অও (জনগোষ্ঠী)

ভারতের আসাম অঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার একটি উপজাতি

অও হলো ভারতের আসাম অঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় বসবাসকারী একটি জাতিগোষ্ঠী। উপমহাদেশে বসবাসকারী অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর চেয়ে এরা আকৃতিতে বেশ লম্বা।

অও
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
আসাম : ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা
পূর্ববর্তী আবাস : ত্রিপুরা (ভারত), পার্বত্য চট্টগ্রাম (বাংলাদেশ)
ধর্ম
সর্বপ্রানবাদী আদিবাসী

বিস্তরণ সম্পাদনা

বর্তমানে অওরা আসাম অঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবাস করলেও একসময় তাদেরকে ত্রিপুরাপার্বত্য চট্টগ্রামেও দেখা যেতো।[১]

শাখাসমূহ সম্পাদনা

অও উপজাতি তিনটি শাখায় বিভক্ত - চোঙলি, মোঙসেন ও চঙকি; যার প্রতিটিই আবার একাধিক উপশাখায় বিভক্ত।[১]

শারীরিক গঠন সম্পাদনা

অওগণ গড়ে প্রায় পাঁচ ফুট আট ইঞ্চি দীর্ঘকায় হয় এবং এদের গায়ের রং তামাটে, কেশ কুঞ্চিত, দেহ যথেষ্ট লোমশ, নাক চ্যাপ্টা এবং মুখমন্ডল কিছুটা মঙ্গোলীয়দের মতো বিস্তৃত।[১]

পোশাক-পরিচ্ছদ ও অলংকার সম্পাদনা

এদের পুরুষগণ সাধারণত স্বল্প কাপড় পরিধান করলেও নারীরা এক থেকে দেড় গজ লম্বা ও বিশ থেকে ত্রিশ ইঞ্চি চওড়া পরিচ্ছদ লেংটির মতো করে পিধান করে। অবিবাহিত মেয়েরা ফিতা দিয়ে বক্ষ বন্ধন করে; কিন্তু বিবাহিতা মেয়েদের বক্ষ উন্মুক্ত থাকে। তারা প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত লতাপাতা, চামড়া, পাখির পালক ও নানারকম পাথরের অলঙ্কার পরিধান করে থাকে।[১]

ধর্ম সম্পাদনা

এদের ধর্ম কতিপয় পূজা-অর্চনা ও বলি প্রথায় পরিচালিত হয় যাতে দেবতাকে তুষ্ট ও অপদেবতাকে প্রতিহত করার জন্য অহরহ বলি দেয়া হয়।[১] আত্মা, পরজন্ম, জীবন ও মৃত্যু সম্পর্কে এদের ধারণা খুবই সরল এবং তাদের ধর্মে নৈতিকতা কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।

বিবাহ পদ্ধতি সম্পাদনা

অওরা সমগোত্রীয়দের মধ্যে বিবাহ করে না। বিবাহ সংঘটিত হওয়ার আগে পাত্র প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত পাত্রীর সঙ্গে কিছুকাল সহবাস করে এবং এতে পছন্দ হলে পাত্রীর মা-বাবা পাত্রপক্ষের নিকট বিবাহের প্রস্তাব পাঠায়; আর, পছন্দ না হলে প্রস্তাব আসার আগেই পাত্রীর সঙ্গ ত্যাগ করতে হয়।[১]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. শাহীদা আখতার (জানুয়ারি ২০০৩)। "অও"। সিরাজুল ইসলামবাংলাপিডিয়াঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশআইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