আতাউর রহমান খান (শিক্ষাবিদ)
মাওলানা আতাউর রহমান খান (১ মার্চ ১৯৪৩ - ৩০ জুলাই ২০০৮) একজন বাংলাদেশী আলেম ও সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন।[১] জ্ঞানচর্চা, মাদরাসা ও মসজিদ পরিচালনার সাথে সাথে রাজনীতি তথা সমাজ সংস্কারেও ছিলেন সোচ্চার।[২] ১৯৯১ সালে কিশোরগঞ্জ-৩ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৩] কিশোরগঞ্জের আল জামেয়াতুল ইমদাদিয়ার প্রায় শুরু থেকে তিনি এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব, জাতীয় শরীয়াহ কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন।[১]
আতাউর রহমান খান | |
---|---|
![]() | |
জাতীয় সংসদের সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৯৯১ – ১৯৯৬ | |
পূর্বসূরী | আলমগীর হোসেন |
উত্তরসূরী | মাসুদ হিলালী |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | কিশোরগঞ্জ | ১ মার্চ ১৯৪৩
মৃত্যু | ৩০ জুলাই ২০০৮ | (বয়স ৬৫)
মৃত্যুর কারণ | হৃদরোগ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
পেশা | অধ্যক্ষ |
যুগ | একবিংশ শতাব্দী |
রাজনৈতিক দল | বি এন পি |
সন্তান | ৫ ছেলে ও ২ মেয়ে[১] |
পিতা-মাতা |
|
জন্ম ও শিক্ষা জীবনসম্পাদনা
আতাউর রহমান খান ১৯৪৩ সালের ১ মার্চ কিশোরগঞ্জের ইটনা থানাধীন হাতকাবিলা গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আহমদ আলী খান ছিলেন আতহার আলীর প্রধান খলিফা এবং জামিয়া ইমদাদিয়া কিশোরগঞ্জের আজীবন প্রিন্সিপাল। পারিবারিকভাবেই আতাউর রহমান খান ধর্মীয় চেতনার ধারক ছিলেন। শুরু থেকেই তিনি কিশোরগঞ্জের জামিয়া ইমদাদিয়ায় লেখাপড়া করেন এবং এখান থেকেই তিনি দাওরায়ে হাদীস (মাষ্টার্স) সমাপ্ত করেন। মেধার অধিকারী হওয়ায় খান তার ছাত্রজীবনের প্রতিটি ধাপ অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হন।[৪]
কর্মজীবনসম্পাদনা
জামিয়া ইমদাদিয়ায় শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে তিনি তার কর্মজীবনের সূচনা করেন। বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নসের সদস্য, জাতীয় শরীয়াহ কাউন্সিলের সদস্য, জামিয়া ইমদাদিয়া কিশোরগঞ্জের সহ প্রধান শিক্ষক, জামিয়া ফারুকিয়া কিশোরগঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল, ঢাকার ফরিদাবাদ ও মিরপুর ৬নং মাদরাসার প্রিন্সিপাল।[১]
রাজনৈতিক জীবনসম্পাদনা
প্রাথমিক জীবনে তিনি নেজামে ইসলাম পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।[৫]। মাওলানা আতহার আলীর মৃত্যুর পর বিভিন্ন কারণে নেজামে ইসলাম পার্টি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়লে তিনি রাজনীতি থেকে অনেকটা দূরে সরে যান। ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির হয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে পুনরায় রাজনীতিতে সক্রিয় হন।[১]
ব্যক্তিগত জীবন:সম্পাদনা
তার স্ত্রীর নাম সাইয়্যিদা মুর্শিদা ই আমিনা তারমানী।তিনি পাঁচ সন্তানের পিতা। তারা হলেন উবায়দুর রহমান খান নদভী, ওয়ালিউর রহমান খান, খলীলুর রহমান, রেজওয়ানুর রহমান খান, মুহিব খান।
লেখনীসম্পাদনা
তার লেখা বইয়ের মধ্যে রয়েছে:
- তাফসিরে সূরা মুলক
- পুঁজিবাদ সমাজতন্ত্র ও ইসলাম
- ইসলামের অর্থবণ্টন ব্যবস্থা
- মুসলিম শিশু শিক্ষা
- মাওলানা আতহার আলী রহ. এর স্মৃতি
২৮ এপ্রিল ২০০৫ সালে ধর্ম চিন্তন ও ধর্মীয় দর্শন প্রচারণায় অবদানের জন্য রাজ্জাক সখিনা কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে তাকে পদক ও সম্মাননা দেয়া হয়
মৃত্যুসম্পাদনা
২০০৮ সালের ৩০ জুলাই রাত ২:৩০টায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকা আসার পথে মারা যান।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "খতীবে ইসলাম মাওলানা আতাউর রহমান খান (রহ.)"। islambikash.com। মার্চ ১৯, ২০১৪। ২০১৭-০৪-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-১৪।
- ↑ "মাওলানা আতাউর রহমান খান"। নয়া দিগন্ত। ৩১ জুলাই ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-১৪।
- ↑ "৫ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২০ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০১৭।
- ↑ Webmaster (২০০৮-০৪-০৪)। "রাজাকারদের তালিকা"। Bangladesh Genocide Archive (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-৩০।
গ্রন্থপঞ্জিসম্পাদনা
- হযরত মাওলানা আতাউর রহমান খান বিজ্ঞ আলেম ও সফল ইসলাম প্রচারক
- খালিদ হোসেন, আ ফ ম (২০২২)। নিভে যাওয়া দীপশিখা ১। বাংলাদেশ: আকাবিব স্টাডিজ অ্যান্ড পাবলিশিং হাউস। পৃষ্ঠা ২৭৩–২৭৮। আইএসবিএন 9789849591405।
- হাবিবুর রহমান, মুহাম্মদ (২০০৯)। আমরা যাদের উত্তরসূরী (শতাধিক পীর-মাশায়েখ ও উলামায়ে কেরাম এর জীবন ও কর্ম)। ঢাকা, বাংলাদেশ: আর কাউসার প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ৪২৬।
- হযরত মাওলানা আতাউর রহমান খান রাহ : কিছু গুণ, কিছু বৈশিষ্ট্য
- খালিদ হোসেন, আ ফ ম। "হযরত মাওলানা আতাউর রহমান খান (রহ.): জাতিসত্তার অন্যতম নির্মাতা"। মাসিক আত তাওহীদ। আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া।