অক্ষয়কুমার বড়াল
অক্ষয়কুমার বড়াল (১৮৬০ – ১৯ জুন ১৯১৯) হলেন উনিশ শতকের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি।[১]
অক্ষয়কুমার বড়াল | |
---|---|
জন্ম | ১৮৬০ |
মৃত্যু | ১৯ জুন ১৯১৯ | (বয়স ৫৮–৫৯)
জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারতীয় |
পেশা | কবি |
সংক্ষিপ্ত জীবনী
সম্পাদনাঅক্ষয়কুমার বড়াল ১৮৬০ সালে বর্তমান ভারতের কলকাতার চোরবাগানে এক স্বর্ণব্যবসায়ীর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কালীচরণ বড়াল৷ তাঁদের আদিবাস হুগলী জেলার চন্দননগর৷[২] তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় কলকাতার হেয়ার স্কুলে। কিন্তু পড়াশোনায় তিনি উন্নতি করতে পারেননি। স্কুল শিক্ষা তিনি সমাপ্ত করতে পারেননি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বেশিদূর না এগোলেও আমৃত্যু তিনি জ্ঞান আহরণে ব্রতী ছিলেন। এ হিসেবে তাকে একজন স্বশিক্ষিত মানুষ বলে আখ্যায়িত করা যায়। স্কুল ত্যাগের পর অক্ষয়কুমার দিল্লি অ্যান্ড লন্ডন ব্যাংকের হিসাব বিভাগের কর্মচারী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এখানে কয়েক বছর চাকরি করার পর নর্থ ব্রিটিশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে হিসাব সচিব পদে যোগ দেন। এই পদ থেকেই তিনি অবসর গ্রহণ করেছিলেন। ১৯১৯ সালের ১৯ জুন তারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সাহিত্যকর্ম
সম্পাদনাহেয়ার স্কুলের ছাত্র থাকা অবস্থায় অক্ষয়কুমার বড়াল বিহারীলাল চক্রবর্তীর কবিতার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। বিহারীলাল ছিলেন বাংলা গীতিকবিতার প্রবর্তক। তার অণুপ্রেরণায়ই বড়াল কবিতা রচনা শুরু করেছিলেন। বঙ্গদর্শন পত্রিকার ১২৮৯ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ সংখ্যায় তার প্রথম কবিতা রজনীর মৃত্যু প্রকাশিত হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অক্ষয়কুমার বড়ালকে "বিহারীলালের সাক্ষাৎ ভাবশিষ্য" নামে আখ্যায়িত করেছেন। বাংলা গীতিকবিতার ইতিহাসে তিনি বড়াল কবি নামে পরিচিত। তার কাব্য রচনার মূল বিষয় ছিল নিসর্গ, সৌন্দর্যবাদ, কল্পনামূলক প্রেম, শোক এবং মানববন্দনা। নারীপ্রেমের শান্তরস তার কাব্যের প্রধান বিশেষত্ব। তিনি মৃতা স্ত্রীর স্মৃতিচারণ করে এষা কাব্যগ্রন্থটি লিখেছিলেন। তিনি মার্জিত এবং বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তাধারার অনুসারী ছিলেন।
সুকুমার সেন এর মতে ছন্দের চাতুর্যের দিকে বেশি ঝোঁক না থাকায় ভাবের প্রকাশ অকুন্ঠিত হয়েছে। তবে ভাবাবেগের তীব্রতায় কবি ভাষার উপর সর্বত্র তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে পারেননি।[৩]
স্বরচিত গ্রন্থ
সম্পাদনা- প্রদীপ (১৮৮৪)
- কনকাঞ্জলি (১৮৮৫)
- ভুল (১৮৮৭)
- শঙ্খ (১৯১০)
- এষা (১৯১২)
- চণ্ডীদাস (১৯১৭)[৪]
সম্পাদিত গ্রন্থ
সম্পাদনা- রাজকৃষ্ণ রায়ের কবিতা (১৮৮৭)
- গিরীন্দ্রমোহিনী দাসীর অশ্রুমালা (১৮৮৭)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ বিশ্বজিৎ ঘোষ (জানুয়ারি ২০০৩)। "অক্ষয়কুমার বড়াল"। সিরাজুল ইসলাম। [[বাংলাপিডিয়া]]। ঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশ। আইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ২২, ২০১৪। ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য)
- ↑ সুবর্ণবণিক কথা ও কীর্তি (প্রথম খন্ড), নরেন্দ্রনাথ লাহা , কলিকাতা ওরিয়েন্টাল প্রেস লিঃ, কলিকাতা, ১৯৪০, পৃ. ৮০
- ↑ বাঙ্গালা সাহিত্যের কথা - শ্রী সুকুমার সেন - সপ্তম সংস্করণ পৃষ্ঠা: ২৫০
- ↑ সেলিনা হোসেন ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; বাংলা একাডেমি চরিতাভিধান; ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা- ১।