অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য
অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য (৫ এপ্রিল ১৮৮২ - ১০ মে ১৯৬২) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের বিপ্লবী। বাংলায় বিপ্লবের প্রাথমিক পর্বে অবিনাশ ছিলেন প্রথম সারির নেতা। চব্বিশ পরগনার আরাবেলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন, তিনি তাঁর গ্রামের স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং তারপরে ১৯০২ সালে কলকাতা মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশনে স্থানান্তরিত হন।[১]
অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য | |
---|---|
জন্ম | ৫ এপ্রিল, ১৮৮২ |
মৃত্যু | ১০ মে, ১৯৬২ |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৬৪ সাল পর্যন্ত) ভারত |
পেশা | রাজনীতিবিদ |
পরিচিতির কারণ | ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী |
রাজনৈতিক দল | অনুশীলন সমিতি |
আন্দোলন | ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন, |
পিতা-মাতা |
|
জন্ম
সম্পাদনাঅবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য ১৮৮২ সালে আরবেলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম উমেশচন্দ্র ভট্টাচার্য। বিপ্লবী সহকর্মীদের মধ্যে তিনি 'অভিদা' নামে পরিচিত ছিলেন। সম্ভবত এ কারণেই কবি সবচেয়ে জনপ্রিয় লোকগীতি 'অভিরামের দ্বীপ চলনমা, ক্ষুদিরামের ফানসি' অন্তর্ভুক্ত করেন।[২]
বিপ্লবী জীবন
সম্পাদনাকলকাতার ৩২ নং মুরারিপুকুরের বাগানবাড়িতে একটি বোমা তৈরির স্থান ছিলো। সেই মুরারিপুকুরের ঘটনায় আলিপুর বোমা মামলার আসামি হিসেবে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ১৯০৯ সনের মে মাসে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। পরে দণ্ডাদেশ হ্রাস পাওয়ায় ১৯১৫ সনের মে মাসে মুক্তি পান। ১৯২০ সনে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্বরাজ্য পার্টিতে যোগ দেন ও নারায়ণ পত্রিকা পরিচালনার ভার গ্রহণ করেন। এছাড়াও বিজলী, আত্মশক্তি ও ক্যালকাটা মিউনিসিপ্যাল গেজেট প্রভৃতি পত্রিকার সংগেও যুক্ত ছিলেন। তার রচিত গ্রন্থ হচ্ছে রণসজ্জায় জার্মানি, স্বরাজসাধনা, মুক্তিসাধনা, জার্মানি প্রবাসীপত্র, ইউরোপে ভারতীয় বিপ্লবের সাধনা প্রভৃতি।[৩]
আলিপুর বোমা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিগণ
সম্পাদনা৩০ এপ্রিল ১৯০৮-এ মুজাফফরপুর, বিহারে রাত সাড়ে আটটায় ইওরোপিয়ান ক্লাবের সামনে বোমা ছুড়ে তিনজনকে হত্যা করেন ক্ষুদিরাম বসু। সেই ঘটনার পর আলিপুর বোমা মামলা শুরু হয়। ১৯০৯ সালের ৬ মে আলিপুর বোমা মামলার রায় দেয়া হয়। রায়ে বিচারক বারীন্দ্রকুমার ঘোষ ও উল্লাসকর দত্তকে মৃত্যুদণ্ড দেন। উপেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমচন্দ্র কানুনগো, বিভূতিভূষণ সরকার, বীরেন্দ্র সেন, সুধীর ঘোষ, ইন্দ্রনাথ নন্দী, অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য, শৈলেন্দ্রনাথ বসু, হৃষিকেশ কাঞ্জিলাল, ইন্দুভূষণ রায়ের, দ্বীপান্তর দণ্ড হয়। পরেশ মৌলিক, শিশির ঘোষ, নিরাপদ রায় ১০ বছর দ্বীপান্তর দণ্ড, অশোক নন্দী, বালকৃষ্ণ হরিকোণে, শিশির কুমার সেন ৭ বছর দ্বীপান্তর দণ্ড এবং কৃষ্ণজীবন সান্যাল ১ বছর কারাদণ্ড প্রাপ্ত হন। আপিলে বারীন্দ্রকুমার ঘোষ ও উল্লাসকর দত্তের মৃত্যুদণ্ড রহিত হয় এবং তার বদলে যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর দণ্ড হয়। অরবিন্দ ঘোষ মুক্তি পান এবং অনেকের সাজা হ্রাস করা হয়।[৪]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ https://cmsadmin.amritmahotsav.nic.in/district-reopsitory-detail.htm?1269
- ↑ https://cmsadmin.amritmahotsav.nic.in/district-reopsitory-detail.htm?5395
- ↑ সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, দ্বিতীয় মুদ্রণ, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৩১, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
- ↑ ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, জেলে ত্রিশ বছর, পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ধ্রুপদ সাহিত্যাঙ্গণ, ঢাকা, ঢাকা বইমেলা ২০০৪, পৃষ্ঠা ৭৯।