শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন

শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন সামাজিক বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যা অহিংসহিংসাত্মক, উভয় ধরনের আচরণ এবং তাদের কার্যাবলী নির্ণয় ও বিশ্লেষণ করে। এছাড়া সংঘর্ষের বিভিন্ন কাঠামোগত গঠন, যেগুলো মানুষের সঠিক উন্নয়নের পথে প্রধান অন্তরায়, সেগুলো নিয়েও এ শাখাটি আলোচনা করে। শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়নের একটি শাখা- শান্তি অধ্যয়ন একটি সমন্বিত অধ্যয়ন ব্যবস্থা। শান্তি অধ্যয়নের মূল উদ্দেশ্য হল শান্তিপূর্ণ উপায়ে যেকোন সংঘর্ষের তীব্রতা কমিয়ে আনা,সমাধান করা অথবা সম্পূর্ণ নির্মূল করা। এর আরেকটি উদ্দেশ্য হল সংঘর্ষে জড়িত প্রত্যেক পক্ষের 'বিজয়' নিশ্চিত করা। শান্তি অধ্যয়ন সমর অধ্যয়নের বিপরীত। সমর অধ্যয়নের উদ্দেশ্য হল হিংসাত্মক পদ্ধতিতে সংঘর্ষের সমাধান করা এবং জড়িত এক বা একাধিক পক্ষের (সকল পক্ষের নয়) বিজয় নিশ্চিত করা। রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ভূ-রাজনীতি, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, সমাজবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, ইতিহাস, মানবাধিকার, আন্তর্জাতিক আইন, নৃবিজ্ঞান, ধর্মতত্ত্ব, জেন্ডার অধ্যয়নসহ আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন কাজ করে।

ইতিহাস সম্পাদনা

শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন একই সাথে একটি পাঠক্রম ও গবেষণার বিষয়বস্তু। পাঠক্রমের অংশ হিসেবে বিষয়টি শিক্ষকদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অধ্যয়ন করানো হয়। গবেষণার অংশ হিসেবে গবেষকগণ শান্তির নব নব দিক উন্মোচন করেন এবং সংঘর্ষ নিরসনের উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন।

পাঠক্রমের অংশ হিসেবে শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন সম্পাদনা

পৃথিবীর প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ বহু আগে থেকেই শান্তি বিষয়ে অধ্যয়ন করে আসছেন। যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে মার্কিন কলেজগুলোতে ক্যাম্পাস ক্লাবের অদলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শান্তি অধ্যয়নের ব্যাপারে সর্বপ্রথম উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ বছরে সুইডেনে একই ধরনের আন্দোলন পরিলক্ষিত হয়। পরবর্তীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমন আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এ সমস্ত কার্যকলাপের বড় অংশ জুড়ে ছিল শিক্ষার্থীদের পাঠচক্র বা আলোচনা সভা। কোন ধরনের আনুষ্ঠানিক পাঠ্যক্রমের ব্যবস্থা ছিল না।

বাংলাদেশে বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালসে 'শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন' পড়ানো হচ্ছে।[১]

যুদ্ধ সম্পর্কে পশ্চিমা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯১৯ সালে প্যারিস শান্তি সম্মেলনে ইউরোপের ভবিষ্যত নির্ধারণের জন্য ফ্রান্স, ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রনায়কগণ (যথাক্রমে জর্জ ক্লেমাঁসো, ডেভিড লয়েড জর্জউড্রো উইলসন) একত্রিত হন। শান্তিস্থাপনের লক্ষ্যে উড্রো উইলসন তার বিখ্যাত চৌদ্দ দফা ঘোষণা করেন। ঘোষণায় তিনি ইউরোপীয় সাম্রাজ্যগুলো ভেঙে ফেলে জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টি এবং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ (লিগ অব নেশন্স) প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন।

গবেষণার অংশ হিসেবে শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন (পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজ) – সাবজেক্ট রিভিউ | Shikkha Web Blog"শিক্ষা ওয়েব ব্লগ। ২০২২-০১-০১। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-০৪