ | বীর উত্তম |
- একই নামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দেখুন আনোয়ার হোসেন।
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাশহীদ আনোয়ার হোসেনের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুল হামিদ ভূঁইয়া এবং মায়ের নাম কুলসুমের নেছা। তার স্ত্রীর নাম ছায়েদা বেগম। তাদের এক মেয়ে।
কর্মজীবন
সম্পাদনাআনোয়ার হোসেন ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন দিনাজপুর ইপিআর সেক্টরের অধীন রংপুর উইংয়ে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিরোধযুদ্ধে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে তিনি যুদ্ধ করেন পাটগ্রামে। [২]
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
সম্পাদনালালমনিরহাট জেলার পাটগ্রামের অন্তর্গত বুড়িমারী এলাকা যা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত। বর্তমানে এটি স্থলবন্দর। বুড়িমারীর ওপর দিয়ে লালমনিরহাট থেকে সড়ক-রেলপথ ভারতের আসাম রাজ্যে প্রবেশ করেছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অধিকাংশ সময় বুড়িমারীসহ পাটগ্রাম মুক্ত এলাকা ছিল। বুড়িমারীতে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের একটি প্রতিরক্ষা অবস্থান। এখানে ছিলেন আনোয়ার হোসেনসহ একদল মুক্তিযোদ্ধা। এই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে বা আধিপত্য বিস্তারের জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রায়ই সেখানে আক্রমণ করত। এরই ধারাবাহিকতায় সেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর উপর আকস্মিক আক্রমণ করেন মুক্তিযোদ্ধারা। তখন সেখানে যুদ্ধ হয়। সেদিন বিপুলসংখ্যক পাকিস্তানি সেনা ভারী অস্ত্রশস্ত্রসহ যুদ্ধে অংশ নেয়। একপর্যায়ে তারা ব্যাপকভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর চড়াও হয়। প্রচণ্ড আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা প্রায় কোণঠাসা হয়ে পড়েন। তাদের দখলে থাকা বাংলাদেশ ভূমি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। আনোয়ার হোসেন ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা দলের এলএমজিম্যান। ভীষণ রকমের সাহসী ও মনোবল ছিল তার। বিপজ্জনক মুহূর্তে নিজ জীবনের কথা না ভেবে এলএমজিসহ ক্রল করে তিনি একাই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থানের ভেতর ঢুকে পড়েন। তার ব্রাশফায়ারে হতাহত হয় কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা। এরপর আনোয়ার হোসেন আরও এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ঠিক তখনই একঝাঁক গুলির সম্মুখীন হন তিনি। গুলিতে তার সম্পূর্ণ শরীর ঝাঁজরা হয়ে যায়। শহীদ হন আনোয়ার হোসেন।
পাটগ্রামের বাউরাবাজারের নিকটে অবস্থিত জম গ্রামে মসজিদের পাশে শহীদ আনোয়ার হোসেনকে মুক্তিযোদ্ধারা সামরিক মর্যাদায় সমাহিত করেন। তার সমাধি সংরক্ষিত আছে।[৩]
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনাপাদটীকা
সম্পাদনা- এই নিবন্ধে দৈনিক প্রথম আলোতে ০৭-০৮-২০১২ তারিখে প্রকাশিত তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না প্রতিবেদন থেকে লেখা অনুলিপি করা হয়েছে। যা দৈনিক প্রথম আলো ক্রিয়েটিভ কমন্স অ্যাট্রিবিউশন-শেয়ার-এলাইক ৩.০ আন্তর্জাতিক লাইসেন্সে উইকিপিডিয়ায় অবমুক্ত করেছে (অনুমতিপত্র)। প্রতিবেদনগুলি দৈনিক প্রথম আলোর মুক্তিযুদ্ধ ট্রাস্টের পক্ষে গ্রন্থনা করেছেন রাশেদুর রহমান (যিনি তারা রহমান নামেও পরিচিত)।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ০৭-০৮-২০১২"। ২০১৭-০৬-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-০৩।
- ↑ র বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। ঢাকা: জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৮৭। আইএসবিএন 9789843351449।
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (দ্বিতীয় খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ৩০। আইএসবিএন 9789849025375।