অঁরি ক্রিস্তফ[১] (ইংরেজি: Henry Cristophe; ফরাসি উচ্চারণ: [ɑ̃ʁi kʁistɔf]; জীবনকাল: ৬ অক্টোবর ১৭৬৭ – ৮ অক্টোবর ১৮২০) ছিলেন হাইতির বিপ্লবের মূল নেতা এবং হাইতি রাজ্যের (Kingdom of Haiti) একমাত্র রাজা।

১ম হেনরি
হাইতির রাজা
বিশ্বাসের রক্ষাকর্তা
হাইতির রাজা ১ম হেনরি
হাইতি রাজ্যের প্রেসিডেন্ট
Term১৭ ফেব্রুয়ারি ১৮০৭ – ২৮ মার্চ ১৮১১
পূর্বসূরি১ম জ্যাক
হাইতির সম্রাট হিসেবে
হাইতির রাজা
রাজত্ব২৮ মার্চ ১৮১১ –
৮ অক্টোবর ১৮২০
রাজ্যাভিষেক২ জুন ১৮১১
পূর্বসূরিহাইতি রাজ্য
'স্বয়ং হাইতির প্রেসিডেন্ট হিসেবে
উত্তরসূরি২য় হেনরি (অনানুষ্ঠানিক)
জন্ম(১৭৬৭-১০-০৬)৬ অক্টোবর ১৭৬৭
ব্রিটিশ গ্রেনাডা
মৃত্যু৮ অক্টোবর ১৮২০(1820-10-08) (বয়স ৫৩)
হাইতীয় অন্তরীপ, হাইতি
সমাধি
দাম্পত্য সঙ্গীমারি-লুইজ কয়দেভিদ
বংশধরফ্রাসোয়াঁ-ফার্দিনান্দ ক্রিস্তফ
রাজকুমারী ফ্রাসোয়াঁ আমেথিস্ট
রাজকুমারী অ্যান-অ্যাথেনেয়ার
জ্যাক-ভিক্টর অঁরি, উত্তরাধিকারী রাজপুত্র
ব্যারন থোমা দে বেলিয়াঁ (অবৈধ পুত্র)
পূর্ণ নাম
অঁরি ক্রিস্তফ
পিতাক্রিস্তফ
ধর্মরোমান ক্যাথোলিক
হাইতি'র রাজধানী পোর্ত-অ-প্রাঁস এ অঁরি ক্রিস্তফের অশ্বারোহী মূর্তি

ক্রিস্তফ ছিলেন পশ্চিম আফ্রিকার বাম্বারা জাতিভুক্ত, এবং সম্ভবত ইগ্‌বো মানবগোষ্ঠীর বংশোদ্ভূত একজন প্রাক্তন ক্রীতদাস[২] ১৭৯১ সালের ক্রীতদাস বিদ্রোহের সময় থেকে শুরু করে তিনি হাইতির বিপ্লবী সামরিক বাহিনীর ক্ষমতাধর পদে আসীন হন। এই বিপ্লব ১৮০৪ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা আদায় করতে সক্ষম হয়। ১৮০৫ সালে জাঁ-জ্যাক দেসালিনের (Jean-Jacques Dessalines) অধীনে তিনি সান্তো ডমিঙ্গো (বর্তমানে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র) দখলে অংশ নেন, ফরাসি বাহিনী বাসেল চুক্তির অধীনে এই উপনিবেশটি স্পেনের কাছ থেকে পেয়েছিল।

দেসালিন গুপ্তহত্যার শিকার হওয়ার পর ক্রিস্তফ সেখান থেকে পিছু হটে গিয়ে উত্তরের সমতল (Plaine-du-Nord) এর দিকে চলে যান এবং সেখানে একটি আলাদা সরকার গঠন করেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৮০৭ সালে তিনি হাইতি রাজ্যের (State of Haiti) প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, যেহেতু তিনিই ঐ অঞ্চলের নামকরণ করেছিলেন। আলেক্সান্দ্রে পেতিওঁ (Alexandre Pétion) নির্বাচিত হন দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট। ২৬ মার্চ ১৮১১ সালে, ক্রিস্তফ উত্তরে একটি রাজ্য তৈরি করেন এবং পরে ১ম হেনরি, হাইতির রাজা হিসেবে ঘোষিত হন। তিনি একটি কুলীন বংশও প্রতিষ্ঠা করেন এবং নিজের বৈধ পুত্র জ্যাক-ভিক্টর অঁরিকে রাজপুত্র ও উত্তরাধিকারী হিসেবে ঘোষণা করে যান।

তিনি অঁরি দুর্গ (Citadel Henry), যা এখন লাফারিয়ের দুর্গ (Citadelle Laferrière) নামে পরিচিত, সাঁ সুসি প্রাসাদ (Sans-Souci Palace) সহ অনেকগুলো স্থাপনা নির্মাণ করেন।[৩] তার কর্‌ভে (corvée) বা বাধ্যতামূলক শ্রম নীতির আওতায় রাজ্যে কৃষি উৎপাদন, প্রধানত চিনি থেকে, রাজস্ব আসতে থাকে; কিন্তু জনগণ এই ব্যবস্থার প্রতি রুষ্ট ছিল। তিনি গ্রেট ব্রিটেনের সাথে এই মর্মে সমঝোতায় আসেন যে, ব্রিটিশদের ক্যারিবীয় উপনিবেশের প্রতি হাইতি শ্রদ্ধা বজায় রাখবে, তার বিনিময়ে ফরাসি নৌবাহিনীর কোন রকম উদ্বেগজনক কর্মকাণ্ড টের পেলে ব্রিটিশরা হাইতি সরকারকে জানাবে। অপ্রিয়, অসুস্থ এবং অভ্যুথানের ভয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। তার ছেলে ও উত্তরাধিকারীকে দশ দিন পর হত্যা করা হয়। জেনারেল জাঁ-পিয়ের বয়ে (Jean-Pierre Boyer) ক্ষমতায় আসেন এবং হাইতির দুই অংশকে একীভূত করেন।

প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

ঊনবিংশ শতকের শুরু থেকেই অঁরি ক্রিস্তফের জন্মস্থান এবং পরিচিতি লাভের আগে তার জীবন নিয়ে বেশ বিতর্ক রয়েছে। ক্রীতদাস মা এবং ক্রিস্তফ নামক এক স্বাধীন লোকের ঔরসে তার জন্ম ক্রিস্তফ অঁরি হিসেবে, সম্ভবত গ্রেনাডায় তবে সেইন্ট কিট্‌সেও[৪] হতে পারে। তাকে ক্রীতদাস হিসেবে সাধু ডমিঙ্গো (ফরাসি: Saint–Domingue; বর্তমানে হাইতি) এর উত্তরাঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৭৭৯ সালে তিনি ফরাসি বাহিনীতে সাধু ডমিঙ্গো’র (Saint–Domingue) অশ্বেতাঙ্গ অধিবাসীদের নিয়ে গঠিত সাধু ডমিঙ্গোর স্বেচ্ছাসেবক সৈন্যদল (Chasseurs-Volontaires de Saint-Domingue) নামক রেজিমেন্টে ঢাক-বাদক হিসেবে কাজ করে থাকতে পারেন। আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তারা সাভানা অবরোধ (Siege of Savannah) এর লড়াইয়ে যুদ্ধ করে।[৫] ক্রিস্তফ এই যুদ্ধে আহত হয়েছিলেন বলে দাবি করা হয়ে থাকে।[৬]

প্রাপ্তবয়সে ক্রিস্তফ একজন রাজমিস্ত্রি, নাবিক, আস্তাবল কর্মী, রেস্তোরাঁ-পরিচারক কিংবা বিলিয়ার্ড প্রস্তুতকারক হিসেবে কাজ করে থাকতে পারেন; যদি তাই হয়ে থাকে, তার আয়ের বেশির ভাগ অংশই তার মনিবের কাছে যেত।[৭] একটি জনপ্রিয় প্রচলিত কাহিনী অনুসারে, তিনি ফ্রান্সের সাধু ডমিঙ্গো উপনিবেশের প্রথম রাজধানী ও একটি প্রধান ঔপনিবেশিক শহর ক্যাপ-ফ্রসে (Cap-Français) এর রেস্তোরাঁ লা কুরন (La Couronne)– এর কর্মী ও ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করতেন। সেখানে, জনশ্রুতি অনুসারে, তিনি ঔপনিবেশিক ধনবান শ্বেতাঙ্গ (grand blancs) দের সাথে লেনদেনে সিদ্ধহস্ত ছিলেন। ঐ হোটেলের বিক্রয় বিবরণী যদিও এই দাবিকে সমর্থন করে না। বলা হয়ে থাকে, যুবক বয়সে ১৭৯১ সালের ক্রীতদাস বিদ্রোহের আগেই তিনি স্বাধীনতা লাভ করেন। হাইতিতে নিবাস গড়ার কিছুদিন পর তিনি নিজের বোন মেরিকে সেখানে নিয়ে যান; সেখানেই তার বোনের বিয়ে এবং সন্তানদের জন্ম হয়। হোটেলকর্মী হিসেবে সেসব রাজনৈতিক দক্ষতা তিনি রপ্ত করেছিলেন, পরবর্তীকালে সামরিক কর্মকর্তা এবং দেশের নেতা হওয়ার ক্ষেত্রে সেগুলো কাজে লেগেছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

