অগ্নি-পি বা অগ্নি-প্রাইম একটি মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, সম্মিলিত মোটর কেসিংয়ের আকার, ম্যানুভারবেল রি-এন্ট্রি ভেহিকেলের (এমআরভি) সাথে উন্নত প্রোপেলেন্টস, নেভিগেশন ও গাইডেন্স ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য আপগ্রেড সহ প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) দ্বারা কৌশলগত বাহিনী কমান্ডের কার্যকারী পরিষেবায় অগ্নি-১ ও অগ্নি-২ ক্ষেপণাস্ত্রের উত্তরসূরি হিসাবে তৈরি করা হয়।[৪]

অগ্নি-পি

আব্দুল কালাম দ্বীপ থেকে অগ্নি-পি এর প্রথম উড়ান পরীক্ষা
প্রকার মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র
উদ্ভাবনকারী ভারত
ব্যবহার ইতিহাস
ব্যবহারকারী কৌশলগত বাহিনী কমান্ড
উৎপাদন ইতিহাস
নকশাকারী প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা
উৎপাদনকারী ভারত ডায়নামিক্স লিমিটেড
তথ্যাবলি
ওয়ারহেড একাধিক ওয়ারহেড, থার্মোবেরিক, কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র

ইঞ্জিন দ্বিতীয় পর্যায়ের এমআরভি সহ একক পর্যায়ের রকেট মোটর[১]
প্রপেল্যান্ট কঠিন জ্বালানী
অপারেশনাল
রেঞ্জ
১০০০ থেকে ২০০০ কিমি[২]
নির্দেশনা
পদ্ধতি
রিজডান্ট মাইক্রো ইন্টারিয়াল নেভিগেশন এবং ডিজিটাল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সহ রিং লেজার জাইরো ইন্টারিয়াল নেভিগেশন ব্যবস্থা। ঐচ্ছিকভাবে জিপিএস/নাবিক স্যাটেলাইট গাইডেন্স সংযোজন করা হয়েছে[৩]
নির্ভুলতা ১০ মিটার সিইপি
লঞ্চ
প্লাটফর্ম
৮ x ৮ বিইএমএল - তাত্রা ট্রান্সপোর্টার ইরেক্টর লঞ্চার[২]

এটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের অগ্নি (ক্ষেপণাস্ত্র) সিরিজের ষষ্ঠ ক্ষেপণাস্ত্র। অগ্নি প্রাইমকে ট্রেনে পরিবহন এবং ক্যানিস্টায় সংরক্ষণ করা যায়।[৫]

ইতিহাস ও উন্নয়ন সম্পাদনা

 
আব্দুল কালাম দ্বীপ থেকে অগ্নি-পি এর পরীক্ষামূলক প্রথম উৎক্ষেপণ।

বিভিন্ন গণমাধ্যম সংস্থা ২০১৬ সালে শুরুতে জানান যে ডিআরডিও নির্ভুলতা ও নির্ভরযোগ্যতা বাড়াতে অগ্নি-৪ ও অগ্নি-৫ প্ল্যাটফর্ম থেকে নতুন প্রযুক্তি ধার করে দু'টি ধাপের সাথে অগ্নি-১পি নামে অগ্নি-১ এর একটি উত্তরসূরির বিকশিত করছে।[৬] চীন মার্কিন নৌবাহিনীকে মোকাবেলা করার জন্য পারমাণবিক ক্ষমতার সাথে ডিএফ-২১ডিডিএফ-২৬বি গড়ে তোলার মাধ্যমে গুয়ামের নৌঘাঁটি তাদের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসার পরে ভারত অঞ্চল অস্বীকার অস্ত্র নিয়ে কাজ শুরু করে। একইভাবে, অগ্নি-পি'র অগ্রগতি হল চীনের ২০৩৫ সালের মধ্যে ৫-৬ টি বিমানবাহী রণতরী যুদ্ধ দলের যে পরিকল্পনা তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে ভারতের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশলের অঙ্গ, যা পাকিস্তানশ্রীলঙ্কায় বিদেশের লজিস্টিকাল ঘাঁটিসমূহ সহ পশ্চিমা প্রশান্ত মহাসাগরভারত মহাসাগর উভয়কেই নাগালের মধ্যে নিয়ে আসবে।[৭] চীনের সামরিক বিশেষজ্ঞরা মেনে নিয়েছেন, যে প্রবেশ বিরোধী/অঞ্চল অস্বীকারের বিষয়ে ভারতে সক্ষমতা বৃদ্ধির চাহিদা রয়েছে। অগ্নি-পি পরীক্ষা ভারতের অন্তর্বর্তী-পাল্লার পারমাণবিক বাহিনী চুক্তির অংশ হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়িয়ে তোলে।[৮]

