ম্যাকোর্নি পেঙ্গুইন

পাখির প্রজাতি

ম্যাকোর্নি পেঙ্গুইন (ইংরেজি: Macaroni Penguin) Eudyptes chrysolophus) হল একধরনের পেঙ্গুইন প্রজাতি যারা সাবআন্ট্রাকটিকআন্ট্রাকটিক পেনিনসুলা অঞ্চলে বসবাস করে। এরা রয়্যাল পেঙ্গুইন দের সাথে অনেকটা একইরকম মিলের এবং কেউ কেউ এদেরকে একই উপজাতি বলে ধরে। এদের একটা হলুদ রঙের ঝুঁটি আছে। এদের মুখ এবং ওপরের অংশ কালো হয় এবং আস্তে আস্তে তা নিচের দিকে সাদা হয়ে যায়। প্রাপ্তবয়স্ক ম্যাকোর্নি পেঙ্গুইনদের ওজন হয় ৫.৫ কেজি (১২ পাউন্ড) এবং এরা প্রায় ৭০ সেমি (২৮ ইঞ্চি) লম্বা হয়। পুরুষ এবং মহিলা পেঙ্গুইনরা মোটামুটি একইরকম দেখতে হয় কিন্তু পুরুষরা মহিলাদের থেকে কিছুটা বেশি লম্বা এবং শক্তিশালী হয় এবং পুরুষ পেঙ্গুইনদের ঠোঁট কিছুটা বড় হয় মহিলাদের থেকে। সব পেঙ্গুইনদের মতোই এরাও উড়তে পারে না। এদের শরীর হয় মসৃণ, পাখনাগুলো চ্যাপ্টা এবং বলিষ্ঠ ফ্লিপারে পরিণত হয়েছে সামুদ্রিক আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে নেওয়ার জন্য। এদের চোখ লাল রঙের হয়।

ম্যাকোর্নি পেঙ্গুইন
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: পক্ষী
বর্গ: Sphenisciformes
পরিবার: Spheniscidae
গণ: Eudyptes
প্রজাতি: E. chrysolophus
দ্বিপদী নাম
Eudyptes chrysolophus
(Brandt, 1837)
ম্যাকোর্নি পেঙ্গুইনের বিস্তার
প্রজনন ক্ষেত্র লাল রঙে চিহ্নিত
প্রতিশব্দ

Catarractes chrysolophus Brandt, 1837[২]
Eudyptes saltator (Stephens, 1826)

এদের প্রধান খাদ্য হল মাছ এবং তা ছাড়াও এরা কবচী, ক্রিল, স্কুইড ইত্যাদিও খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। এই পাখিরা বছরে একবার পালক ত্যাগ করে। তখন তারা ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ সমুদ্রতটে কাটায় এবং তারা নির্মোচন করবার পরে সমুদ্রে ফিরে যায়। এই পেঙ্গুইনদের প্রজনন ক্ষেত্র সবথেকে বৃহত্তম এবং ঘন অন্যান্য প্রজাতিদের তুলনায়। গরমকালে প্রজননের পরে তারা ৬ মাস সমুদ্রে কাটাবার জন্য যায়। ২০০৯ এর এক সমীক্ষায় জানা গাছে যে এই পেঙ্গুইনরা কারগুলেন দ্বীপপুঞ্জ থেকে ১০,০০০ কিলোমিটার পরিযান করে ভারত মহাসাগরে আসে। ১৮ মিলিয়ন হল এদের জনসংখ্যা এবং এই প্রজাতিটি পেঙ্গুইনদের মধ্যে সবথেকে বেশি জন্সংখ্যাপূর্ণ। কিন্তু ১৯৭০ সাল থেকে এদের সংখ্যা কমে আস্তে শুরু করে এবং এদেরকে বিপজ্জনক প্রজাতির মধ্যে ধরা হয়।

শ্রেণিবিন্যাস সম্পাদনা

একজন জার্মান ন্যাচেরালিস্ট জোহান ফ্রেডরিক ভন ব্র্যান্ডট ১৮৩৭ সালে এই ম্যাকোর্নি পেঙ্গুইন সম্বন্ধে বর্ণনা দেন।[৩] এটা পেঙ্গুইনের ৬ টা প্রজাতির মধ্যে একটি উপজাতি যার নাম হল Eudyptes, এদেরকে একইসাথে বলে ঝুঁটিওয়ালা পেঙ্গুইন। গণের এই নামটি আবিষ্কৃত হয়েছে প্রাচীন গ্রিক শব্দ eu মানে "ভালো" এবং dyptes মানে "ডুবুরি" এর থেকে। এর বিজ্ঞানসম্মত নামটি নেওয়া হয়েছে প্রাচীন গ্রিক শব্দ chryse মানে "সোনালী", এবং lophos মানে "ঝুঁটি" এর থেকে।[৪]

এই প্রচলিত নামটি নেওয়া হয়েছিল ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ থেকেই ঊনবিংশ শতাব্দীতে। ইংরেজ নাবিকরা এদের বিখ্যাত ঝুঁটির জন্য এদেরকে এই নামে ডাকে।[৫] ম্যাকোর্নিসম হল ইংল্যান্ডের একটি প্রচলিত শব্দ যা ওখানকার অষ্টাদশ শতাব্দীর ফ্যাশনকে বোঝায়। যে মানুষ এই ফ্যাশনকে রপ্ত করে তাদেরকে ম্যাকোর্নি বলে ডাকা হয়, যা একটি প্রচলিত গান Yankee Doodle নামে পরিচিত।[৬]

চিত্রশালা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. BirdLife International (২০১৩)। "Eudyptes chrysolophus"বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা। সংস্করণ 2013.2প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৩ 
  2. "Species Eudyptes chrysolophus (Brandt, 1837)"Australian Biological Resources Study: Australian Faunal Directory। Canberra, ACT: Department of the Environment, Water, Heritage and the Arts, Commonwealth of Australia। ৯ অক্টোবর ২০০৮। ৬ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মার্চ ২০১০ 
  3. Williams (1995) p. 211
  4. Liddell, Henry George and Scott, Robert (১৯৮০)। A Greek-English Lexicon (Abridged Edition)। United Kingdom: Oxford University Pressআইএসবিএন 0-19-910207-4 
  5. J. Simpson, E. Weiner (eds), সম্পাদক (১৯৮৯)। "Macaroni"। Oxford English Dictionary (2nd সংস্করণ)। Oxford: Clarendon Press। আইএসবিএন 0-19-861186-2 
  6. Steele, Valerie (১৯৯৮)। Paris Fashion: A Cultural History। Berg Publishers। পৃষ্ঠা 21–32। আইএসবিএন 978-1-85973-973-0 

উদাহৃত টেক্সট সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা