অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় [১] হলেন একজন বাঙালি বিচারপতি। বর্তমানে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি ছিলেন। এখন তিনি বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ও ভারতীয় জনতা পার্টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত আছেন।[২][৩]
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় | |
|---|---|
| কলকাতা হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি | |
| কাজের মেয়াদ ৩০ জুলাই ২০২০ – ৫ মার্চ ২০২৪ | |
| কলকাতা হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি | |
| কাজের মেয়াদ মে ২০১৮ – জুলাই ২০২০ | |
| ব্যক্তিগত বিবরণ | |
| জন্ম | ২০ আগস্ট ১৯৬২ কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত |
| জাতীয়তা | ভারতীয় |
| রাজনৈতিক দল | ভারতীয় জনতা পার্টি |
| প্রাক্তন শিক্ষার্থী | হাজরা ল কলেজ |
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিদ্যালয়-শিক্ষা কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশন (মেইন) শাখায়। এরপর স্নাতক হওয়ার পর পাঁচ বছর আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন।
ভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪ চলাকালীন তিনি তমলুক লোকসভা কেন্দ্রতে সাংসদ পদের জন্য প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে ছিলেন।[৪]
কর্মজীবন সম্পাদনা
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ সিভিল সার্ভিসের "এ"-গ্রেডের অফিসার হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। কিন্তু সরকারি স্তরে দুর্নীতির কারণে চাকরি ছেড়ে দেন। [৫] এরপর তিনি দীর্ঘ দশ বৎসর আইনজীবী হিসাবে কাজ করেন। পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইন সংক্রান্ত বিষয় দেখাশোনা, ন্যাশনাল ইন্সিওরেন্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলাও লড়েছিলেন তিনি। ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ২ মে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। [৬] এবং ২০২০ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুলাই থেকে হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারক হন [৭]
উল্লেখযোগ্য রায় সম্পাদনা
দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি একের পর এক উল্লেখযোগ্য রায় দিতে থাকেন। তিনি ৭৬ বৎসর বয়সের স্কুল শিক্ষিকার দীর্ঘ পঁচিশ বৎসরের বকেয়া বেতন পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা, ক্যানসারে আক্রান্ত শিক্ষিকার ১২ দিনের বেতন অন্যায়ভাবে কেটে নেওয়ায় প্রধান শিক্ষকের পদ কেড়ে নিয়ে, তার বকেয়া নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়ে বিচার ব্যবস্থায় বিচারকের মানবিক মুখের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
২০২১ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কথিত অসঙ্গতির জন্য ওয়েস্ট বেঙ্গল স্কুল সার্ভিস কমিশনের (ডব্লিউবিএসএসসি) বিরুদ্ধে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের তথা (সিবিআই) কে একাধিক তদন্তের নির্দেশনা দিয়েছেন। [৮] [৯] তিনি স্কুল সার্ভিস কমিশনের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বহু আদেশ পাশ করেন যার ফলে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টে কিছু রাজনৈতিক সমস্যা দেখা দেয়। [১০] [১১] গঙ্গোপাধ্যায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের কথিত অনিয়মের ক্ষেত্রে ডিভিশন বেঞ্চের পদক্ষেপের বিষয়ে ভারতের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ চেয়ে একটি চিঠি লিখেছিলেন। [১২] [১৩] [১৪] [১৫] ২০২২ খ্রিস্টাব্দের ১৩ এপ্রিল কলকাতার বার অ্যাসোসিয়েশন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের আদালত বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয় [১৬] শাসক রাজনৈতিক দলও তার আদালতের বাইরে প্রতিবাদ করে। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। [১৭] [১৮] ১৮ মে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অভিযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির তদন্তের জন্য CBI-এর সামনে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। [১৯] [২০] কোন চাপের মধ্যেও তাকে প্রতিহত করা যায়নি। যথাযথ নির্দেশে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্তকারী সংস্থার অনুসন্ধান চলতে থাকে।
বর্তমানে, অবসর গ্রহণের আগে পপর্যন্ত অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় লেবার ও লেবার ল সংক্রান্ত মামলাগুলির বিচারে ন্যস্ত ছিলেন। এখন উনি বিজেপির প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে।
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ "Calcutta Hight Court | Department of Justice" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২০।
- ↑ Bureau, ABP News (২০২৪-০৩-০৭)। "Former Calcutta High Court Judge Abhijit Gangopadhyay Joins BJP"। news.abplive.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৭।
- ↑ "'Will join BJP…party will decide if I will contest (Lok Sabha polls) or not': Former Calcutta HC judge Abhijit Gangopadhyay"। The Indian Express (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-০৩-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৫।
- ↑ সংবাদদাতা, আনন্দবাজার অনলাইন। "সব পরিকল্পনা ঠিক মতো এগোলে তমলুক লোকসভা থেকে বিজেপির টিকিটেই প্রার্থী বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়"। www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৪।
- ↑ আনন্দ, ওয়েব ডেস্ক, এবিপি (২০২২-০৫-২১)। "WBCS অফিসার হিসেবে শুরু, তারপর কীভাবে এগিয়েছে বিচারপতির কেরিয়ার"। bengali.abplive.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২৩।
- ↑ "SC Collegium Proposes To Appoint Additional Judge Of Calcutta HC, Justice Abhijit Gangopadhyay, As Permanent [Read Resolution]"। www.livelaw.in (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৭-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২০।
- ↑ "Calcutta High Court – Judges"। www.calcuttahighcourt.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-১৩।
- ↑ "Explained: What is the West Bengal School Service Commission recruitment scam?"। The Indian Express (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৪-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-১৫।
- ↑ Singh, Shiv Sahay (২০২২-০৪-০৪)। "West Bengal SSC recruitment scam roils Calcutta HC"। The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২০।
- ↑ "Kolkata High Court: নজিরবিহীন! হাইকোর্টে প্রথমবার, বিচারপতির সমর্থনে পড়ল পোস্টার"। Zee24Ghanta.com। ২০২২-০৪-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২০।
- ↑ "Calcutta High Court stays CBI probe in School Service Commission hiring case"। www.telegraphindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২০।
- ↑ Anupam Mishra Suryagni Roy (এপ্রিল ১৩, ২০২২)। (ইংরেজি ভাষায়) https://www.indiatoday.in/india/story/tmc-protest-justice-abhijit-gangopadhyay-calcutta-hc-1936952-2022-04-13। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২০।
|শিরোনাম=অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - ↑ "Abhijit Gangopadhyay: 'highest Degree Of Double Standard'"। The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। মার্চ ৩১, ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২০।
- ↑ সংবাদদাতা, নিজস্ব। "Abhijeet Ganguly: মাথায় বন্দুক ঠেকিয়েও আমাকে রোখা যাবে না, বললেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়"। www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২০।
- ↑ Rittick Mondal (মার্চ ৩০, ২০২২)। (ইংরেজি ভাষায়) https://www.indiatoday.in/india/story/tying-hands-of-single-judge-calcutta-hc-s-justice-abhijit-gangopadhyay-seeks-cji-s-intervention-1931638-2022-03-30। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২০।
|শিরোনাম=অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - ↑ "gangopadhyay: Judge Boycott Call Spurs Ruckus In Courtroom"। The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। এপ্রিল ১৪, ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২০।
- ↑ Suryam, Shagun। "Trinamool lawyers protest outside courtroom of Calcutta High Court's Justice Abhijit Gangopadhyay; Governor writes to CM"। Bar and Bench (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-১৫।
- ↑ "Lawyers protest in Calcutta HC; Dhankhar seeks meeting with CM Mamata"। The New Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-২০।
- ↑ "Teachers recruitment 'scam': TMC minister Partha Chatterjee appears before CBI after failing to get relief from HC"। The Indian Express (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৫-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-১৯।
- ↑ Singh, Shiv Sahay (২০২২-০৫-১৮)। "West Bengal Minister Partha Chatterjee appears before CBI in recruitment scam"। The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-১৯।