অনাথনাথ বসু

বিশ শতকের প্রখ্যাত বাঙালি সঙ্গীতজ্ঞ

অনাথনাথ বসু ( ১৮৯৬ – ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭৫) ছিলেন বিশ শতকের প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ। বাংলা টপ্পা, ঠুংরি ও খেয়াল গানের খ্যাতনামা শিল্পী হিসাবে পরিচয়ের পাশাপাশি তবলা বাদনে অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন। [১]

অনাথনাথ বসু
জন্মনামঅনাথনাথ বসু
জন্ম১৮৯৬
খলিশখালি খুলনা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি,বৃটিশ ভারত (বর্তমানে বাংলাদেশ)
মৃত্যু১৬ ডিসেম্বর ১৯৭৫(1975-12-16) (বয়স ৭৮–৭৯)
কলকাতা পশ্চিমবঙ্গ ভারত
ধরনটপ্পা, ঠুংরি, তবলা
পেশাসঙ্গীত শিল্পী
কার্যকাল১৯১৬–১৯৭৫
সন্তানশ্যামল বসু
গোবিন্দ বসু
কমল বসু
পিতা-মাতাঅপীন্দ্রকৃষ্ণ বসু (পিতা)

জীবনী সম্পাদনা

অনাথনাথ বসু র জন্ম বৃটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের তৎকালীন খুলনা জেলার (বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলার) 'খলিশখালি'তে। পিতা অপীলকৃষ্ণ বসু। শৈশবেই অনাথনাথের সঙ্গীতের প্রতি অগাধ ভালবাসা জন্মে। গ্রামে ও মামার বাড়িতে কীর্তনের যে চর্চা ছিল, মূলত সেটাই তাকে উৎসাহিত করে। তখনকার দিনে গ্রামোফোনের ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের বাজানো রেকর্ড শুনে অনেক গান শিখে ফেলেন। গান শেখার আগ্রহে অল্পবয়সে গ্রাম ছেড়ে কলকাতায় চলে আসেন। অনেক ঘুরে শেষপর্যন্ত হাওড়া শিবপুরের খ্যাতনামা টপ্পাশিল্পী, অন্ধগায়ক নিকুঞ্জবিহারী দত্তের কাছে গান শেখার সুযোগ পান। তবে বেশিরভাগ শিক্ষা পান বিখ্যাত সারেঙ্গীবাদক ছোটে খাঁর কাছে। তবলা ও সঙ্গীতের শিক্ষা একসাথে বেশ কিছুদিন নিয়েছিলেন। অল্প বয়সেই তার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। কুড়ি-বাইশ বয়সে তিনি এলাহাবাদে এক সঙ্গীত সম্মেলনে বাগেশ্রী রাগে খেয়াল করেন এবং অব্যাহতি পরেই মেয়েলি গলায় ঠুংরি গেয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেন। তিনি তার এই দ্বৈতগায়কিশৈলী বরাবর বজায় রেখেছেন। দীর্ঘ বাইশ বৎসর তিনি রায়গড়ের রাজা চক্রধর সিংহের সভাগায়ক ছিলেন। আকাশবাণীর সঙ্গেও তার সম্পর্কে ছিল। বিশের দশকে নির্বাক চলচ্চিত্রের সময়কালে নির্মিত কপালকুণ্ডলা কাহিনীচিত্রে তার কণ্ঠে গীত পতিতপাবনী গঙ্গা এবং কোলে তুলে নে মা শ্যামা জনপ্রিয় হয়। তবলা বাদক শ্যামল ও গোবিন্দ বসু এবং উচ্চাঙ্গ সংগীত শিল্পী কমল বসুরা হলেন তার পুত্র। কলকাতার বাগবাজারের প্রখ্যাত এই তবলাবাদক অনাথনাথ বসু নিজে শিল্পী তো বটেই, শিক্ষাদানের পাশাপাশি সংগীতের পৃষ্ঠপোষকও ছিলেন। প্রখ্যাত পুরাতনী, আগমনি, টপ্পা, শ্যামাসঙ্গীত ও ঠুংরি শিল্পী চণ্ডীদাস মালের পিতা নারায়ণচন্দ্র মাল অনাথনাথ বসুর কাছে টপ্পা শিখতেন। জয়পুর সেনিয়া ঘরানার শিল্পী আশিক আলির পুত্র প্রখ্যাত সেতার বাদক মুস্তাক আলিকে দ্বারভাঙা থেকে কলকাতায় নিয়ে আসেন তিনি। [২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬ পৃষ্ঠা ১৮, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. "কলকাতার সেতারচর্চার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস"। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-২৬