অবরোধ-বাসিনী
অবরোধ-বাসিনী ভারতবর্ষের অগ্রণী নারীবাদী লেখিকা রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন রচিত একটি গ্রন্থ। বেগম রোকেয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকীর্তি হিসেবে বিবেচিত গ্রন্থটি ১৯৩১ সালে প্রকাশিত হয়। এতে তৎকালীন ভারতবর্ষীয় নারীদের বিশেষ করে মুসলমান ঘরের নারীদের সমাজের অবরোধপ্রথার জন্য যে অসুবিধায় পড়তে হত তা বর্ণিত হয়েছে। মোট ৪৭ ঘটনাকে অনুগল্প আকারে লেখে বইটি তৈরি করা হয়েছে। ঘটনাগুলো সব বাস্তব জীবন থেকে নেওয়া। এ বইয়ের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া গল্পাকারে পর্দা প্রথার দরুন নারীদের দুর্ভোগ সবার কাছে উপস্থাপন করেছেন।
![]() অবরোধ বাসিনী বইয়ের প্রচ্ছদ | |
লেখক | রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন |
---|---|
দেশ | ব্রিটিশ ভারত |
ভাষা | বাংলা |
ধরন | ছোটগল্প |
প্রকাশনার তারিখ | ১৯৩১ |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ২৫ |
পাঠ্য | অবরোধ বাসিনী উইকিসংকলন |
গ্রন্থসমীক্ষা সম্পাদনা
পশ্চিম দেশের এক হিন্দু বধূ তাহার শাশুড়ী ও স্বামীর সহিত গঙ্গাস্নানে গিয়াছিল। স্নান শেষ করিয়া ফিরিবার সময় তাহার শ্বাশুড়ী ও স্বামীকে ভীড়ের মধ্যে দেখিতে পাইল না। অবশেষে সে এক ভদ্রলোকের পিছু পিছু চলিল। কতক্ষণ পরে পুলিশের হল্লা।-সেই ভদ্রলোককে ধরিয়া কনষ্টেবল বলে, “তুমি অমুকের বউ ভাগাইয়া লইয়া যাইতেছ।” তিনি আচস্বিতে ফিরিয়া দেখেন, আরে! এ কাহার বউ পিছন হইতে তাঁহার কাছার খুঁটি ধরিয়া আসিতেছে। প্রশ্ন করায় বধূ বলিল, সে সর্ব্বক্ষণ মাথায় ঘোমটা দিয়া থাকে-নিজের স্বামীকে সে কখনও ভাল করিয়া দেখে নাই। স্বামীর পরিধানে হলদে পাড়ের ধূতি ছিল, তাহাই সে দেখিয়াছে। এই ভদ্রলোকের ধূতির পাড় হলদে দেখিয়া সে তাঁহার সঙ্গ লইয়াছে!
—অবরোধ-বাসিনী (১৯৩১)
আবদুল কাদির লিখেছেন, "তাঁর [রোকেয়ার] অবরোধ-বাসিনী গ্রন্থে ৪৭টি অবরোধ-সম্পর্কিত দুর্ঘটনার উপাদেয় কাহিনী আছে - অতুলনীয় শ্লেষ ও লিপিকুশলতার সঙ্গে তিনি সেগুলি বর্ণনা করিয়াছেন।"[১]
আবদুল করিম নামে একজন লিখেছেন, "অবরোধ-বাসিনী লিখিয়া লেখিকা আমাদের সমাজের চিন্তা-ধারার আর একটা দিক খুলিয়া দিয়াছেন। অনেকে অনেক প্রকার ইতিহাস লিখিয়া যশস্বী হইয়াছেন; কিন্তু পাক-ভারতের অবরোধ-বাসিনীর লাঞ্ছনার ইতিহাস ইতিপূর্ব্বে আর কেহ লিখেন নাই।"[২]