আওস ইবনে সালাবা আল আনসারী মুহাম্মাদের একজন প্রসিদ্ধ সাহাবা ছিলেন।[১] এই সাহাবাকে কেন্দ্র করে সূরা আত-তাওবাহের ৯৪ নং আয়াত নাযিল হয়।

জন্ম ও পরিচয় সম্পাদনা

আওস ইবনে সালাবা মদিনাতে জন্মগ্রহণ করেন এবং একজন আনসার সাহাবা ছিলেন।

কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ সম্পাদনা

হাকিম ইবনে আব্দুল্লাহর মতে, যেসকল সাহাবা নিশাপুর আগমন করেন তাদের মধ্যে আওস ইবনে সালাবা অন্যতম।[২]

তাবুক যুদ্ধে যোগদান না করা সম্পাদনা

তিনি একজন নিষ্ঠাবান সাহাবা হওয়া সত্ত্বেও তাবুকের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা হতে বিরত থাকেন। পরবর্তীতে তিনি নিজের কাজের জন্য অনুতপ্ত হন এবং আল্লাহ্‌ ও মুহাম্মাদের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এই যুদ্ধে যারা অংশগ্রহণ করা হতে বিরত থাকেন, আল্লাহ্‌ তাদের প্রতি ভৎসর্না নিন্দাসূচক আয়াত অবতীর্ণ করেন।[৩]

তুমি যখন তাদের কাছে ফিরে আসবে, তখন তারা তোমাদের নিকট ছল-ছুতা নিয়ে উপস্থিত হবে; তুমি বলো, ছল কারো না, আমি কখনো তোমাদের কথা শুনব না; আমাকে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করে দিয়েছেন। আর এখন তোমাদের কর্ম আল্লাহই দেখবেন এবং তাঁর রসূল। তারপর তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে সেই গোপন ও আগোপন বিষয়ে অবগত সত্তার নিকট। তিনিই তোমাদের বাতলে দেবেন যা তোমরা করছিলে। - আল কুরআন - (৯:৯৪) [১]

ক্ষমা প্রার্থনা করা ও আয়াত অবতীর্ণ সম্পাদনা

তখন আওস ইবনে সালাবা ভয় পেয়ে যান এবং অনুতপ্ত হন, এরপর পাপের মার্জনাস্বরূপ নিজেকে মদিনার মসজিদে নববীর একটি খুঁটির সাথে নিজেকে বেঁধে রাখেন এবং শপথ করেন মুহাম্মাদ যদি তার বাধন খুলে না দেন তাহলে সে নিজে থেকে এই বাধন খুলবেন না।[৪] মুহাম্মাদ তাবুক হতে প্রত্যাবর্তন করে মসজিদে প্রবেশ করিয়া অন্যদের সাথে তাকে খুঁটির সাথে বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান। এবং এই ঘটনার কারণ জানতে পেরে মুহাম্মাদ বলেন, আল্লাহর নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এই বাধন আমি খুলে দিতে পারবোনা। অবশেষে আল্লাহ্‌ তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়ে কুরআনে আয়াত নাযিল করেন।

আর কোন কোন লোক রয়েছে যারা নিজেদের পাপ স্বীকার করেছে, তারা মিশ্রিত করেছে একটি নেককাজ ও অন্য একটি বদকাজ। শীঘ্রই আল্লাহ হয়ত তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন। নিঃঃসন্দেহে আল্লাহ ক্ষমাশীল করুণাময়। - আল কুরআন - (৯:১০২) [২]

এরপর মুহাম্মাদ আওস ইবনে সালাবাসহ সকলকে বাঁধনমুক্ত করে দেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. ইসলামী বিশ্বকোষ ১ম খণ্ড- ১০৭ পৃষ্ঠা 
  2. ইবনুল আসির, [উসদুল গাবা,তেহরান তা.বি -১ম খণ্ড -১৪১] 
  3. ইবনে হাজার আসকালানি, [আল ইসাবা ফি তাময়িযিস সাহাবা, ১ম খন্ড -৮১], মিশর ১৩২৮ হিজরি 
  4. আয যামাখশারী,[ আশ কাশশাফ, বৈরুত ২য় খন্ড ৩০৬-০৭ ]