অনিলকুমার দাস (বিপ্লবী)

ব্রিটিশ বিরোধী বাঙালি বিপ্লবী

অনিলকুমার দাস ( ১৮ জুন, ১৯০৬ ― ১৭ জুন, ১৯৩২) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন বিপ্লবী, যিনি ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে ব্রিটিশ শাসকের অমানুষিক অত্যাচারে মারা যান।[১]

বিপ্লবী

অনিলকুমার দাস
জন্ম( ১৯০৬-০৬-১৮)১৮ জুন ১৯০৬
মৃত্যু১৭ জুন ১৯৩২(1932-06-17) (বয়স ২৫)
ঢাকা সেন্ট্রাল জেল
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রতিষ্ঠানসোশ্যাল ওয়েলফেয়ার লিগ (শ্রীসংঘ)
আন্দোলনব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন

জন্ম ও শিক্ষা সম্পাদনা

অনিলকুমার দাসের জন্ম ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ১৮ জুন বৃটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতায় পিতার কর্মস্থলে। পৈতৃক নিবাস ছিল অধুনা বাংলাদেশের ঢাকার পাইকপাড়ায়। পিতা ছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মচারী নিবারণচন্দ্র দাস। মাতা কিরণবালা দেবী। তাদের তিন পুত্র (অন্য দুজন- সুনীল দাস ও পরিমল দাস) ও এক কন্যার (লতিকা সেন) মধ্যে অনিলকুমার ছিলেন সবার জ্যেষ্ঠ। এঁরা সকলেই ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িত ছিলেন। অনিলকুমাররে পড়াশোনা শুরু হয় ঢাকার লব্ধপ্রতিষ্ঠ ব্যবহারজীবি পিতৃব্য প্রবোধচন্দ্রের অভিভাবকত্বে। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে তার ছাত্রজীবন শুরু হয় আর সেসময় থেকেই তিনি বিপ্লবী কর্মধারার সঙ্গে পরিচিত হন। ঢাকার পাইকপাড়ায় যুবকদল- 'শ্রীসংঘ'-এর পতাকাতলে বিপ্লবী সাধনায় সমবেত হন। এই যুবকদলে বিশিষ্ট ছাত্রনেতা সুবোধ মজুমদার (ডাকনাম মানা) (১৯০৭-১৯৩৯) অন্যতম অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন। ছাত্রবৃত্তি পর্যন্ত তিনি মায়ের কাছেই পড়াশোনা করেন। এরপর মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে ভরতি হন। এখানে তার সহপাঠীরা ছিলেন বিপ্লবী শৈলেশ রায়, রেবতী মোহন বর্মণ (১৯০৩ - ১৯৫২), হরিপদ চক্রবর্তী প্রমুখ স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। পরবর্তীতে পড়াশোনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি রসায়নে এম.এসসি পাশ করেন।[২]

বিপ্লবী ক্রিয়াকলাপ সম্পাদনা

পরীক্ষা পাশের পর সরকারি চাকরি না নিয়ে তিনি 'শ্রীসংঘ'-এর মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করেন। সহকর্মী হিসাবে পান বিপ্লবী অনিলচন্দ্র রায় (১৯০১-১৯৫২) ও নেত্রী লীলা নাগকে (১৯০০ - ১৯৭০)। নিজের উপার্জনের জন্য এ সময় গণিতের কয়েকটি পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন। ইতিমধ্যে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের ঘটনা ঘটে যায় এবং তার ফলে ব্রিটিশ সরকার সমস্ত বিপ্লবীদের ধরপাকড় শুরু করে। অনিলকুমারের বিরুদ্ধেও যথারীতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। পুলিশ তার বাড়ি ঘেরাও করলে তিনি আত্মগোপন করেন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১০ মে তার নেতৃত্বে ভৈরববাজারে ট্রেন ডাকাতি সংঘটিত হয়। এই ঘটনায় ৬ জুন তিনি বিক্রমপুরের তালতলা স্টীমার ঘাটে গ্রেফতার হন। ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে তার উপর অমানুষিক অত্যাচার চলতে থাকে। শেষে ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ১৭ই জুন অত্যাচারের ফলে তার মৃত্যু ঘটে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. প্রথম খন্ড, সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু (২০১৬)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ২১,২২। আইএসবিএন 978-81-7955-135-6 
  2. "ঢাকার জীবনচিত্র - অনিল রায়"। ২০২২-০২-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০২-১৪