আনিস উদ দৌলা একজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা।[১] বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এসিআই লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ সীড এসোসিয়েশন (বিএসএ) এর সভাপতি

আনিস উদ দৌলা
জন্ম১৯৩৪[১]
রাতইল ঘোনাপাড়া, গোপালগঞ্জ মহকুমা (বর্তমানে জেলা), ফরিদপুর
জাতীয়তাবাংলাদেশি
নাগরিকত্ববাংলাদেশি
মাতৃশিক্ষায়তনফরিদপুর জিলা স্কুল,
সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা
প্রতিষ্ঠানএসিআই লিমিটেড
পরিচিতির কারণএসিআই লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা
দাম্পত্য সঙ্গীনাজমা দৌলা
সন্তানআরিফ উদ দৌলা (ছেলে),
সুস্মিতা আনিস (মেয়ে),
আশরাফ উদ দৌলা (ছেলে; মৃত্যু ১৯৮৯)
পরিবারফিরোজা বেগম (বড় বোন)

জন্ম ও বংশপরিচয় সম্পাদনা

আনিস উদ দৌলা ১৯৩৪ সালে ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম খান বাহাদুর মোহাম্মদ ইসমাইল ও মায়ের নাম কাকাবুন নেসা বেগম। সাত ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ষষ্ঠ। তাঁর ভাইবোনেরা প্রায় সবাই সুপরিচিত। এর মধ্যে বড় বোন ফিরোজা বেগম উপমহাদেশের বিখ্যাত নজরুলসংগীতশিল্পী।[১] বড় ভাই মসিহ উদ দৌলা সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদ থেকে অবসর নেন। ছোট ভাই আসাফ উদ দৌলাও শিল্পী ও একজন সাবেক সচিব।

শিক্ষা জীবন সম্পাদনা

আনিস উদ দৌলা ফরিদপুর জিলা স্কুলরাজেন্দ্র কলেজ থেকে উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যায় ভর্তি হন। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায়ও মনোযোগ ছিল তাঁর। এর মাঝে লাফ ও দৌড়ে তিনবার সেরা ছিলেন। এছাড়াও ক্রিকেটে ওপেনিং বোলার হিসেবে খেলতেন।[১]

এরই মধ্যে এশিয়া ফাউন্ডেশনের একটি বৃত্তি নিয়ে তিনি করাচিতে মার্কিনদের দ্বারা পরিচালিত একটি ইনস্টিটিউটে লোকপ্রশাসনে ভর্তি হন।[১] সেখান থেকেই ১৯৫৯ সালে স্নাতকোত্তর শেষ করেন।

কর্মজীবন সম্পাদনা

পাকিস্তান অক্সিজেন সম্পাদনা

প্রাথমিকভাবে সরকারি চাকরির জন্য সিএসপি (সিভিল সার্ভিসেস অব পাকিস্তান) দিলেও এর মধ্যে পাকিস্তান অক্সিজেন কোম্পানিতে আঞ্চলিক শাখা ব্যবস্থাপক পদে চাকরি পান। কিন্তু তৎকালে পাকিস্তানের বেসরকারি চাকরির তুলনায় সরকারি চাকরিতে নিম্ন বেতনের কারণে সিএসপির মৌখিক পরীক্ষা দেন নি।

পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় চাকরির পর আনিস ইদ দৌলা ১৯৭০ সালে ঢাকায় বদলি হন। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের পর পূর্ব পাকিস্তান থেকে পাকিস্তান অক্সিজেনের পণ্য বিক্রির টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেন।[১] এর পরিবর্তে ব্যাংকে হিসাব খুলে টাকা রাখার ব্যবস্থা করেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর সংস্কারের কথা বলে অক্সিজেন কারখানা বন্ধ করে দেন, যাতে পাকিস্তান বিমানবাহিনীকে জ্বালানী অক্সিজেন সরবরাহ করতে না হয়।[১]

আইসিআই সম্পাদনা

১৯৮৭ সালে আনিস উদ দৌলা ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান ইম্পিরিয়াল কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (আইসিআই)-এর বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। লোকসানে থাকা প্রতিষ্ঠানটি দুই বছর পর লাভের মুখ দেখে। কিন্তু পাঁচ বছর পর আইসিআই বিশ্বব্যাপী ছোট ছোট ব্যবসা বন্ধ করে দেয়।[১]

এসিআই প্রতিষ্ঠা সম্পাদনা

আইসিআই ব্যবসা গুটিয়ে নিলে আনিস উদ দৌলা ১৯৯২ সালে বাংলাদেশে আইসিআইয়ের ব্যবসা কিনে নেন এবং আইসিআইয়ের সাথে মিল রেখে নামকরণ করেন এসিআই। এমনকি লোগোও কাছাকাছি রাখেন।[১] ব্যবস্থাপনার এসিআই প্রথম বাংলাদেশি কোম্পানি হিসেবে আইএসও সনদ পায়।

পারিবারিক জীবন সম্পাদনা

আনিস উদ দৌলার স্ত্রী নাজমা দৌলা। দম্পতির তিনজন সন্তানের মধ্যে এক ছেলে আরিফ দৌলা বর্তমানে এসিআইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মেয়ে সুস্মিতা আনিস এসিআই ফরমুলেশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।[১] আরেক ছেলে আশরাফ দৌলা ১৪ বছর বয়সে দুর্ঘটনায় মারা যান।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "চাকরিজীবী থেকে সফল উদ্যোক্তা"। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০২০