ডিআরডিও ২০২১ সালের ২৮শে জুন সফলভাবে অগ্নি-পি (পূর্বে অগ্নি-১পি নামে পরিচিত) আব্দুল কালাম দ্বীপ থেকে পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করে। এটি একটি দুটি পর্যায়ের কঠিন জ্বালানীর ক্ষেপণাস্ত্র, যা সালামো মোডে শীতল উৎক্ষেপণের জন্য সম্পূর্ণভাবে রূদ্ধ সীল ও পরপর সাজানো যমজ ক্যানিস্টার লঞ্চারে সংরক্ষণ করা এবং সড়ক ও রেলপথে পরিবহন করা যেতে পারে। ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়াতে উৎক্ষেপণের প্রান্তিক পর্বের জন্য এমআরভি চারটি ডেল্টা পাখনা বহন করে।[৯] এটি ডিআরডিও দ্বারা প্রবর্তিত অগ্নি সিরিজের একটি নতুন শ্রেণির ক্ষেপণাস্ত্র, যার ওজন অগ্নি-৩ এর অর্ধেক। অগ্নি-পি এর প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরের উভয়ই ওজন হ্রাস করার উদ্দেশ্যে সংমিশ্রিত পদার্থ দ্বারা গঠিত, যা অগ্নি-৫ প্রকল্পের সময় আয়ত্ত করা হয়েছিল।[১০] এটি ১.৫ টন পেইলড সহ ২০০০ কিলোমিটারের সর্বোচ্চ দূরত্বে আবদ্ধ বা আচ্ছাদিত একটি উন্নত গাইডেন্স প্যাকেজ ও চালকশক্তি ব্যবস্থা বহন করে।[২][৪][১১]

যদিও অনেক জল্পনা ছিল, যে অগ্নি-পি ক্ষেপণাস্ত্রটি অন্তর্ভুক্তির পরে পৃথিবী-১, অগ্নি-১অগ্নি-২ ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিস্থাপন করবে, কিন্তু সরকারি সূত্রসমূহ এই জাতীয় তত্ত্ব অস্বীকার করে।[১২]

ক্ষেপণাস্ত্রটির উন্নয়নের পেছনের অন্যতম উদ্দেশ্য হ'ল ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটির বিরুদ্ধে সর্বাধিক কৌশলগত দক্ষতা অর্জন এবং যথাযথ আঘাত হানা জন্য উচ্চতর নির্ভুলতা অর্জন করা।[১৩]

পরীক্ষার প্রতিক্রিয়া সম্পাদনা

ঘরোয়া সম্পাদনা

এটিকে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা ভারত মহাসাগর অঞ্চলে (আইওআর) চীনা বিমানবাহী রণতরী যুদ্ধ দলসমূহের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে সমুদ্র অস্বীকারের ক্ষমতা বাড়াতে অগ্রিম জাহাজ বিরোধী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (এএসবিএম) বিকাশের দিকে অগ্রগতিমূলক কাজের অংশ হিসাবে দেখেছেন।[৯]

অন্যান্য রাষ্ট্র সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Jain, Apoorva (২ জুলাই ২০২১)। "India's Latest Agni-P Ballistic Missile Sparks A Fierce Debate Between Chinese & Indian Experts"। The EurAsian Times। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০২১ 
  2. "DRDO successfully flight tests New Generation Agni P Ballistic Missile"pib.gov.in। Ministry of Defence, Government of India। Press Information Bureau। ২৮ জুন ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২১ 
  3. Shukla, Ajai (২৮ জুন ২০২১)। "Pakistan-aimed Agni-P ballistic missile flight-tested successfully"। Business Standard। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০২১ 
  4. Rout, Hemant Kumar (২০২১-০৬-২৮)। "India test fires new generation nuclear capable Agni-Prime missile off Odisha coast"The New Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২১ 
  5. "Agni-P (Prime)"। Dristi IAS। ১ জুলাই ২০২১। 
  6. "A brand new Agni missile Pakistan should be wary of"Rediff (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২১ 
  7. "Agni P spearheads India's major naval revamp to deter China"Lokmat English (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৭-০৩। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২১ 
  8. "China takes notice of India's test of 'carrier killer' Agni-P ballistic missile"The Shillong Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৭-০২। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২১ 
  9. "Agni P (Prime): India's ASBM in the Making and its Impact on Naval Warfare"ELE Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৬-২৯। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২১ 
  10. Shukla, Ajai (২০১২-০৪-২১)। "No intention to cap missile plan"Business Standard India। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২১ 
  11. Gupta, Shishir (২০২১-০৬-২৮)। "India successfully test-fires Agni P, a new missile in Agni series"Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২১ 
  12. "China takes notice of India's test of carrier killer Agni-P ballistic missile"Indian Defence Review Wing। ৩ জুলাই ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২১ 
  13. Philip, Snehesh Alex (২০২১-০৬-৩০)। "Agni Prime is the new missile in India's nuclear arsenal. This is why it's special"ThePrint (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২১ 
  14. Liu, Zhen (১ জুলাই ২০২১)। "India's latest Agni-P missile no great threat to China: experts"। South China Morning Post। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২১ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা