আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়

আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্বপ্রান্তে শোলাকিয়ায় অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রিদের পড়াশোনার সুব্যবস্থা রয়েছে। এই অঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে প্রতিষ্ঠানটির বিশেষ অবদান রয়েছে।

বিদ্যালয়ের ইতিহাস সম্পাদনা

১৯১৬ সালে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকল্পে দানবীর মুন্সী আজিম উদ্দিন আহাম্মদ সাহেব নগদ ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা দান করে এবং উক্ত টাকায় তৎকালীন সময়ে ৪ একর ৬২ শতাংশ জমি বিদ্যালয়ের নামে ক্রয় করে উক্ত জমিতে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তৎকালীন সময়ে পিছিয়ে থাকা মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষার আলো বিতরণের জন্য মুন্সী আজিম উদ্দিন আহাম্মদ প্রথমে সাঁতারপুর তারপর অত্র বিদ্যালয়টি বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত করেন। প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক বাবু হীরণ চন্দ্র গোস্বামী। তিনি ০৩/২/১৬ থেকে ১৯/১২/১৬ পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত পালন করার পর বাবু বসন্ত কুমার চক্রবর্তী ২০/১২/১৬ থেকে ২৮/০৮/৩৩ পর্যন্ত বিদ্যালয়ের হাল ধরেন। তার সময় ১৯২২ সালে বিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র রেবতী মোহন বর্মণ অবিভক্ত বাংলায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ১ম স্থান অধিকার করেন। পরবর্তীতে অনেক চড়াই উৎরাইয়ের মধ্যে দিয়ে বিদ্যালয়টি চলতে থাকে। এই অবস্থায় বিদ্যালয়টির অগ্রগতি ব্যাহত হলে ০১/০১/১৯৫১ সালে ত্রাতার ভূমিকা নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন মোঃ মতিউর রহমান। যাঁর হাতের ছোঁয়ায় বিদ্যালয়টি প্রাণ ফিরে পেল নতুন করে। যাকে বলা হয় আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের আধুনিক রূপকার। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।[১]

ক্রীড়া সম্পাদনা

অত্র প্রতিষ্ঠানটি বিদ্যালয়ের জন্মলগ্ন থেকেই স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন ক্রীড়া ও খেলাধুলায় বিশেষ সুনাম অর্জন করে আসছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ক্রীড়াবিদ চুনিলাল গোস্বামী (ক্যাপ্টেন, মোহনবাগান ফুটবল টিম, কলকাতা), ফুটবলার আঃ রহমান চাঁন মিয়া।

সাংস্কৃতিক সম্পাদনা

সাংস্কৃতিক উন্নয়নে অত্র প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত সুপরিচিত। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অসংখ্যবার শ্রেষ্ঠত্বের সুনাম বয়ে এনেছে। তাদের মধ্যে নাট্যকার আব্দুল্লাহ আল মামুন, কবি আবিদ আজাদ, ভাষ্যকার নাজমুল হুদা, নৃত্য শিল্পী শুক্লা সরকার উল্লেখযোগ্য। বিগত ১৩ জানুয়ারী/২০০৮ ঢাকা বাংলা একাডেমীতে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও শালিস কেন্দ্রে আয়োজিত ‘‘প্রথম জাতীয় দেয়াল পত্রিকা-২০০৮’’ প্রতিযোগিতায় ‘চন্দ্রাবতী’ ও ২০১১ সালে ’’দেয়াল ভাঙ্গার গান’’ প্রথম স্থান অধিকার করে।[২][৩][৪]

মহান মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা সম্পাদনা

মহান মুক্তিযুদ্ধে উক্ত প্রতিষ্ঠানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। তৎকালীন মেজর এম. শফিউল্লাহর নেতৃত্বে অত্র প্রতিষ্ঠানে এক প্লাটুন সেনাবাহিনী নিয়ে অবস্থান করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে বহু লোকজনকে প্রশিক্ষণ দান করেন। অত্র প্রতিষ্ঠানের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক জনাব মরহুম মতিয়ুর রহমান এঁর পুত্র এবং অত্র প্রতিষ্ঠানের কৃতী ছাত্র আতিকুর রহমান ভৈরবে পাক বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন। অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক জনাব আফতাব উদ্দিন মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন।

কৃতি ছাত্র সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "সরকারি ওয়েবসাইট"। ১৬ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  2. কিশোরগঞ্জ নিউজ
  3. Daily Kalerkantho
  4. দৈনিক প্রথম আলো[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]