১৭৯১ সালের ক্রীতদাস বিদ্রোহ থেকে শুরু করে, ক্রিস্তফ নিজেকে হাইতির বিপ্লবের একজন সৈন্য হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং বিদ্রোহের সময়কালেই কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। তিনি তুসাঁ লুভারতুর (Toussaint Louverture) এর অধীনে উত্তরাঞ্চলে বহু বছর ধরে যুদ্ধ করে ফরাসি, স্প্যানিশ, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের এবং সবশেষে ফরাসি জাতীয় ফৌজকে পরাজিত করতে সাহায্য করেন, এবং ক্যাপ-ফ্রসে’র সেনাপ্রধানের পদে আসীন হন। ১৮০২ সালের মধ্যেই লুভারতুর তাকে জেনারেল পদে পদোন্নতি দেন।

স্বাধীন হাইতি সম্পাদনা

ফরাসিরা তুসোঁ লুভারতুরকে ফ্রান্সে নির্বাসিত করে, এবং উপনিবেশের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার ও ক্রীতদাস প্রথা পুনর্বহালের উদ্দেশ্যে রোশাম্বু’র ভাইকাউন্ট (Vicomte de Rochambeau) এর অধীনে ২০,০০০ এর বেশি সৈন্য নিয়ে আসে। জাঁ-জ্যাক দেসালিন ফরাসি বাহিনীকে পরাস্ত করার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন। ১৮০৩ সালে শেষদিকে ফরাসিরা তাদের অবশিষ্ট ৭,০০০ সৈন্য ফিরিয়ে নেয়। নেতা হিসেবে দেসালিন ১৮০৪ সালে সাধু-ডমিঙ্গো’র (Saint-Domingue) স্বাধীনতা ঘোষণা করে এর নতুন নামকরণ করেন হাইতি।[৮]

ক্রিস্তফ দেশের উত্তরাঞ্চলের দায়িত্বে ছিলেন, যেখানে তিনি লাফারিয়ের দুর্গ নির্মাণের প্রাথমিক ধাপের তদারকি করেন। ১৮০৫ সালে, দক্ষিণের সেনাপতি জেনারেল নিকোলাস জেফ্‌রার্ড, দেসালিনকে হত্যার ষড়যন্ত্র করার জন্য ক্রিস্তফের সাথে যোগাযোগ করেন; ক্ষমতা দখলের সুযোগ দেখে তিনি স্বঘোষিত সম্রাটকে আর সাবধান করেননি। উত্তরে ক্রিস্তফের ক্ষমতা ও প্রভাব এমনই ছিল যে, উচ্চ ক্ষমতাশালীদের মধ্যে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র সম্পর্কে অবগত হওয়া সত্ত্বেও দেসালিন তার জেনারেলের বিরুদ্ধে আক্রমণ করতে অসমর্থ ছিলেন।[৯] এই ষড়যন্ত্রে দেসালিনের যুদ্ধ ও নৌমন্ত্রি এতিয়েন এলি জেরাঁ (Etienne Elie Gérin), পশ্চিমের ২য় ডিভিশনের প্রধান সেনাপতি জেনারেল আলেক্সান্দ্রে পেতিওঁ (Alexandre Pétion), জেনারেল নিকোলাস জেফ্‌রার্ড – সহ দেসালিনের অধিকাংশ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাই জড়িত ছিলেন। ১৬ অক্টোবর ১৮০৬ সালে, নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ (Resistance to Oppression) শীর্ষক একটি ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর করেন, যাতে দেসালিন সরকারের পতনের প্রয়োজনীয়তা এবং ক্রিস্তফকে অস্থায়ী হাইতি সরকারের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করা হয়।[১০] ১৭ অক্টোবর ১৮০৬ তারিখে দেসালিন আততায়ীর হাতে নিহত হন।

১৮০৫ সালের ব্যর্থ সামরিক অভিযান সম্পাদনা

১৮০৫ সালেও দ্বীপের পূর্বাঞ্চলে (মূলত সান্তো ডমিঙ্গোতে) ফরাসি ফৌজ মজুদ ছিল, যেখানে তাদের নেতৃত্বে ছিলেন ফরাসি কর্মকর্তা মারি-লুই ফেরাঁ (Marie-Louis Ferrand)। তিনি ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অনূর্ধ্ব চৌদ্দ বছর বয়সী সকল কৃষ্ণাঙ্গ ছেলে–মেয়েদের ধরে নিয়ে আসার জন্য তার সৈন্যদলকে নির্দেশ করেন। এ কথা জানতে পেরে দেসালিন ভীষণ ক্রুদ্ধ হন এবং সান্তো ডমিঙ্গো আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। তার বাহিনী আযুয়া (Azua) ও মোকা (Moca)-সহ বেশ কয়েকটি শহর লুটপাট করে, এবং শেষ পর্যন্ত ফরাসিদের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি সান্তো ডমিঙ্গো শহর ঘেরাও করে।

