মহাশোল

পাহাড়ি খরস্রোতা স্বচ্ছ জলের মাছ

মহাশোল (ইংরেজি: Mahseer) একটি বিলুপ্তপ্রায় মাছ। পাহাড়ি খরস্রোতা স্বচ্ছ জলের নদীতে মহাশোল মাছের আবাস। নদীর পাথর-নুড়ির ফাঁকে ফাঁকে 'পেরিফাইটন' নামের এক রকমের শ্যাওলা জন্মে। এগুলোই মহাশোলের প্রধান খাদ্য। মহাশোল সর্বোচ্চ ১৫ মিটার গভীর জলে চলাচল করতে পারে। জলের উষ্ণতা ১৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাদের জীবনধারণের পক্ষে সহায়ক। মহাশোল দেখতে অনেকটা মৃগেল মাছের মতো। তবে এর আঁশগুলো আরও বড়। পরিণত মাছের আঁশ শক্ত, উজ্জ্বল সোনালি রঙের ও দীপ্তিমান। পাখনা ও লেজ রক্তিম। নাকের সামনে ছোট্ট দুটি গোঁফের মতো আছে। সব মিলিয়ে দেখতে খুব সুন্দর। আমাদের মিঠাপানির মাছের মধ্যে মহাশোল স্বাদেও সেরা।

মহাশোল
Mahseer
Tor tambroides
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Chordata
শ্রেণী: Actinopterygii
বর্গ: Cypriniformes
পরিবার: Cyprinidae
উপপরিবার: Cyprininae
গণ: Tor
Gray, 1834

Neolissochilus
Rainboth, 1985
Naziritor
Mirza & Javed, 1985

Species

See text for species.

বাংলাদেশের মহাশোলের অবস্থা সম্পাদনা

বাংলাদেশে মহাশোলের দুটি প্রজাতি আছে যাদের নাম সোনালী মহাশোল (বৈজ্ঞানিক নাম Tor tor) এবং লাল-পাখনা মহাশোল (বৈজ্ঞানিক নাম Tor putitora)। প্রজাতি দুটি মহাবিপন্ন। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের রক্ষিত বন্যপ্রাণীর তালিকার তফসিল ২ অনুযায়ী এই প্রজাতি দুটি সংরক্ষিত।[১] তবে এ মাছের নতুন আরেকটি প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে। এ প্রজাতিটির (বৈজ্ঞানিক নাম Tor barakae) । বান্দরবান জেলার সাংগু নদীতে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিজ্ঞানীরা এ প্রজাতিটির সন্ধান পেয়েছেন। এই প্রজাতির সন্ধান পাওয়ায় এখন দেশে মহাশোল মাছের প্রজাতির সংখ্যা বেড়ে তিনটি হয়েছে।

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে কংস নদীসোমেশ্বরী নদী মহাশোলের আবাস। এই নদ-নদীর উৎসমুখ এখন প্রায় বন্ধ। শুকনো মৌসুমে নদী দুটি প্রায় শুকিয়ে যায়। বসবাস ও বংশবৃদ্ধির জায়গা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মহাশোল ধীরে ধীরে কমতে থাকে। একপর্যায়ে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে পড়ে। সোমেশ্বরী ও কংস ছাড়াও বিচ্ছিন্নভাবে দু-একবার সাঙ্গু নদেও মহাশোল পাওয়া গেছে। তবে হাওর, বিল-ঝিল বা অন্য কোনো নদ-নদীতে মহাশোল পাওয়ার রেকর্ড নেই বাংলাদেশের মৎস্য অধিদপ্তরের কাছে।

বর্তমানে এদের কৃত্রিম প্রজনন ও উৎপাদন গবেষণায় মৎস গবেষণা ইন্সটিটিউট সফল হয়েছে।[২][৩][৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জুলাই ১০ ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা- ১১৮৫১৩
  2. "হারিয়ে যাওয়া সোনালি মহাশোল মাছের কৃত্রিম প্রজনন"www.shomoyeralo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-০৭ 
  3. সংবাদদাতা, নিজস্ব; ময়মনসিংহ (২০২২-০৪-২৭)। "এবার শোল মাছের কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবন করল বিএফআরআই"দ্য ডেইলি স্টার বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-০৭ 
  4. "প্রজনন কৌশল আবিষ্কার করে নদ-নদীর যেসব মাছ এখন চাষ করা হচ্ছে"বিবিসি বাংলা। ২০২২-০৩-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-০৭ 

তিস্তা নদীতে দেখা মিলে এই মাছের তবে নিতান্তই কম।

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা