অরবিস ইন্টারন্যাশনাল
অরবিস ইন্টারন্যাশনাল হচ্ছে একটি অলাভজনক এবং বেসরকারি সংস্থা ( এনজিও) যা কিনা পৃথিবীব্যাপী চোখের আলো রক্ষার জন্যে নিবেদিত। [১] এর কর্মসূচিগুলো গুরুত্ব দেয় বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অন্ধত্ব মোচন এবং অন্ধত্ব সৃষ্টিকারী রোগসমূহের চিকিৎসা প্রদানের উপর হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে, জনস্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে, আইন ও আইনের অনুশাসন এবং স্থানীয় অংশীদারিত্ব তৈরির মাধ্যমে।[২] ১৯৮২ সন হতে , অরবিস ক্ষমতা উন্নয়ন প্রকল্প প্রায় ৩ লক্ষ ২৫ হাজার চক্ষুসেবাদানকারী ব্যক্তির দক্ষতা উন্নয়ন করেছে এবং পৃথিবীব্যাপী ৯২ টি দেশে ২ কোটি ৩৩ লক্ষের বেশি মানুষকে চক্ষু সেবা প্রদান করেছে।[৩]
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৮২ |
---|---|
প্রতিষ্ঠাতা | আলবার্ট লি উইয়েল্টশি, বেটশি ট্রিপ দে'ভেসি, থমাস নাইট, ডেভিড প্যাটন |
ধরন | অলাভজনক, অলাভজনক সরকারি সংস্থা |
আলোকপাত | প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্ব বিমোচন |
অবস্থান | |
এলাকাগত সেবা | বিশ্বব্যাপী সেবা প্রদানকারী (ডিসেম্বর ২০১২ পর্যন্ত প্রায় ৯২ টি দেশে কার্যক্রম পরিচালনা) |
মালিক | জন বব র্যাংক |
মূল ব্যক্তিত্ব | টেড হার্টলি, চেয়ারম্যান |
ওয়েবসাইট | orbis.org |
অরবিস যুক্তরাষ্ট্রের ৫০১(সি)(৩) - এর কর মওকুফযোগ্য অলাভজনক দাতব্য সংস্থার তালিকায় নিবন্ধিত। [৪] ইহা চ্যারিটি নেভিগেটর নামক দাতব্য সংস্থাগুলো নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ৪ তারকাপ্রাপ্ত একটি প্রতিষ্ঠান[৪] এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ করা গাইডস্টার সেবা সংস্থার একটি সোনালি অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত।[৫] এর প্রধান কার্যালয় অবস্থিত নিউইয়র্কে, এবং এর অন্যান্য কার্যালয়গুলো অবস্থিত টরন্টো, লন্ডন, ডাবলিন, হংকং, সিঙ্গাপুর, এবং কেপটাউনে।
অরবিসের কার্যক্রম গুরুত্ব দিয়ে থাকে প্রশিক্ষণ, দক্ষতা এবং স্বনির্ভরশীলতার উপর। কোন দেশে কাজ শুরুর পূর্বে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় এক বছরের মতো সময় ব্যায় করে অংশীদার হাসপাতাল এবং স্থানীয় সংস্থাগুলোর সাথে কর্মপরিকল্পনা তৈরি এবং সমন্বয় সাধনের জন্য, এবং স্থানীয় মেডিকেল দলগুলোর অবস্থা পর্যবেক্ষণের নিমিত্তে প্রাথমিক পরিদর্শন করার জন্য।[৬] এই উড়ন্ত হাসপাতালটি শুধু প্রশিক্ষণ প্রদানই করেনা, এছাড়াও এটি সরবরাহ করে চিকিৎসা সরঞ্জামাদি এবং শল্য-চিকিৎসার বা সার্জারির জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সরঞ্জাম যা নিশ্চিত করে উড়ন্ত হাসপাতালটি সেই স্থানীয় জায়গা ছেড়ে যাওয়ার পরেও স্থানীয় চিকিৎসা দল দলের কাছে যাতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম এর পর্যাপ্ত মজুদ থাকে।.[৭] যা নিশ্চিত করে, যেসব রোগীর চক্ষু চিকিৎসা দরকার তারা উড়ন্ত হাসপাতালটি চলে যাওয়ার পরেও যাতে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা পেতে থাকেন। সাইবারসাইট, অরবিস এর একটি দূরালাপনী চিকিৎসা ব্যবস্থা, যা কিনা উড়ন্ত হাসপাতালটি স্থানীয় এলাকা ছেড়ে যাবার পরেও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং পরামর্শ প্রদান সম্পর্ক রক্ষা করে ।[৮] অরবিস এর কর্মপদক্ষেপগুলো নির্ধারিত হয় স্থানীয় চাহিদার ওপর ভিত্তি করে। অরবিস স্থানীয় চিকিৎসকদের স্বল্প প্রযুক্তি এবং স্বল্প খরচে কিন্তু অত্যধিক মানসম্পন্ন এবং কার্যকরী উপায়ে চক্ষু চিকিৎসা প্রদানের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।[৯]
উড়ন্ত চক্ষু হাসপাতালটির পাশাপাশি, অরবিস বেশকিছু দেশে হাসপাতাল-ভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে এবং কাজ করে স্থানীয় চিকিৎসা গবেষণা এবং চিকিৎসাসেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যারা অন্ধত্ব প্রতিরোধে সেবা দিয়ে থাকে।
অরবিস , ডব্লিউ.এইচ.ও বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে ভিশন২০২০: " ২০২০ সাল নাগাদ প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্ব মোচনের জন্যে গঠনকৃত একটি বিশ্বব্যাপী মিলিত প্রচেষ্টা " উদ্যোগের একটি প্রতিষ্ঠাতা অংশীদার সদস্য।
ইতিহাস
সম্পাদনাঅরবিস ইন্টারন্যাশনাল প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮২ সনে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ( ইউএসএআইডি - দি ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ) এবং আরও কিছু বেসরকারি দাতা হতে অনুদান প্রাপ্তির মাধ্যমে। প্রথম উড়ন্ত হাসপাতালটি ছিল একটি ডগলাস ডিসি-৮২-১( এন-২২০-আরবি) যা ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স অরবিসকে দান করেছিল। এর প্রথম দুই বছর উড্ডয়নকালে অরবিস ডিসি-৮ ২৪ টি দেশ ভ্রমণ করে এবং কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করে যেখানে শল্য চিকিৎসা সংক্রান্ত কৌশল হাতে-কলমে শেখানোর ওপরে গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
১৯৮০র দশক হতে, ডিসি ৮ এর প্রতিস্থাপন যন্ত্রাংশগুলো পাওয়া অনেক দুষ্কর হয়ে যায় এবং খরচসাধ্য হিসেবে প্রতীয়মান হয়, এর ফলে এটা পরিষ্কার হয় যে একটি নতুন বৃহৎ বিমানের দরকার পড়বে অরবিসের কার্যক্রম চালানোর জন্য। বেসরকারি দাতাদের হতে প্রাপ্ত সহায়তায়, অরবিস তার বর্তমান ডিসি-১০ ক্রয় করে ১৯৯২ সালে। ডিসি ১০ এর ভেতরের জায়গা ডিসি ৮ এর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। দুই বছরের পুনঃস্থাপন এবং পূর্ণ পুনঃসংস্কারের পর ১৯৯৪ সালে একে কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং পুরনো ডিসি ৮ টি বেইজিংয়ের দাতানশাং জাদুঘরে প্রদান করা হয়। সেই গ্রীষ্মে, উড়ন্ত হাসপাতালটি তার প্রথম উদ্বোধনী কার্যক্রম শুরু করে চীনের বেইজিংয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরুর মাধ্যমে।
১৯৯৮ সনে, অরবিস উন্নয়নশীল বিশ্বের স্থানীয় অংশীদারদেরকে শক্তিশালী করার একটি নতুন কৌশল গ্রহণ করে যার উদ্দেশ্য ছিলো পুরোটা সময় জুড়ে চলমান দেশ ভিত্তিক কাজের মাধ্যমে অন্ধত্ব মোচন করা। এই কার্যক্রমগুলো গঠন করা হয় বিভিন্ন চক্ষু রোগ আক্রান্ত সম্প্রদায় এবং স্থানীয় চক্ষু সেবা প্রদানকারীদের প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে।অরবিস বছরজুড়ে চক্রাকারে কাজ করার জন্য প্রথম পাঁচটি দেশ নির্ধারিত করে দেশগুলোর প্রয়োজনের ( অন্ধত্বের হাড়ের ওপর) , কাজের সুযোগ ( স্থানীয় অবকাঠামো এবং যোগানের উপর ভিত্তি করে) , নিরাপত্তা এবং সেই দেশে কাজের স্থিতিশীলতার ওপর ভিত্তি করে।
অরবিস তার প্রথম স্থায়ী দেশভিত্তিক কর্মকাণ্ড শুরু করে ইথিওপিয়াতে। এরপর পরেই বাংলাদেশ, চীন, ভারত, ভিয়েতনামেও এই দেশ ভিত্তিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়ে যায়। ২০১০ সালে অরবিস দক্ষিণ আফ্রিকাতে দেশ ভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা দপ্তর প্রতিষ্ঠা করে। এই দেশগুলোতে স্থায়ী দপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হয় যেগুলো স্থানীয় কর্মীদলের দ্বারা পরিচালিত হতো, এবং সেই কর্মীদলগুলো কিছু বহু বাৎসরিক প্রকল্প প্রণয়ন করেছিলো যা কিনা বিশেষত গ্রামীণ এবং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর চক্ষুসেবা গ্রহণে সহায়ক হবে। স্থায়ী নির্বাহী দপ্তরের পাশাপাশি অরবিস আরো দীর্ঘমেয়াদী কিছু প্রকল্প পরিচালনা করছে ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ এবং পাশাপাশি কিছু দেশে যেমন নেপাল,জাম্বিয়া এবং বুর্কিনা ফাসোতে।
এপ্রিল ৭, ২০০৮ এ অরবিস জানায় এটি তার ডিসি-১০ উড়ন্ত হাসপাতালটি পরিবর্তিত করতে চলেছে একটি ত্রিশতম শ্রেণির ডিসি-১০ দ্বারা। ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, ফেডেক্স কোম্পানির সহায়তায় অরবিসকে উড়োজাহাজ দান করে যাচ্ছে। ২ মিলিয়ন বা ২০ লক্ষ ডলারের অনুদান গঠিত হয় বিমানটির আনুমানিক মূল্যের উপর ভিত্তি করে যা কিনা ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স এবং ফেডেক্স সমভাবে বহন করেছিল।
আগস্ট ৮, ২০১১ তে, ফেডেক্স ঘোষণা করে যে ইহা অরবিসকে এর নিজস্ব ত্রিশতম সিরিজের একটি ডিসি-১০-৩০ এস দান করবে যা নতুন এমডি-১০-৩০এফ এর অনুকরণে উন্নয়ন লাভ করেছে, যা কিনা অরবিসের বর্তমান ডিসি- ১০-৩০এফের স্থান নেবে।
নতুন এমডি -১০ একটি সম্পূর্ণ নতুনভাবে প্রস্তুত হাসপাতাল কক্ষসংবলিত ছিলো যা কিনা এই প্রথম একটি বিমানে সংযুক্ত হতে যাচ্ছিল।[১০]
২০১২ তে, অরবিস তার বিশ্বব্যাপী চোখের আলো রক্ষার ৩০তম জয়ন্তী পালন করে।
অরবিস উড়ন্ত চক্ষু হাসপাতাল
সম্পাদনাঅরবিস তার "উড়ন্ত হাসপাতাল ", এমডি-১০ ( ডিসি-১০) বিমানে স্থাপিত একটি হাসপাতাল এবং শিক্ষা কার্যক্রম কেন্দ্রের জন্য সুপরিচিত। এই উড়ন্ত হাসপাতালটি উন্নয়নশীল বিশ্ব যেখানে খুব বেশি পেশাগত উন্নতির সুযোগ নেই সেইসব দেশে ডাক্তার এবং সেবিকাদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে। বিমানটির অভ্যন্তরে রয়েছে শ্রেণিকক্ষ, শল্যচিকিৎসা কেন্দ্র এবং লেজার রশ্মি বিকিরণ কক্ষ এবং এখানে স্থানীয় চিকিৎসকগণ সরাসরিভাবে শল্যচিকিৎসা বা সার্জারি দেখতে এবং নিজেরাও যন্ত্র এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে চর্চা করতে সক্ষম হন।[১১] ত্রিমাত্রিক চিত্র এবং প্রচার ব্যবস্থা স্থানীয় চক্ষু চিকিৎসকগণ শল্যচিকিৎসকদের চোখেই সরাসরি চক্ষু চিকিৎসা বা সার্জারি দেখতে পারেন।[৮] এই শল্যচিকিৎসাগুলো বিমানের বাইরেও বিভিন্ন জায়গায় প্রচার করা যায়, যা কিনা হতে পারে একটি স্থানীয় হাসপাতাল কিংবা বিশ্বের যে কোন প্রান্তে অবস্থিত কোন হাসপাতাল। অংশগ্রহণকারীরা দ্বিমুখী শব্দ এবং চিত্রব্যবস্থার মাধ্যমে যেকোন প্রশ্ন করতে পারেন।[১২] স্বেচ্ছাসেবী পাইলট বা বিমানচালকগণ তাদের সময় এবং দক্ষতা উৎসর্গ করে থাকেন এই হাসপাতালটিকে এর বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার জায়গায় উড়িয়ে নিয়ে যেতে।
জুন ২০১৬ এ , অরবিস তার তৃতীয় প্রজন্মের উড়ন্ত চক্ষু হাসপাতালটির সূচনা করে। এই হাসপাতালটি ফেডেক্স এর দানকৃত একটি ম্যাকডোনাল ডগলাস ডিসি-১০ কে পরিবর্তিত করে তৈরি হয় এবং যা কিনা এর পূর্বসূরি বিমানটি হতে প্রায় দ্বিগুণ দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম। এর স্থলে স্থাপিত যে কোন সাধারণ হাসপাতালের মতই তৈরি এবং একটি অতিরিক্ত শক্তি প্রদান করতে সক্ষম তড়িৎ উৎপাদী জেনারেটর এবং প্রাক-সতর্কতা পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার মতো বেশকিছু নিরাপত্তা ব্যবস্থাসংবলিত।[১৩] হাসপাতালটিতে নিজস্ব পানি পরিশোধন এবং বায়ু শোধন ব্যবস্থাও বিদ্যমান। [১৪] এর মধ্যে একটি ৪৬ টি আসনবিশিষ্ট শ্রেণিকক্ষ, একটি জীবাণুমুক্তকরণ কক্ষ, একটি অপারেশন বা শল্য-চিকিৎসা কক্ষ রয়েছে যা ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে এবং এটি সরাসরি শল্যচিকিৎসা কার্যক্রম প্রচার করতে সক্ষম যা স্থানীয় অংশগ্রহণকারীদের শল্যচিকিৎসা চলাকালীন চিকিৎসা কর্মকাণ্ড অবলোকন করতে সহায়তা করে।[১৫]
বিমানটির একটি ভার্চুয়াল বা অবাস্তবদৃশ্য ভ্রমণ ব্যবস্থা তৈরি করা হয় যাতে করে ব্যবহারকারীরা এই বিমানটির বিভিন্ন অংশ যেমন শল্যচিকিৎসা কক্ষ এবং মালামাল রক্ষণাবেক্ষণ স্থান ইত্যাদি দেখতে পারেন।
অরবিস তার আগের ডিসি-১০-১০ টি, যা কিনা এই ধরনের বিমান গুলোর মধ্যে সবচাইতে পুরনো একটি উদাহরণ, এই বিমানটিকে অরবিস পিমা বিমান এবং মহাশূন্য জাদুঘরে দান করে। ইহা ২০১৬ সালে ডেভিস মন্থান বিমানঘাঁটিতে এসে পৌঁছায়[১৬] এবং বর্তমানে এটি সারাইকার্যের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
দেশভিত্তিক কার্যক্রম
সম্পাদনাউড়ন্ত হাসপাতালটির পাশাপাশি, অরবিস দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন দেশে দেশ-ভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এবং স্থানীয় সরকার এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠান সাথে কাজ করে আসছে এবং স্থানীয় সরকার এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে চক্ষু সেবাকে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য উৎসাহ দিচ্ছে।[৯] ইহা কাজ করছে স্থানীয় বিভিন্ন ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে এবং ২৯ টি দেশ হতে আগত একটি চিকিৎসা দলের তত্বাবধায়ণ করছে যা কিনা চারশোরও বেশি মেডিকেল স্বেচ্ছাসেবীর সমন্বয়ে গঠিত যারা স্থানীয় অংশীদারদেরকে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করে।[২]
প্রতিটি দেশে, অরবিস স্থানীয় অংশীদারী সংস্থার সাথে কাজ করে তাদেরকে দীর্ঘমেয়াদে উন্নত, স্বল্পব্যয়ী এবং টেকসই চক্ষু সেবা প্রদান করার জন্য । কার্যক্রমগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশেষায়িত হাসপাতাল, চক্ষু ব্যাংক প্রতিষ্ঠা এবং চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী ও রোগীদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং প্রতিরোধ ও চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম।[১৭]
কেবলমাত্র ২০১৫ সালেই, উড়ন্ত হাসপাতালে অথবা এর অংশীদারি সংস্থাগুলোতে ৩০০০০ এরো বেশি মেডিকেল পেশাজীবী কে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় এবং ২২ লাখেরও বেশি রোগীর চক্ষু পরীক্ষা করা হয়।[১৩]
সাইবারসাইট কার্যক্রম
সম্পাদনাসাইবারসাইট হলো অরবিসের তৈরী অত্যাধুনিক একটি দূরালাপনী চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা যা কিনা স্বল্প এবং মাঝারি আয়ের দেশগুলোর চিকিৎসাসেবা প্রদানকারীদেরকে সম্পূর্ণ বিনা খরচে বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করতে সহায়তা করে । চিকিৎসক-শিক্ষকরা স্থানীয় চক্ষু সেবা প্রদানকারীদের সাথে বিভিন্ন রোগের ব্যাপারে তাদের মতামত প্রদান করেন এবং তাদের চিকিৎসা সম্পর্কিত জ্ঞান ও বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ বিনিময় করেন । প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০০০ ই-শ্রেণি বা তড়িৎ-শ্রেণি পাঠদান সম্পন্ন হয়েছে।[১৮] ইহা দূরবর্তী শিক্ষা এবং আলাপ-আলোচনায় সহায়তা করে এবং এটা নিশ্চিত করে যে বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা অঞ্চল হতে অরবিস এর উড়ন্ত হাসপাতাল চলে যাওয়ার পরেও যাতে স্থানীয় চিকিৎসা দল তাদের থেকে সাহায্য সুবিধাপ্রাপ্ত হতে থাকে।
সাইবার সাইট প্রতিনিয়ত সরাসরি শিক্ষাদান কর্মকাণ্ড ও একটি গ্রন্থাগারের সেবাও প্রদান করে যাতে বিভিন্ন চিকিৎসা শিক্ষা সরঞ্জাম রয়েছে এবং এর ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা গ্রহণ করে এবং সনদপত্র প্রদান করে।[১৯]
সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখে অরবিস কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করা একটি প্রতিষ্ঠান ভিজুয়াল্টিক্স এর সাথে নতুন একটি চুক্তির ঘোষণা দেয় যাতে করে তাদের স্বয়ংক্রিয় চিত্রব্যবস্থা সাইবার সাইটের সাথে যুক্ত করা যায়। সাইবার সাইটের পেগাসাস কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা যেকোনো সাধারণ রেটিনা ক্যামেরা বা যেকোনো স্মার্টফোন দিয়ে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে চোখের পিছনের দিক পরীক্ষা করতে সহায়তা করে । স্বল্প সুবিধাসংবলিত দেশগুলোর চিকিৎসকগণ অরবিসের এই সেবাটির সর্বপ্রথম ব্যবহারকারী হবেন যাতে করে তারা চোখের দৃষ্টির জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন সমস্যা আগে থেকেই চিহ্নিত করতে পারেন এবং যাতে কিছু রোগ যেমন ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগের সমস্যাজনিত রেটিনার রোগ, বয়সজনিত কারণে চোখের ম্যাকুলার স্তরের ক্ষয় এবং চোখের ভিতরের চাপ বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা প্রাথমিক পর্যায়েই নির্ণয় করতে করতে পারেন এবং যাতে খুব দ্রুত অরবিসের বিশেষজ্ঞ দলের কাছ থেকে দ্বিতীয় বিশেষজ্ঞ মতামত পেতে পারেন।[২০]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Putty, Electric (২০১৮-১০-২২)। "CEO, Orbis International – John "Bob" Ranck"। Orbis (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-১০-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-২২।
- ↑ ক খ "Orbis International | International Agency for the Prevention of Blindness"। Iapb.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৩।
- ↑ "Archived copy"। ২০১৩-০৮-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৮-০৬।
- ↑ ক খ "Rating for ORBIS International"। Charity Navigator। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১২-১৪।
- ↑ "Project Orbis International, Inc. - GuideStar Profile"। Guidestar.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৩।
- ↑ "High-tech 'Flying Eye Hospital' visits Silicon Valley"। Mercurynews.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৩।
- ↑ "Eye in the Sky: FedEx, Orbis Debut Third-Gen Flying Eye Hospital"। Memphisdailynews.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৩।
- ↑ ক খ UK, Orbis। "Cindy Crawford Unveils Orbis's New Plane to Fight Blindness /PR Newswire UK/"। Prnewswire.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৩।
- ↑ ক খ "With Its Flying Hospital, This Group Is Saving The World From Blindness"। Fastcomapny.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৭-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৩।
- ↑ "News Channel | Homepage"। Flightglobal.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৩।
- ↑ "Doctors on the move: Getting healthcare to far-flung places" (ইংরেজি ভাষায়)। BBC News। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৩।
- ↑ "ORBIS Flying Eye Hospital | The Center for Health Market Innovations"। Healthmarketinnovations.org। ২০১৯-০৮-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৩।
- ↑ ক খ "Flying Eye Hospital focuses on teaching physicians in other countries"। Sacbee.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৩।
- ↑ "Orbis International's Flying Eye Hospital trains UC Davis specialists - Sacramento Business Journal"। Bizjournals.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৩।
- ↑ "Orbis Sees Opportunity with Third-Generation Flying Eye Hospital"। APEX | Airline Passenger Experience। ২০১৬-০৬-০৩। ২০১৬-০৮-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৩।
- ↑ Wilson, William। "Pima Space Museum to get DC-10 that served as flying eye hospital"। Arizona Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৭।
- ↑ "Orbis"। Orbis। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১২-১৪।
- ↑ "Cyber-Sight | The Center for Health Market Innovations"। Healthmarketinnovations.org। ২০২০-১০-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৩।
- ↑ "ORBIS Program: Cyber-sight"। V2020la.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-২৩।
- ↑ "Orbis & Visulytix collaborate on new AI technology"। Orbis.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-৩১।
আরও পড়ুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- দাপ্তরিক ওয়েবসাইট
- The Orbis Flying Eye Hospital was the subject of a short Al Jazeera Documentary. Part 1 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ আগস্ট ২০১৯ তারিখে, Part 2 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ আগস্ট ২০১৯ তারিখে.