দেসালিনের অধীনে হাইতির জেনারেল অঁরি ক্রিস্তফ (স্প্যানিশ ভাষার নথিতে এনরিকে ক্রিস্তোবাল নামে পরিচিত) মোকা এবং সান্তিয়াগো শহর আক্রমণ করেন। আইনজীবী গাস্‌পার দে আর্‌রেদোন্‌দো এ পিচার্দো (Gaspar de Arredondo y Pichardo) এর ভাষ্যমতে, মোকা’র গির্জায় ৪০ জন শিশুকে গলাকাটা অবস্থায় পাওয়া যায়, যাদের মৃতদেহ পাওয়া যায় প্রেসবিটারিতে, যা হচ্ছে গির্জার বেদির চারপাশের বেষ্টিত জায়গা…[১১] এই ঘটনাটি দেসালিনের অধীনে জেনারেল ক্রিস্তফের নৃশংস কর্মকাণ্ডের নথিভুক্ত ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম; ১৮০৫ সালের এই ব্যর্থ অভিযানের পর তারা দ্বীপের স্প্যানিশ-শাসিত এলাকা থেকে পিছু হটে যায়।

৬ এপ্রিল ১৮০৫ তারিখে, জেনারেল ক্রিস্তফ তার সমস্ত সৈন্য একত্রে জড়ো করে সকল পুরুষ কয়েদিদের স্থানীয় গোরস্থানে নিয়ে যায় এবং তাদের সবাইকে গলা কেটে হত্যা করে, যার মধ্যে পাদ্রী ভাস্কেজ ও আরও ২০ জন ধর্মযাজক ছিলেন। পরে তিনি শহরের পাঁচটি গির্জাসহ সমস্ত শহরে আগুন জ্বালিয়ে দেন, চলে যাওয়ার সময় সাথে করে পশুর মত পাল ধরে ২৪৯ জন নারী, ৪৩০ জন মেয়ে এবং ৩১৮ জন ছেলেকে সাথে করে নিয়ে যান, ঐ সময়ে শহরের নিম্ন জনসংখ্যা বিবেচনা করলে সংখ্যাটা অত্যধিক। আলেহান্দ্রো ইয়েনাসের ভাষ্যমতে, ক্রিস্তফ শুধুমাত্র সান্তিয়াগো থেকেই ৯৯৭ জনকে নিয়ে যান, এবং “মন্তে প্লাতা, সান পেদ্রো এবং কতুই (Cotuí) স্রেফ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল, আর এর অধিবাসীদের হয় গলা কাটা পড়েছিল নয়তো হাজার হাজার মানুষকে গবাদি পশুর মত বাঁধা অবস্থায়, মার খেতে খেতে যুদ্ধবন্দি হিসেবে হাইতিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।”[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

সান্তো ডমিঙ্গো ত্যাগের পূর্বে, দেসালিন “আদেশ করেন যে…দখলকৃত সম্প্রদায়গুলোতে নিযুক্ত সেনাপতিরা যেন সেখানকার সকল অধিবাসীদের একত্রে জড়ো করে তাদেরকে জোরপূর্বক কারাগারে প্রেরণ করে, যাতে করে, নির্দেশ দেওয়া মাত্রই, হাইতির অংশে পৌঁছানোর সাথে সাথে তাদেরকে খচ্চর ও অন্যান্য প্রাণি দ্বারা পদপিষ্ট করা হয়।”[১২]

হাইতি এবং হাইতি রাজ্য সম্পাদনা

 
রোমান সলিডাসের আদলে ১ম হেনরি'র প্রতিকৃতি খচিত হাইতীয় লিভ্‌ (Haitian livre) মুদ্রা, আনুমানিক ১৮২০ সালের দিকে মুদ্রিত।[ক]

দক্ষিণে পেতিওঁ ও তার সমর্থকদের সাথে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের পর, ক্রিস্তফ তার সমর্থকদের নিয়ে হাইতির উত্তরাঞ্চলীয় সমতলের (Plaine-du-Nord) দিকে চলে যান, যা ছিল প্রাক্তন ক্রীতদাসদের একটি শক্ত ঘাঁটি; এবং সেখানে তিনি একটি আলাদা সরকার গঠন করেন। দক্ষিণে থাকলে গুপ্তহত্যার শিকার হবার আশঙ্কা আছে বলেও ক্রিস্তফের সন্দেহ ছিল। ১৮০৭ সালে তিনি নিজেকে “হাইতির প্রেসিডেন্ট এবং স্থল ও নৌবাহিনীর সর্বাধিনায়ক” (ফরাসি: président et généralissime des forces de terre et de mer de l'État d'Haïti) হিসেবে ঘোষণা করেন। দক্ষিণে পেতিওঁ “হাইতি প্রজাতন্ত্র”– এর প্রেসিডেন্ট হন, যেখানে তাকে সমর্থন করেন জাঁ-পিয়ের বয়ে (Jean-Pierre Boyer) নামক অশ্বেতাঙ্গ একজন জেনারেল যিনি দক্ষিণের সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ করতেন।

