শিন ফেইন (ইংরেজি: Sinn Féin); /ˌʃɪnˈfɛɪn/; shin-FAYN; Irish: [ʃɪnʲ fʲeːnʲ]) আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্রের একটি বামপন্থী রাজনৈতিক দলআর্থার গ্রিফিথ কর্তৃক নামীয় ব্যক্তি কর্তৃক ১৯০৫ সালে শিন ফেইন অর্গ্যানাইজেশন নামে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৭০ সালে দলটি ভেঙ্গে পড়ায় এটি বর্তমান নাম ধারণ করে। বর্তমানে দলনেতা হিসেবে রয়েছেন জেরি এডামস। উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্র - উভয় অঞ্চলের সংসদেই এদের নির্বাচিত সংসদ সদস্য রয়েছে।[৭] একীভূত দ্বীপপুঞ্জ আয়ারল্যান্ডের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে এর অবস্থান বামপন্থী। ঐতিহাসিকভাবে দলটি প্রভিশনাল আইআরএ দলের সাথে সংযুক্ত ছিল।[৮] আইরিশ ভাষায় শিন ফেইন শব্দের অর্থ হচ্ছে 'আমরাই' বা 'আমরা আমরাই'।[৯][১০] কিন্তু সচরাচর ভুলভাবে 'একমাত্র আমরাই' শব্দগুচ্ছের অনুবাদ হযে থাকে।[১১]

শিন ফেইন
মহাসচিবডন ডোয়েল
সভাপতিজেরি এডামস টিডি
সহ-সভাপতিমেরি লো ম্যাকডোনাল্ড টিডি
সংসদীয় দলনেতারেমন্ড ম্যাককার্টনি এমএলএ
প্রতিষ্ঠাতাআর্থার গ্রীফিথ
প্রতিষ্ঠাপ্রকৃতপক্ষে ১৯০৫
বর্তমানে ১৯৭০
সদর দপ্তর৪৪ পার্নেল স্কয়ার, ডাবলিন ১, আয়ারল্যান্ড
সংবাদপত্রঅ্যান ফোব্লাচট
যুব শাখাওগ্রা শিন ফেইন
সদস্যপদ  (২০১২)৭,০০০[১]
ভাবাদর্শআইরিশ প্রজাতন্ত্রবাদ
আইরিশ পুণঃএকত্রীকরণ[২][৩][৪]
গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র
বামপন্থী জাতীয়তাবাদ
ইউরোসেপ্টিসিজম[৫][৬]
রাজনৈতিক অবস্থানবামপন্থী
ইউরোপীয় সংসদীয় দলEuropean United Left–Nordic Green Left
আনুষ্ঠানিক রঙসবুজ
স্লোগান"আয়ারল্যান্ডের সমতায়ণ"
দেইল আইরেন
১৪ / ১৬৬
সীনাদ আইরেন
৩ / ৬০
House of Commons
(NI Seats)
৫ / ১৮
(Abstentionist)
European Parliament (Republic of Ireland)
০ / ১২
European Parliament (Northern Ireland)
১ / ৩
Northern Ireland Assembly
২৯ / ১০৮
Local government in Northern Ireland
১৩৮ / ৫৮২
Local government in the Republic of Ireland
১২৭ / ১,৬২৭
Údarás na Gaeltachta
১ / ১৭
ওয়েবসাইট
www.sinnfein.ie

ইতিহাস সম্পাদনা

২৮ নভেম্বর, ১৯০৫ সালে জাতীয় কাউন্সিলের প্রথম বার্ষিক সম্মেলনে গঠিত হয়। আর্থার গ্রীফিথ শিন ফেইনের খসড়া নীতি প্রণয়ন করেছিলেন।[১০] এ নীতিতে বলা হয়েছিল যে, 'আয়ারল্যান্ডের রাজধানীতে আইরিশ জাতির নৈতিক সমর্থন নিয়ে জাতীয় আইনসভা প্রতিষ্ঠিত হবে।'[১২] যুক্তরাজ্যের সংসদীয় আসনের লেইট্রিম নর্থ এলাকায় অনুষ্ঠিত ১৯০৮ সালের উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ২৭% ভোট লাভ করেছিল।[১৩] এরপর জনসমর্থন এবং সদস্যপদ - উভয়ই নেমে যেতে থাকে। ১৯১০ সালে দলীয় সম্মেলন আর্দ ফেইসে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল খুবই কম। এমনকি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্যে প্রয়োজনীয় সদস্য খুঁজে পাওয়াও বেশ কঠিন হয়ে পড়েছিল।[১৪]

বর্তমান নেতৃত্ব সম্পাদনা

জেরি এডামসের নির্বাচনী প্রচারণা উত্তরোত্তর জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ১৯৮৩ সালে অ্যালেক্স মাসকি নামীয় ব্যক্তি বেলফাস্ট সিটি কাউন্সিল থেকে নির্বাচিত হন যা ঐ এলাকায় প্রথম কোন শিন ফেইন সদস্যের আসন লাভ।[১৫] ঐ বছর যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে দলটি লক্ষাধিক ভোট লাভ করে। ওয়েস্ট বেলফাস্ট এলাকা থেকে জেরি এডামস জয়লাভ করেছিলেন যা পূর্বে এসডিএলপি'র মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।[১৫] ১৯৮৫ সালে দলটি ৫৯টি আসন লাভ করে। তন্মধ্যে উত্তর আয়ারল্যান্ড কাউন্সিলের ছাব্বিশ আসনের মধ্যে ১৭টি ও বেলফাস্ট সিটি কাউন্সিলেBর ৭টি আসন ছিল।[১৬]

সংসদে প্রতিনিধিত্ব সম্পাদনা

শিন ফেইন বর্তমানে উত্তর আয়ারল্যান্ডে দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে উত্তর আয়ারল্যান্ডের সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছে। সেখানে তারা মন্ত্রীপরিষদের চারটি পদের অধিকারী। আইরিশ প্রজাতন্ত্রের নিম্নসভা দেইল এইরেনে পঞ্চম বৃহত্তম দল হিসেবে এর অবস্থান। ব্রিটিশ কমন্স সভা বা হাউজ অব কমন্সে এর পাঁচজন সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু দলের নীতি-নির্ধারণী সভায় বলা হয় যে, প্রতিনিধিত্বকারীরা অবশ্যই সেখান থেকে তাদের আসন প্রত্যাখ্যান করবেন।

আইআরএ'র সাথে সম্পৃক্ততা সম্পাদনা

শিন ফেইন বৃহত্তম সংগঠনরূপে আইরিশ প্রজাতন্ত্রবাদের শাখা আইরিশ জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী একটি দল এবং প্রভিশনাল আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি বা আইআরএ'র সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আইরিশ সরকার দোষারোপ করছে যে, শিন ফেইনের শীর্ষস্থানীয় নেতারা আইআরএ আর্মি কাউন্সিলের পদে অধিষ্ঠিত আছেন।[১৭] কিন্তু, শিন ফেইন নেতৃত্ব তাদের এ দাবীকে অস্বীকার করেছে।[১৮]

১৯৮০-এর দশকের শুরুতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বিবৃতি দেয়া হয়। এতে বলা হয়, "শিন ফেইন এবং আইআরএ পৃথকভাবে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করলেও জাতীয়তাবাদী চেতনায় প্রধান ভূমিকা নিচ্ছে। আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি অস্ত্রের প্রচারণা চালাচ্ছে। অন্যদিকে শিন ফেইন যুদ্ধের প্রচারণা, জনসাধারণ ও রাজনৈতিক কণ্ঠস্বররূপে আন্দোলন চালাচ্ছে।"[১৯]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Analysis - Irish referendum puts Sinn Fein in the spotlight ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে. Padraic Halpin. Reuters.
  2. Ireland:The Politics of Enmity, August 2007, p.301-303.
  3. "Motion 23"। Sinn Féin। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১০, ২০১২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. Neuheiser, Jorg (২০০৪)। Peace at Last?: The Impact of the Good Friday Agreement on Northern Ireland। Berghahn Books। পৃষ্ঠা 61। আইএসবিএন 978-1571816580 
  5. Sinn Féin set to capitalise on Irish discontent - FT.com
  6. "Groups in the European Parliament"BBC News। ২০১১-০৫-৩১। 
  7. "About Sinn Fein"। ২৪ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০১২ 
  8. "The political counterpart of PIRA": entry under Provisional Sinn Féin, W.D. Flackes & Sydney Elliott (1994) Northern Ireland: A Political Directory 1968-1993. Belfast: Blackstaff Press
  9. Niall Ó Dónaill (১৯৭৭)। (advisory ed. Tomás de Bhaldraithe), সম্পাদক। Foclóir Gaeilge-Béarla [Irish-English Dictionary] (Irish ভাষায়)। Dublin: An Gúm। পৃষ্ঠা 533, 1095। আইএসবিএন 1-85791-037-0 
  10. MacDonncha (2005), p.12
  11. "The first Sinn Fein party"। Multitext.ucc.ie। ২০১০-০৫-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৪-২০ 
  12. Griffith, The Resurection of Hungary, p. 161
  13. Brian Feeney, Sinn Féin: a hundred turbulent years, pp. 49-50
  14. Feeney, pp. 52-4
  15. Murray, Gerard; Tonge, Jonathan (২০০৫)। Sinn Féin and the SDLP: From Alienation to Participation। Dublin: The O'Brien Press। পৃষ্ঠা 153আইএসবিএন 0-86278-918-4 
  16. Murray and Tonge (2005), p. 155.
  17. "Irish government allegations about IRA army council"। London: Independent.co.uk। ২০০৫-০২-২১। ২০১০-০৫-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৪-২০ 
  18. SF leadership denies army council membership.[অকার্যকর সংযোগ]
  19. Brendan O'Brien, the Long War, the IRA and Sinn Féin (1995) ISBN 0-86278-359-3 p128