বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন একটি স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা যা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে। সংস্থাটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের জাতীয় পর্যটন সংস্থা হিসেবে এটি পরিচিত ও জাতীয় অর্থনীতিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন
বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এর লোগো
বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এর লোগো
আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের নামফলক
গঠিত১৯৭৩
সদরদপ্তরআগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকা, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা, বাংলাদেশ
যে অঞ্চলে কাজ করে
বাংলাদেশ
দাপ্তরিক ভাষা
বাংলা
চেয়ারম্যান
মোঃ রাহাত আনোয়ার
ওয়েবসাইটwww.parjatan.gov.bd

ইতিহাস সম্পাদনা

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশের যোগাযোগপর্যটন খাত অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ছিল। আগস্ট, ১৯৭৫ সালে পৃথক একটি মন্ত্রণালয় হিসেবে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সৃষ্টি করা হয়। জানুয়ারি, ১৯৭৬ সালে এটি পুনরায় যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একটি বিভাগে পরিণত হয়। ডিসেম্বর, ১৯৭৭ সালে পৃথকভাবে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় খোলা হয়। ২৪ মার্চ, ১৯৮২ সালে এ মন্ত্রণালয়কে বিলুপ্ত করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যাস্ত করা হয়। এরপর ১৯৮৬ সাল থেকে উক্ত মন্ত্রণালয়কে পুণঃপ্রতিষ্ঠা করে অদ্যাবধি বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন নামে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে।[১]

গঠন প্রক্রিয়া সম্পাদনা

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের পরিচালনা পরিষদ ১৯৭৩ সালে গঠন করা হয়। এতে একজন সভাপতি এবং তিনজন পূর্ণাঙ্গকালীন পরিচালক ছিলেন। ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন গঠনের অধ্যাদেশ নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালনা পরিষদ নিম্নলিখিত কার্যক্রম সম্পাদন করবে:-[২][৩]

  • সংস্থার মাধ্যমে পর্যটন খাতের উন্নয়ন, প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাসহ পর্যটনের সাথে সংশ্লিষ্ট যাবতীয় কার্যাদি প্রণয়ন করবে।
  • পর্যটকদের আকর্ষণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় যাতায়াত, আবাসন ব্যবস্থা এবং সেবা প্রদানের নীতিমালা প্রণয়ন করবে।
  • বিদেশ কিংবা স্থানীয় পর্যটকদের জন্যে আতিথেয়তা এবং তথ্য সংক্রান্ত বিষয়াবলী প্রদান করবে।
  • জনগণের মাঝে পর্যটন সম্পর্কীয় সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
  • পর্যটনের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের জন্যে নির্দেশনা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবে।

কার্যাবলী সম্পাদনা

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন তাদের কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য নিম্নরূপ কার্যাবলী সম্পন্ন করে:-[৪]

  • পর্যটন শিল্পকে উৎসাহিতকরণ ও এর উন্নয়ন ঘটানো।
  • বাংলাদেশে পর্যটনের উপযোগী প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সৃষ্টি করা।
  • পর্যটনের সাথে সম্পৃক্ত সকল ধরনের কার্যাবলীতে সংযুক্ত রাখা।
  • অবকাঠামো নির্মাণ, সুসজ্জ্বিতকরণ, হোটেল, রেস্তোরাঁ, বিশ্রামাগার, বনভোজনের জন্য এলাকা নির্ধারণ, প্রচারণা, থিয়েটার, বিনোদন পার্ক এবং পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
  • পর্যটনের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের জন্যে নির্দেশনা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন (সংশোধন) বিল-২০২২ সম্পাদনা

২০২২ সালের ৭ জুন ‘বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন (সংশোধন) বিল-২০২২’ সংসদে পাস হয়।[৫] সংশোধিত বিলে এর অনুমোদিত মূলধন ১৫ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার কোটি টাকা করা হয় এবং পরিশোধিত মূলধন ৪০০ কোটি টাকা করা হয়। সদস্য সংখ্যা ৪ জন থেকে বাড়িয়ে ১১ জন করা হয়েছে। চেয়ারম্যান হবেন মন্ত্রণালয়ের সচিব।[৬] ১৯৭২ সালের এই আইনে পর্যটকের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘কেউ নিজের ঘর থেকে ভ্রমণ বা শ্রান্তি বিনোদনের জন্য ২৪ ঘণ্টার বেশি কিন্তু ছয় মাসের কম সময়ে আরেক জায়গায় থাকলে তিনি পর্যটক হিসেবে গণ্য হবেন’। সংশোধিত বিলে এই সময় এক বছর করা হয়েছে। তবে চাকরির জন্য থাকলে তাকে পর্যটক হিসেবে ধরা হবে না।[৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট, সংগ্রহ: ৩১ মে, ২০১২ইং
  2. "বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন Order 1972" (পিডিএফ)। Ministry of Law, Justice& Parliament Affairs। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-০১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "Objectives of National Tourism Organization (NTO):"। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। ২০১০-০২-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-০১ 
  4. "লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য"। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০১৮ 
  5. "সংসদে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন (সংশোধন) বিল ২০২২ পাস"বাসস। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  6. "পর্যটন করপোরেশন বিল পাস, বাংলা ট্রিবিউন, ৭ জুন ২০২২"। ৮ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০২২ 
  7. বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন বিল পাস, বাংলা নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম, ৭ জুন ২০২২