১৮১১ সালে অঁরি হাইতির উত্তরাঞ্চলকে একটি রাজত্ব হিসেবে ঘোষণা করেন এবং মিলো’র (Milot) আর্চবিশপ কর্নেই ব্রেই (Corneille Breil) কর্তৃক নিজেকে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করেন। ১ এপ্রিল ১৮১১ তারিখে জারিকৃত আজ্ঞা মোতাবেক তার পূর্ণাঙ্গ উপাধি দেওয়া হয়:

"Henry, par la grâce de Dieu et la Loi constitutionelle de l'État Roi d'Haïti, Souverain des Îles de la Tortue, Gonâve, et autres îles adjacentes, Destructeur de la tyrannie, Régénérateur et bienfaiteur de la nation haïtienne, Créateur de ses institutions morales, politiques et guerrières, Premier monarque couronné du Nouveau-Monde, Défenseur de la foi, Fondateur de l'ordre royal et militaire de Saint-Henri"

"অঁরি, ঈশ্বরের কৃপায় ও দেশের সাংবিধানিক আইন অনুসারে, হাইতির রাজা; তর্তুগা, গোনাভে, এবং অন্যান্য সন্নিহিত দ্বীপপুঞ্জের অধিপতি, স্বৈরতন্ত্রের বিনাশকারী, হাইতি জাতির পুনর্জাগরণকারী ও হিতার্থী, এর নৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামরিক প্রতিষ্ঠানের স্রষ্টা, নতুন বিশ্বের প্রথম মুকুট-শোভিত রাজা, বিশ্বাসের রক্ষাকর্তা, সাধু অঁরি’র রাজকীয় সামরিক বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা।" [১৩]

তিনি ক্যাপ-ফ্রসে’র (Cap-Français; ফরাসি অন্তরীপ) এর নাম বদলে ক্যাপ-অঁরি (Cap-Henry; অঁরি অন্তরীপ) রাখেন (যা পরবর্তীকালে ক্যাপ-আইসিয়াঁ (Cap-Haïtien; হাইতিয়ান অন্তরীপ) হিসেবে পুনর্নামকরণ করা হয়)।[১৪]

ক্রিস্তফ তার বৈধ পুত্রের নাম রাখেন জ্যাক–ভিক্টর অঁরি, তাকে সিংহাসনের আপাত উত্তরাধিকারী করে হাইতির রাজপুত্র উপাধি দেন।[৭] তার দ্বিতীয় পুত্র ছিল তার সেনাবাহিনীর একজন কর্নেল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

ক্রিস্তফ ছয়টি দূর্গ, আটটি প্রাসাদ এবং মিলো’র কাছে পাহাড়ের ওপর বিশালাকার লাফারিয়ের দুর্গ (Citadelle Laferrière) নির্মাণ করেন। সাঁ–সুসি প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষের সাথে এটিকেও ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান (World Heritage Site) হিসেবে ঘোষণা করা হয়। নয় বছর পর, তার রাজত্বের শেষের দিকে, অঁরি মনোনীত অভিজাতবর্গের সংখ্যা ৮৭ থেকে বাড়িয়ে ১৩৪ জন করেন।[১৫]

হাইতির উভয় অংশই কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যয়বহুল ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধনকারী যুদ্ধগুলোর প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসতে সংগ্রাম করছিল। যুক্তরাষ্ট্র কেবলই হাইতির ওপর থেকে অস্ত্র ও পণ্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল, এবং গ্রেট ব্রিটেনের সাথে ১৮১২ সালের যুদ্ধ –তে জড়িয়ে পড়েছিল। ক্রিস্তফকে হয় ক্রীতদাস দ্বারা চাষাবাদ প্রথার একটি ভিন্ন সংস্করণ, নয়তো কৃষিজমি ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত করে প্রজাদের জীবিকা নির্বাহ ভিত্তিক চাষাবাদের প্রথা বেছে নিতে হতো। পরের পন্থাটি ছিল দক্ষিণে পেতিওঁ’র অনুসৃত নীতি। রাজা অঁরি কর্‌ভে (corvée) চাষাবাদ প্রথা চালুর সিদ্ধান্ত নেন, এটা খাজনার পরিবর্তে এক ধরনের বাধ্যতামূলক শ্রম প্রথা, এবং সেই সাথে তার বিশাল নির্মাণ প্রকল্পগুলোও শুরু করেন। তার রাজত্বকালে, উত্তর হাইতি ছিল স্বৈরতান্ত্রিক কিন্তু ইক্ষু-নির্ভর অর্থনীতি সরকার এবং এর কর্মকর্তাদের জন্য যথেষ্ট রাজস্ব যোগান দিত।

তিনি ব্রিটেনের সাথে এই মর্মে সমঝোতায় আসেন যে, হাইতি ব্রিটিশদের ক্যারিবীয় উপনিবেশগুলোতে আক্রমণ করবে না; তার বিনিময়ে ব্রিটিশ নৌবাহিনী ফরাসি বাহিনী কর্তৃক সম্ভাব্য যেকোন আক্রমণের আশংকার ব্যাপারে হাইতিকে সতর্ক করে দেবে। ১৮০৭ সালে ব্রিটিশ শাসিত অঞ্চলসমূহে আফ্রিকান ক্রীতদাস আমদানি প্রথা বিলোপ করার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ আইনসভায় ক্রীতদাস বাণিজ্য আইন ১৮০৭ পাশ হয়। ব্রিটেনের সাথে বর্ধিত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ফলস্বরূপ ক্রিস্তফ সরকারের কোষাগারে বেশ মোটা অঙ্কের ব্রিটিশ পাউন্ড জমতে থাকে। অন্যদিকে, জমি ভাগাভাগি ব্যবস্থায় কৃষি উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় রপ্তানি বাণিজ্যও কমে যাওয়ার কারণে পেতিওঁ’র দক্ষিণ হাইতি ক্রমেই দরিদ্রতর হতে থাকে।[১৬]

কৌলিন্য এবং কুলচিহ্ন সম্পাদনা

 
রাজসভায় জার্মান চিত্রকর কর্তৃক অঙ্কিত এই চিত্রকর্মে অঁরি, সাধু অঁরি’র রাজকীয় এবং সামরিক বাহিনীর (Ordre Royal et Militaire de Saint Henry) মহাক্রুশ পরিহিত আছেন।

রাজা হিসেবে ক্রিস্তফ একটি বিস্তারিত হাইতিয়ান কুলীন বংশ সৃষ্টি করেন, যেখানে শুরুতে চারজন রাজপুত্র, আটজন ডিউক, বাইশ জন কাউন্ট, চল্লিশ জন ব্যারন, এবং চৌদ্দ জন নাইট (“chevaliers”) অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। ক্রিস্তফ নব্য কৌলিন্যপ্রাপ্তদের কুলচিহ্ন-খচিত বর্ম সরবরাহের জন্য একটি অস্ত্রাগার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। নিজের ব্যক্তিগত কুলচিহ্ন-খচিত বর্মের জন্য ক্রিস্তফ, অগ্নিশিখা থেকে উদীয়মান মুকুট-শোভিত ফিনিক্স পাখি এবং ‘নিজ ভস্ম থেকেই উদিত হই আমি’ (Je renais de mes cendres)– এই শ্লোগানটি বেছে নিয়েছিলেন, যেটা সম্ভবত ক্যাপ-অঁরি’র পুনর্জন্মের প্রতি ইঙ্গিত করে, যা ১৮০২ সালে ফরাসি সেনাবাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য তিনি নিজেই জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন।

কোন কোন ইউরোপীয় তার এই সৃষ্টিকে বিদ্রূপ করেছিল। তারা দুক দে লিমোনাদ (Duc de Limonade; জুলিয়েন প্রেভোস্ট, ক্রিস্তফের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) এবং দুক দে মার্মেলাদ (Duc de Marmelade; জাঁ-পিয়ের রিচার্ড, ক্যাপ-অঁরি’র গভর্নর) উপাধি দুটিকে বিশেষ করে হাস্যকর বলে মনে করত (কেননা লিমোনাদ বা লেমোনেড একটি পানীয়বিশেষ এবং মার্মেলাদ বা মার্মালেড আচার/মোরব্বা জাতীয় খাবার), কিন্তু তারা জানত না যে ঐ জায়গার নামগুলো আসলে প্রাক্তন ফরাসি ঔপনিবেশিকদের দেওয়া নাম থেকেই এসেছে।[১৩]

ফরাসিদের হাইতি পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা সম্পাদনা

এপ্রিল ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন সিংহাসন ত্যাগ করার পর, রাজা অষ্টাদশ লুই সাধু ডমিঙ্গ এলাকাটি পুনর্দখলের চেষ্টা চালান।[১৭] ৩০ মে তারিখে প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার পর স্প্যানিশ স্যান ডমিঙ্গো পুনঃঅধিষ্ঠিত বুর্বোঁ (Bourbon) ফ্রান্সের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, এবং সেই সাথে দাসপ্রথা বিলোপের কারণে ঘটিত আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি পোষানোর জন্য আরও অতিরিক্ত পাঁচ বছর ক্রীতদাস বাণিজ্যের অনুমতি দেওয়া হয়। দ্বীপ থেকে আটককৃত ফরাসি চরদের কাছ থেকে উদ্ধার করা চিঠির মাধ্যমে, অক্টোবর ১৮১৪ সালে, ১ম হেনরি’র মন্ত্রীগণ ফরাসিদের প্রাক্তন উপনিবেশ পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনার প্রমাণাদি জনসমক্ষে হাজির করেন।[১৮] এর ফলশ্রুতিতে সমগ্র জাতি আসন্ন ফরাসি আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হতে থাকে এবং আন্তর্জাতিক গণসংযোগ প্রচারণা শুরু করে। নভেম্বর থেকে, গোটা আটলান্টিক-বিশ্বের মুদ্রণ-মাধ্যমজুড়ে পুনঃমুদ্রিত হাইতিয়ান পুস্তিকা, সংবাদপত্র এবং খোলা চিঠি প্রকাশিত হতে থাকে।[১৯] এসব কড়া সমালোচনামূলক লেখা এবং সম্পাদকীয় ছাড়াও বর্ণ ও ঔপনিবেশবাদের ওপর রচিত সমালোচনামূলক তাত্ত্বিক প্রবন্ধ, যেমন – পম্পে ভ্যালেতাঁ ভাস্তে রচিত দ্য কলোনিয়াল সিস্টেম আন্‌ভেইল্ড (Le Système colonial dévoilé), প্রকাশিত হয়।[২০] একই সময়ে, অঁরি তদানীন্তন সময়ের সবচেয়ে বিখ্যাত (দাসপ্রথা) বিলোপপন্থী উইলিয়াম উইলবারফোর্স এর সাথে যোগাযোগ শুরু করেন, ৫ জানুয়ারি ১৮১৫ তারিখে তার চিঠি গিয়ে পৌঁছে, এবং এর মাধ্যমে গ্রেট ব্রিটেন ও হাইতি রাজ্যের মধ্যকার যোগাযোগ এক নতুন মাত্রা লাভ করে।[১৯]

রাজত্বের সমাপ্তি সম্পাদনা

 
পিয়ের নর্দ অ্যালেক্সিস, হাইতি'র সপ্তদশ প্রেসিডেন্ট
 
হেনরি ক্রিস্টোফের আত্মহত্যায় ব্যবহৃত পিস্তল

শিক্ষার প্রসার এবং কোড অঁরি [২১] নামক আইনি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সত্বেও, রাজা অঁরি ছিলেন অজনপ্রিয়, স্বৈরাচারী একজন রাজা। তার রাজত্ব ক্রমাগত পেতিওঁ’র সরকার, যেখানে অশ্বেতাঙ্গরাই ক্ষমতার অধিকারী ছিল, তার দ্বারা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতো। তার রাজত্বের শেষদিকে, দেশের উন্নয়নের উদ্দেশ্যে গৃহীত বাধ্যতামূলক শ্রমনীতি, যা অনেকেই সামন্ততান্ত্রিক শ্রম ব্যবস্থা বলেই মনে করত, তার প্রতি বৈরী মনোভাব ছিল।[২২] ৫৩ বছর বয়সে, অসুস্থ এবং দুর্বল অবস্থায়, অভ্যুত্থান ও গুপ্তহত্যার শিকার হবার চেয়ে শ্রেয়তর ভেবে, রাজা অঁরি রূপালি বুলেট দ্বারা গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন।[৭] তার পুত্র ও উত্তরাধিকারী ১০ দিন পর আততায়ীর হাতে নিহত হয়। রাজা অঁরিকে লাফারিয়ের দূর্গের ভেতরেই সমাহিত করা হয়।[২৩]

তার উত্তরসূরিরাও পরবর্তীকালে হাইতি’র ক্ষমতাধরদের মধ্যে আসীন ছিল। ক্রিস্তফের নাতি, পিয়ের নর্দ অ্যালেক্সিস, ১৯০২–১৯০৮ সাল পর্যন্ত হাইতির প্রেসিডেন্ট ছিলেন।[২৪]

মিশেল বেনেট, যিনি জাঁ-ক্লদ দুভালিয়ে কে বিয়ে করেছিলেন এবং তার প্রশাসনের ক্ষমতাকালে (১৯৮০–১৯৮৬) ফার্স্ট লেডি হিসেবে দায়িত্বপালন করেন, তিনি ছিলেন ক্রিস্তফের প্র-প্র-প্র-দৌহিত্রী (great-great-great-granddaughter)।[২৫][২৬]

টীকা সম্পাদনা

  1. এই মুদ্রাটি সামান্য ভাঙা ভাঙা লাতিন ভাষায় খোদিত: "HENRICUS DEI GRATIA HAITI REX" ( বাংলা: অঁরি, ঈশ্বরের কৃপায়, হাইতির রাজা )।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Henry Christophe spelled his first name with a 'y,' and official court documents followed the same convention, as is evidence notably in the Almanach Royal d'Hayti. This is not, as is often assumed, the English spelling, but rather a traditional spelling notably adopted by eponymous French kings. See for example the signature of King Henry IV of France.
  2. Mollien, Gaspard Théodore, Comte de (২০০৬)। Haïti ou Saint-Domingue, Vol 2। Paris: L'Harmattan। পৃষ্ঠা 63। 
  3. Gauvin Alexander Bailey, The Palace of Sans-Souci in Milot, Haiti (ca. 1806 - 1813): The Untold Story of the Potsdam of the Rainforest (Munich and Berlin, Deutscher Kunstverlag, 2017)[১]
  4. Marcus Rainsford's 1802 'St Domingo, or, An Historical, Political and Literary Sketch of the Black Republic' gives Christophe's birthplace as St Domingo. An 1803 letter from Edward Corbet in the UK National Archives says Grenada. Pierre McCallum's 1805 'Travels in Trinidad During the Months of February, March, and April, 1803' claims St. Kitts.
  5. HAITIAN MONUMENT OUTLINE[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], Haitian History
  6. Vastey, Baron de (১৮১৯)। Essai sur les Causes de la Révolution et des Guerres Civiles en Haïti। Sans Souci: Imprimerie Royale। পৃষ্ঠা 160। 
  7. Monfried, Walter, "The Slave Who Became King: Henri Christophe", Negro Digest, Volume XII, Number 12, October, 1963.
  8. "Haiti." The Encyclopedia of World History, edited by Peter N. Stearns, and William L. Langer, Houghton Mifflin, 6th edition, 2001. Credo Reference, https://login.avoserv2.library.fordham.edu/login?ইউআরএল=https://search.credoreference.com/content/entry/hmencyclwh/haiti/0?institutionId=3205. Accessed 23 Oct. 2019.
  9. Madiou, Thomas (১৮৪৯)। Histoire d'Haïti Tome 3। Courtois। পৃষ্ঠা 226–290। 
  10. Madiou, Thomas (১৮৪৯)। Histoire d'Haïti, Tome 3। Courtois। পৃষ্ঠা 313–316। 
  11. Gaspar de Arredondo y Pichardo, Memoria de mi salida de la isla de Santo Domingo el 28 de abril de 1805 (Memoirs of my leaving the island of Santo Domingo 28 April 1805)
  12. "La verdad de la Historia del autoproclamado Rey Henri Christophe, o Henri I de Haití y Jean Jacques Dessalines"Noticias Globales Diarias (স্পেনীয় ভাষায়)। ১৩ জানুয়ারি ২০১২। ২৭ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১৮ 
  13. Cheesman, 2007.
  14. "History of Cap-Haïtien"। ১৩ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০২০ 
  15. Cheesman, 2007, p. 10.
  16. Griggs and Prator, James.
  17. Araujo, Ana Lucia (২০১৭)। Reparations for Slavery and the Slave Trade: A Transnational and Comparative History। London & New York: Bloomsbury Academic। আইএসবিএন 978-1350010604 
  18. Procès verbal d'interrogatoires de Agoustine Franco, dit Medina, espion français. Royaume d'Hayti. Commission militaire spéciale। Cap-Henry, Haiti: chez P. Roux, imprimeur du Roi.। ১৮১৪। 
  19. McIntosh & Pierrot, Tabitha & Grégory (জুলাই ২০১৬)। "Capturing the likeness of Henry I of Haiti (1805–1822)"। Atlantic Studies। Volume 14, 2017 - Issue 2 (2): Pages 127–151। ডিওআই:10.1080/14788810.2016.1203214 
  20. Vastey, Pompée Valentin (১৮১৪)। Le Système colonial dévoilé। Cap-Henry, Haiti: P Roux। 
  21. Henri Christophe, King of Haiti, 1767-1820. Code Henry, Roux, P. (Pierre), printer, Au Cap-Henry [Cap-Haïtien, Haiti], 1812, আইএসবিএন ০৫৪৮৮২২২৪৭
  22. Smucker, Glenn R. "Social Structure", A Country Study: Haiti (Chapter 6 – Haiti: Historical Setting (Anne Greene, editor), Library of Congress, December 1989
  23. "The Black Hitler", Pittsburgh Post-Gazette, 26 August 1942
  24. Blézine ALEXIS née GEORGES
  25. Ernest BENNETT
  26. Georgie BENNETT

উৎস সম্পাদনা

  • Cheesman, Clive (২০০৭), The Armorial of Haiti: Symbols of Nobility in the Reign of Henry Christophe, London: The College of Arms, আইএসবিএন 978-0-9506980-2-1 
  • Griggs, E.L.; Prator, C.H., সম্পাদকগণ (১৯৬৮), Henry Christophe and Thomas Clarkson: A Correspondence 
  • James, C.L.R. (১৯৬৮), The Black Jacobins 
  • Vandercook, John (১৯২৮), Black Majesty: The Life of Christophe, King of Haiti, New York: Harper and Brothers Publishing 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

পূর্বসূরী
১ম জ্যাক
হাইতি'র সম্রাট
 
হাইতি'র প্রেসিডেন্ট
১৮০৭-১৮১১

 
হাইতির রাজা

১৮১১-১৮২০
উত্তরসূরী
জাঁ-পিয়ের বয়ে
হাইতি'র প্রেসিডেন্ট