ফেলিক্স বমগার্টনার

ফেলিক্স বমগার্টনার অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভার। অস্ট্রীয় সেনাবাহিনীতে থাকার সময়ই তিনি ছিলেন বিশেষজ্ঞ প্যারাস্যুটিস্ট। তিনি ১৯৯৯ সালে কুয়ালালামপুরের পেট্রোনাস টাওয়ারের ওপর থেকে লাফান। সবচেয়ে উঁচু ভবন থেকে লাফানোর বিশ্বরেকর্ড এটি। ২০০৩ সালে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে তিনি বিশেষভাবে তৈরি কার্বন ফাইবারের ডানা ব্যবহার করে আকাশে উড়ে ইংলিশ চ্যানেল পার হন স্কাই ডাইভ দিয়ে।

ফেলিক্স বমগার্টনার
Felix Baumgartner
ডাকনামB.A.S.E. 502
ভয়হীন ফেলিক্স
জন্ম (1969-04-20) ২০ এপ্রিল ১৯৬৯ (বয়স ৫৪)
Salzburg, অস্ট্রিয়া

লাফ দেয়ার আগে বলেন, ‘জানি পুরো বিশ্বই এখন আমাকে দেখছে। হায়, আমি যা দেখছি, সেটা যদি আপনারাও দেখতে পেতেন! আপনি যে কত ক্ষুদ্র, সেটা উপলব্ধি করার জন্য আপনাকে কখনো কখনো অনেক উঁচুতে উঠে আসা উচিত।’[৩]

রেড বুল স্ট্র্যাটস মিশন সম্পাদনা

 
Homenaje a Baumgartner en Viena.

বিশেষভাবে তৈরি পোশাক পরে ৩৯ কিলোমিটার ওপর থেকে লাফিয়ে নামেন পৃথিবীর মাটিতে। বমগার্টনার প্রথম মানুষ হিসেবে কোনো ধরনের বাহন ছাড়াই শব্দের গতি অতিক্রম করে গেছেন। ফ্রি ফল ডাইভিংয়ের একপর্যায়ে তার গতি ছিল ঘণ্টায় ১৩৪২ দশমিক ১ কিলোমিটার (৮৩৩ দশমিক ৯ মাইল)। ১৪ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোর রসওয়েল ইন্টারন্যাশনাল এয়ার সেন্টারে ‘রেড বুল স্ট্র্যাটস’ নামের এই সফল মিশনে লেখা হলো আরও দুটো রেকর্ড। হিলিয়াম গ্যাসে ভর্তি মানুষ বহনকারী বেলুন উঠল সর্বোচ্চ উচ্চতায়—৩৯ হাজার ৪৫ মিটারে (এক লাখ ২৮ হাজার ১০০ ফুট)। এত ওপর থেকে এর আগে লাফায়নি কেউ। দীর্ঘতম লাফের রেকর্ডও তাই হয়ে গেল। দীর্ঘতম ফ্রি ফল (প্যারাস্যুট বন্ধ থাকা অবস্থায় লাফ) রেকর্ড পারেননি। তার ফ্রি ফলের স্থায়িত্ব ছিল চার মিনিট ১৯ সেকেন্ড। মাত্র ১৭ সেকেন্ডের জন্য ১৯৬০ সালে দেওয়া গুরু জোসেফ কিটিংগারের ফ্রি ফলের রেকর্ডটি ভাঙতে পারেননি বমগার্টনার। বমগার্টনারের লাফ সরাসরি ইউটিউবে দেখেছে ৮০ লাখ মানুষ। একই সঙ্গে সরাসরি (লাইভ স্ট্রিমিং) কোনো ঘটনা এত মানুষ এর আগে কখনোই ইউটিউবে দেখেনি।[৩][৪]

স্বপ্ন সম্পাদনা

২০১০ সালের জানুয়ারিতে বমগার্টনার জানান, তিনি লাফ দিতে চান আকাশের সর্বোচ্চ উচ্চতা থেকে। তার এই স্বপ্ন পূরণে আর্থিক সহায়তা দিতে এগিয়ে আসে রেড বুল। ‘রেড বুল’-এর সঙ্গে স্ট্র্যাটসফিয়ারের (ভূপৃষ্ঠ ছাড়িয়ে ১০ থেকে ৬০ কিলোমিটারের মধ্যবর্তী শূন্যস্থান) ‘স্ট্র্যাটস’ নিয়ে নামকরণ করা হয় এই মিশনের। এ বছর মার্চ ও জুলাইয়ে দুটো প্রস্তুতিমূলক লাফ দেন বমগার্টনার। প্রথমবার সফলভাবে লাফিয়েছেন ২১ হাজার ৮১৮ মিটার। দ্বিতীয়বার ২৯ হাজার ৪৬০ মিটার। দ্বিতীয় লাফের ফ্রি ফলের সময় তার সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ৮৬৩ কিলোমিটার। সাধারণত স্কাই ডাইভারদের ফ্রি ফলের গতি ৩২০ কিলোমিটারের মতো হয়ে থাকে। কিন্তু যত ওপর থেকে লাফ দেওয়া হবে, ততই এই গতি বাড়বে। কারণ বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব ওপরের দিকে ততই কম। ফলে বায়ুর ঘর্ষণজনিত গতিরোধও হবে কম। পুরো মিশন দেখভালের দায়িত্ব নিলেন কিটিংগার নিজে। এর আগে ৩১ হাজার ৩০০ মিটার থেকে লাফিয়েছিলেন কিটিংগার, ১৯৬০ সালে। দীর্ঘতম ফ্রি ফলের রেকর্ডটিও তার। গুরুর পদধূলি নিয়ে শিষ্য নামলেন গুরুকে ছাপিয়ে যাওয়ার মিশনে। বেলুনে চড়ে আকাশে উড়াল দিলেন বমগার্টনার। আড়াই ঘণ্টার মতো লাগল কাঙ্ক্ষিত উচ্চতায় পৌঁছাতে। সবকিছু পরীক্ষা করে লাফানোর জন্য প্রস্তুতি নিলেন। মাটিতে উদ্বেগের দৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকা কিটিংগারের কণ্ঠস্বর ভেসে এল, ‘ক্যামেরাগুলো চালু করো। আমাদের গার্ডিয়ান অ্যাঞ্জেল তোমাকে রক্ষা করবেন।’ স্যালুট ঠুকে বমগার্টনার দিলেন লাফ। ৪২ সেকেন্ড পর এল সেই মুহূর্তটি। কোনো বাহন ছাড়াই শব্দের গতিসীমা অতিক্রম করে গেলেন তিনি। ক্যাপসুল থেকে লাফানোর ১০ মিনিটের মাথায় নিউ মেক্সিকোর মাটি স্পর্শ করেন বমগার্টনার।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. http://en.m.wiktionary.org/wiki/Appendix:Jewish_surnames
  2. http://www.themodernnovel.com/indian/desai/bombay.htm[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. বমগার্টনারের সেই লাফ[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ],রাজীব হাসান, দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ০২-১১-২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
  4. ইউটিউবে সেই লাফ দেখে ৮০ লাখ দর্শক[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ১৬-১০-২০১২ খ্রিস্টাব্দ।

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

  Felix Baumgartner