রাম কোটা বা বড় কাঠবিড়ালি[৩] (বৈজ্ঞানিক নাম: Ratufa bicolor) যা বৃহৎ কাঠবিড়ালি নামেও পরিচিত Sciuridae পরিবারভুক্ত এক ধরনের স্তন্যপ্রায়ী প্রাণী। এদের সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায়না। আবদ্ধাবস্থায় ১৯ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। বিশ্বে এরা প্রায় বিপদগ্রস্ত বলে বিবেচিত। পুরো বিশ্বেই দিনে দিনে এদের সংখ্যা কমে আসছে।[৪]

রাম কোটা
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: Mammalia
বর্গ: Rodentia
পরিবার: Sciuridae
গণ: Ratufa
প্রজাতি: R. bicolor
দ্বিপদী নাম
Ratufa bicolor
(Sparrman, 1778)
Subspecies[২]
  • R. b. bicolor
  • R. b. condorensis
  • R. b. felli
  • R. b. gigantea
  • R. b. hainana
  • R. b. leucogenys
  • R. b. melanopepla
  • R. b. palliata
  • R. b. phaeopepla
  • R. b. smithi
Black giant squirrel range
প্রতিশব্দ

Tennentii, source: Layard, in Blyth, 1849

আকার সম্পাদনা

রাম কোটা লম্বায় এক মিটারের বেশি হতে পারে। মাথা-দেহ ৪২ সেন্টিমিটার ও লেজ ৬০ সেন্টিমিটার হতে পারে। ওজন প্রায় দুই কেজির মত। দেহের ওপরটা গাঢ় বাদামি থেকে কালো রঙের। গাল, গলা, বুক-পেট ও চার হাত-পায়ের ভেতরের দিকটা হালকা হলুদ বা সাদা রঙের। লম্বা লেজ কালো ও ঝোপালো। কান দুটো বেশ বড় ও কালো। কানে গোছার মতো চুল থাকে।[৪]

খাদ্য সম্পাদনা

রাম কোটার খাদ্য তালিকায় আছে বিভিন্ন ধরনের ফল, পাতা, অঙ্কুর ও গাছের ছাল। ফলের বীজ ছড়িয়ে বংশবৃদ্ধিতে সাহায্য করে।[৪]

স্বভাব সম্পাদনা

রাম কোটা বৃক্ষবাসী প্রাণী। তাই সহজে মাটিতে নামে না। লাজুক এবং ভীতু ধরনের। দিনের বেলা সক্রিয় থাকে। সাধারণত একাকী থাকে, কখনোবা জোড়ায় দেখা যায়। উঁচু ও কাঁপা কাঁপা স্বরে ডাকে।[৪]

বাসা সম্পাদনা

রাম কোটা বিভিন্ন গাছে একাধিক বাসা বানায়। পাতা ও ছোট ছোট কাঠি জড়ো করে বড় ও গোলগাল বাসা গড়ে। বাসার ভেতরে অন্দরমহল থাকে। ঢোকার পথ থাকে এক পাশে।[৪]

প্রজনন সম্পাদনা

মার্চ-সেপ্টেম্বর রাম কোটার প্রজননকাল। স্ত্রী রাম কোটা ৩২ দিন গর্ভধারণের পর প্রায় ৭৫ গ্রাম ওজন ও ২৩ সেন্টিমিটার লম্বা একটি বাচ্চার জন্ম দেয়। তবে কখনো দুটি বাচ্চাও হতে পারে। স্ত্রী বছরে দুবার বাচ্চা দেয়। বাচ্চারা প্রায় তিন বছর বয়সে যৌবনপ্রাপ্ত হয়।[৪]

অবস্থা সম্পাদনা

রাম কোটা আইইউসিএন লাল তালিকায় প্রায়-বিপদগ্রস্ত[১] এবং বাংলাদেশে অপ্রতুল তথ্য শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে।[৫] বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Walston, J., Duckworth, J. W., Molur, S. (2008). Ratufa bicolor. 2008 IUCN Red List of Threatened Species. IUCN 2008. Retrieved on 6 January 2009.
  2. Thorington, R.W., Jr.; Hoffmann, R.S. (২০০৫)। "Ratufa bicolor"। Wilson, D.E.; Reeder, D.M। Mammal Species of the World: a taxonomic and geographic reference (3rd সংস্করণ)। The Johns Hopkins University Press। পৃষ্ঠা 754–818। আইএসবিএন 0-8018-8221-4ওসিএলসি 26158608 
  3. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৯১
  4. বিরল রাম কোটা[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], আ ন ম আমিনুর রহমান, দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ।
  5. জিয়া উদ্দিন আহমেদ (সম্পা.), বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: স্তন্যপায়ী, খণ্ড: ২৭ (ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ২০০৯), পৃ. ৩২-৩৩।

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা