প্রেমপত্র হলো প্রিয়জনের কাছে লিখিত উপায়ে ভালোবাসা প্রকাশ করার একটি পন্থা। হাতে বা অন্য কোন মাধ্যমে, যে ভাবেই দাওয়া হোক না কেন, প্রেমপত্রে মনের অনুভূতি ব্যক্ত হয়ে থাকে।

দ্য লাভ লেটার – জোহানেস ভার্মার
ওপেনিং এ লাভ লেটার - আমেদেও সিমোনেত্তি

প্রেমপত্রের ইতিহাস সম্পাদনা

প্রেমপত্রের ইতিহাস সম্ভবত সভ্যতার মতই প্রাচীন। প্রাচীন গ্রীক, রোমান, চীনা সভ্যতার দলিলে প্রেমপত্র প্রদানের প্রচলনের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তবে সেগুলো খুবই সরল ভাষায় লেখা। মধ্যযুগীয় প্রেমপত্রগুলোতে লেখনীর দক্ষতার ক্রমবিকাশ লক্ষ্য করা যায়। মধ্যযুগে প্রেমপত্র আদান-প্রদানের প্রধান বাহক ছিল পোষ মানানো কবুতর। প্রেমিক-প্রেমিকা কবুতরের পায়ে বেঁধে প্রিয় মানুষটির কাছে মনের কথা কাগজে বন্দি করে পাঠিয়ে দিত।

আধুনিক প্রেমপত্র সম্পাদনা

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের আগে এই প্রেমপত্রই ছিল প্রেমিক-প্রেমিকাদের যোগাযোগের প্রধান উপায়, বিশেষ করে যুদ্ধের সময়-যখন তাদের মধ্যে দূরত্ব অনেক বেশি। ঐ সব সময়ে যোদ্ধারা উৎসুক হয়ে অপেক্ষা করে থাকতো তাদের প্রিয় মানুষটির পত্রের অপেক্ষায়।
এমনকি এই ইলেক্ট্রনিক যুগেও প্রেমপত্র তার ভূমিকা ঠিকই পালন করে যাচ্ছে। কাগুজে লেখার চেয়ে এখন মানুষ ই-মেইলের মাধ্যমেই বেশি প্রেমপত্র বিনিময় করে থাকে। তা সহজেই বোঝা যাবে প্রেমপত্র লেখার উপদেশমূলক ওয়েবসাইটগুলো দেখলে।
তবে কাগুজে লিখিত প্রেমপত্রের আবেদন এখনও কমেনি। প্রিয়জনের কাছ থেকে পাওয়া চিঠি পড়ার অনুভূতি সবসময়ই অন্যরকম।

ধরন ও কাঠামো সম্পাদনা

প্রেমপত্র লেখার কোন নির্দিষ্ট কাঠামো নেই। একজন যে উপায়ে তার মনের অনুভূতিগুলো লিপিবদ্ধ করতে পারবে তার সেভাবেই প্রেমপত্র লেখা উচিত। সেকারণে প্রেমপত্রের ধরন বিভিন্ন। ঐতিহাসিক ভাবে সমাদৃত ধরন হলো কাব্যিক উপায়ে লেখা। উইলিয়াম শেকসপিয়রের সনেটগুলো মাঝেমাঝেই আবেগী পত্রের উদাহরণ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।
একটি সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার সময় প্রেমপত্র ফেরত দাওয়া রীতি প্রচলিত আছে।

ঐতিহাসিক প্রেমপত্র সম্পাদনা

ইতিহাসের অনেক বিখ্যাত মানুষই তার প্রিয়জনের কাছে প্রেমপত্র লিখেছেন। তাদের মধ্যে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট, লর্ড বাইরন, বেথোভেম, উইনস্টন চার্চিল, ভিক্টর হুগো, জন কিটস[১] –এর প্রেমপত্র দলিল হিসেবে আজও রয়ে গেছে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা