পর্বতারোহণ একধরনের খেলা, শখ বা পেশা। বিভিন্ন উচু পর্বতের শিখরে আরোহণের চেষ্টা থেকে পর্বতারোহণের সূচনা হয়েছিল। এটি ধীরে ধীরে একটি দুঃসাহসিক খেলা হিসেবে বিকাশ লাভ করে। তিন ধরনের পর্বতারোহণ রয়েছে: রক-ক্রাফট, স্নো ক্র্যাফট এবং স্কিয়িং। এগুলো নির্ভর করে পর্বতের পৃষ্ঠের উপর। পর্বতারোহণের জন্য অভিজ্ঞতা, শারীরিক সক্ষমতা এবং কারিগরী এবং সতর্কতামূলক জ্ঞান প্রয়োজন।[২]

২০০৪ সালে নেপালের পূর্বে আইল্যান্ড পিকের ৬,১৬০ মি (২০,২১০ ফু)[১] উচ্চ চূড়ায় এক পর্বতারোহী উঠছেন।

পর্বতারোহণকে অনেক সময় অ্যালপিনিজম বলা হয়ে থাকে। বিশেষ ইউরোপীয় ভাষাসমূহের ক্ষেত্রে, এর অর্থ উচ্চ পর্বতশৃঙ্গে আরোহণ, যেমন- আল্পস পর্বতমালা। এধরনের দক্ষতার একজন পর্বতারোহীকে বলা হয় অ্যালপিনিস্ট। ঊনবিংশ শতকে অ্যালপিনিজম কথাটি প্রচলিত হয়। এর অর্থ নিছক আনন্দের জন্য পাহাড়ে ওঠা; কোন বিশেষ উদ্দেশ্য সাধন যেমন- ধর্মীয় বা পশুশিকারের জন্য নয়।

ইন্টারন্যশনাল মাউন্টেনারিং এন্ড ক্লাইম্বিং ফেডারেশন পর্বতারোহণ বিষয়ক বিশ্ব তত্ত্বাবধায়ক সংস্থা। এই সংস্থা পর্বতারোহণ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় যেমন পর্বতারোহণ নিরাপত্তা, প্রশিক্ষণ, বরফাবৃত পাহাড়ে ওঠা ইত্যাদি নিয়ে বিশ্বব্যাপী কর্মসূচি পালন করে থাকে।[৩]

কৌশল সম্পাদনা

 
ফ্রান্সের অ্যাইগুইলি মিদি পর্বতের উঁচু ঢাল বেয়ে নিচে নামছেন পর্বতারোহীরা

তুষার সম্পাদনা

তুষার আবৃত বা তুষারপাত অবস্থায় পর্বতারোহণের ক্ষেত্রে পায়ে হেটে উঠতে হয়। এধরনের আরোহণের ক্ষেত্রে ক্র্যাম্পন নামের একধরনের বিশেষ জুতার দরকার। ক্র্যাম্পনে ৮-১৪টি স্পাইক থাকে যা পর্বতারোহীর জুতার সাথে লাগানো থাকে। এগুলি কঠিন তুষার এবং বরফের উপর দিয়ে হাঁটার সময় বরফকে আঁকড়ে ধরে থাকে। এছাড়া উঠার সময় শরীরের ভারসাম্য রক্ষার জন্য কুড়ালের দরকার হয়। এছাড়া পায়ের বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হয়। উচ্চ শৃঙ্গে উঠার সময় শক্ত দড়ি বেয়ে উঠতে হয় যদি পর্বতের পৃষ্ঠে পা দিয়ে ভোর দেবার স্থান না থাকে। এছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থেও দড়ি ব্যবহৃত হয়।

হিমবাহ সম্পাদনা

হিমবাহের উপর দিয়ে চলা বিপদজনক। বরফ পৃষ্ঠের বিশাল ফাটলসমূহ সবসময় দৃশ্যমান হয় না। কারণ ফাটলের উপরের অংশে বরফ জমে সেতুর ন্যায় পথ সৃষ্টি করতে পারে। এরকম সেতু কয়েক ইঞ্চি পুরু পর্যন্ত হতে পারে। পর্বতারোহীরা এরকম বিপদ থেকে রক্ষার জন্য সতর্কতামূলক উপায় হিসেবে দড়ি ব্যবহার করেন। এছাড়া ক্র্যাম্পন এবং কুড়াল ব্যবহৃত হয়। দুই থেকে পাঁচজনের পর্বতারোহীর দলে প্রত্যেকে সমদূরত্বে দড়ি দিয়ে বাধা অবস্থা থাকেন। যদি একজন আরোহী পড়ে যেতে থাকেন, তবে অন্য আরোহীরা নিজ প্রচেষ্টায় তাকে থামিয়ে দেন।

বরফ সম্পাদনা

বরফের উপর দিয়ে চলার জন্য কয়েক ধরনের উপায় ব্যবহৃত হয়। যদি পর্বত পুরোপুরি খাড়া না হয়ে ঢালু হয়, তবে আরোহী বরফে আইস স্ক্রু স্থাপন করে তাতে দড়ি বেধে দিয়ে থাকেন। দড়ির অপর অংশ দিয়ে নিজের শরীর নিরাপত্তার জন্যে বেধে নেন। আরোহী দলের প্রত্যেকে এই স্ক্রু ব্যবহার করে উঠে যায় এবং দলের শেষজন স্ক্রুটি সংগ্রহ করেন। যদি পর্বত বেশি খাড়া হয় তাহলে দলগতভাবে না উঠে একজন একজন করে উঠতে হয়।

আশ্রয় সম্পাদনা

পর্বতারোহীরা পর্বতের অবস্থা, আবহাওয়া, স্থান ইত্যাদি চেদে বিভিন্ন ধরনের আশ্রয় ব্যবহার করে থাকে। এসব আশ্রয়ে আরোহীরা বিশ্রাম নেন বা রাত্রিযাপন করেন।

বেসক্যাম্প সম্পাদনা

বেসক্যাম্প হল পর্বতের একটি স্থান যেখানে পর্বতারোহীরা বিশ্রামের জন্য অবস্থান করেন। বেসক্যাম্প পর্বতের অন্যান্য দুর্গম বা বিপদজনক জায়গা থেকে দূরে স্থাপন করা হয়। অনেক জনপ্রিয় ও বিপজ্জনক পর্বতে বেসক্যাম্প রয়েছে। যেসব ক্ষেত্রে বেস ক্যাম্প থেকে চূড়ায় একদিনের মধ্যে আরোহণ করা সম্ভব নয়, সেসব জায়গায় বেসক্যাম্পের উপরে অতিরিক্ত ক্যাম্প থাকে। যেমন- মাউন্ট এভারেস্টের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বেস ক্যাম্পের পাশাপাশি চারটি অতিরিক্ত ক্যাম্প রয়েছে।

হাট সম্পাদনা

 
পোল্যান্ডের একটি মাউন্টেন হাট।

ইউরোপের আল্পস পর্বত অঞ্চলে মাউন্টেন হাট নামে একধরনের ঘর পর্বতে স্থাপিত থাকে। এধরনের হাট পর্বতের বিভিন্ন উচ্চতায়, চরম দুর্গম জায়গায় থাকে। হাটের আকার-আয়তন বা নির্মাণ কৌশল বিভিন্ন রকমের হয়। তবে সবগুলোতেই একটি ডাইনিং বা খাবার ঘরকে কেন্দ্র করে অন্যান্য ঘরগুলো সাজানো থাকে। এসব ঘরে ম্যাট্রেস, কম্বল, বালিশ ইত্যাদি থাকে। এসব হাটের অনেকগুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকে। আবার কিছু হাট স্বেচ্ছাসেবক দ্বারা পরিচালিত হয়। যেমন- সুইস আলপাইন ক্লাব, ফ্রেঞ্চ আলপাইন ক্লাব। হাটের ম্যানেজার, (অনেক ক্ষেত্রে গার্ডিয়ান বা ওয়ার্ডেন হিসেবে অভিহিত) সাধারণত হালকা ও ভারী খাবার বিক্রি করেন। এছাড়া হাটে পানীয় জল, ঠান্ডা বা গরম পানীয়, স্ন্যাকস, কেক ও পেস্ট্রি থাকে। সব হাটে খাবার সরবরাহকারী থাকে না। অনেকগুলোতে নিজ থেকে খাবার নিতে হয়। অনেক হাট আর্থিক লেনদেনের জন্যে ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করে। হাটে রাত্রিযাপনের জন্য আগে থেকে অগ্রিম ভাবে জানানোর নিয়ম প্রচলিত আছে।

বিভি সম্পাদনা

বিভি হল একধরনের থাকার ব্যবস্থা। যখন পর্বতারোহীর কাছে আশ্রয় নির্মাণের মত যথেষ্ট দ্রব্যাদি, খাবার ও অন্যান্য জিনিস থাকে না; তখন রাত্রিযাপনের জন্য হাতের নাগালে যা থাকে এবং আরোহীর নিকটে যেসব জিনিস থাকে তা দিয়ে সাধারণ একটি আশ্রয় বানান। যেমন একটি স্লিপিং ব্যাগ বিছিয়ে তাতে ঘুমানো। বিভি ব্যাগ পানি রোধক উপাদান দিয়ে বাবানো হয়। এতে জলীয়বাষ্প আটকে থাকে না এবং বাইরের জলকে ভেতরে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। শীতল বায়ু থেকে রক্ষার জন্য অনেক সময় বড় পাথর খন্ডের পাশে, বরফের মাঝে গর্তে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। তবে এসমস্ত পন্থা জরুরী অবস্থায় ব্যবহৃত হয়। অনেক আরোহী তাবু বহণ না করে বা সময় বাঁচানোর জন্যেও ইচ্ছাকৃতভাবে বিভি ব্যবহার করে থাকেন।

তাবু সম্পাদনা

 
মাউন্ট হুইটনিতে রাত্রিযাপন
 
্তাবু এক্মাত্র থাকার জায়গা

তাবু হল সবচেয়ে বেশি প্রচলিত আশ্রয় ব্যবস্থা। তাবু সাধারণ ছোট আকার থেকে অনেক বড় ও ভারী যা পর্বতের উচ্চস্থানের শীতল বায়ুরোধক হতে পারে। অনেকসময় প্রবল তুষারপাত বা তীব্র বায়ুপ্রবাহের কারণে তাবু ভেঙ্গে যেতে পারে। পর্বতারোহীরা আশ্রয়ের জন্য বিশেষায়িত তাবু ব্যবহার করে।

তুষার-গুহা সম্পাদনা

 
মাউন্ট হুডে একটি তুষার-গুহা

অবস্থাভেদে তুষার গুহা আশ্রয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অনেক আরোহী পর্বতের উচুতে তাবু ব্যবহার না করে তুষার-গুহাতে থাকে। তুষারে গর্ত করে এধরনের আশ্রয় নির্মাণ করা হয়। তুষার-গুহা সাধারণ তাবুর থেকে বেশি উষ্ণ এবং নিরব। সহজেই এধরনের আশ্রয় বানানো যায়। অনেক ক্ষেত্রে বেশি সময় নিয়ে কোদাল দিয়ে এগুলো বানানো হয়। যেকোন জায়গায় (যেখানে কমপক্ষে চারফিট গভীর বরফের আচ্ছাদন রয়েছে) তুষার-গুহা বানানো সম্ভব। তুষার গুহার ভেতরে স্লিপিং ব্যাগ বা বিভি দিয়ে আবৃত করলে তা আরও উষ্ণ হয়।

ঝুঁকি সম্পাদনা

পর্বতারোহণ বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক খেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রতি বছর পর্বতে উঠতে গিয়ে প্রায়শঃই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পর্বতারোহণের ঝুঁকি দুই প্রকার: একধরনের ঝুঁকি আছে যা পর্বতারোহীর উপস্থিতির উপর নির্ভর করে না; যেমন - পাথরখণ্ডের পতন, তীব্র তুষারপাত, দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ইত্যাদি। আরেক ধরনের ঝুঁকি পর্বতারোহীর কারণে ঘটে থাকে। যেমন - প্রয়োজনীয় কোন জিনিস পড়ে যাওয়া, অভিজ্ঞতা না থাকায় ভুল কৌশল অবলম্বন। পর্বতের যেসব দিকে মাঝে মধ্যেই তুষারখণ্ডের স্খলন ঘটে বা বড় ঝড় প্রবাহিত হয়, সেসব পথ দিয়ে না ওঠা ভাল।

পাথরখণ্ড সম্পাদনা

প্রায় সব পাথুরে পর্বতই ক্রমাগর ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। পর্বতের বরফাবৃত অংশের উপর থেকে এই প্রবণতা বেশি। পর্বতের উপরের অংশ থেকে পতিত পাথর আরোহীর জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হতে পারে। রাতের বেলা বরগ জমে পাথরখণ্ডকে আটকে রাখে, কিন্তু দিনের বেলায় সূর্যের তাপে এই বাঁধন আর থাকে না, ফলে তখন পাথরখণ্ড পতিত হওয়ার আশংঙ্কা বেশি থাকে। পর্বতে পাথর পড়ার ঘটনার ব্যাপারে জানার জন্য স্থানীয় মানুষের পরামর্শ কাজে লাগতে পারে।

বরফখণ্ড সম্পাদনা

পর্বতের যেসব স্থানে বরফখণ্ড পতিত হয়, সেসব জায়গা আগে থেকে শনাক্ত করা সম্ভব। বরফখণ্ড সাধারণত হিমবাহের খণ্ডিত অংশে পড়ে। পাহাড়ের উঁচু স্থানের বরফ ধীরে ধীরে নিচে পড়তে থাকলে তা এর সংস্পর্শে থাকা বরফসহ পড়তে পড়তে আকারে অনেক বড় পিন্ডে পরিণত হয় এবং তা ক্রমেই নিচের দিকে প্রবল বেগে গড়িয়ে পড়তে থাকে। এভাবে গড়িয়ে পড়া বরফখণ্ডের আঘাতে পর্বতারোহী প্রচন্ডভাবে আহত হতে পারে। এমনকি পাহার থেকে পড়েও যেতে পারে। বরফখণ্ড সাধারণত দিনের বেলা যখন তাপমাত্রা বেড়ে যায়, তখন পড়ে। তাই অভিজ্ঞ পর্বতারোহীরা পর্বতের সবচেয়ে নিরাপদ পথ অবলম্বল করে আরোহণ করেন।

তুষারধ্বস বা হিমপ্রবাহ সম্পাদনা

প্রতি বছর শুধু আল্পস পর্বতমালাতেই ১২০ থেকে ১৫০ জন মানুষ তুষারধ্বসের কারণে মারা যায়। এর অধিকাংশই ২০-২৫ বছর বয়সী অভিজ্ঞ পুরুষ পর্বতারোহী। হিমপ্রবাহ নিরাপদে অতিক্রম করা খুব কঠিন। অনেক ধরনের তুষারধ্বস রয়েছে। এরমধ্যে দুই প্রকারের তুষারধ্বস সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এগুলো হল তুষার হিমপ্রবাহ এবং বরফ হিমপ্রবাহ। বিশাত আয়তনের তুষারখন্ড যখন ভেঙ্গে যায় এবং তা নিচের দিকে পড়তে শুরু করে, তখন তুষার হিমপ্রবাহ ঘটে। তুষার হিমপ্রবাহ আকারে হিমপ্রবাহের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং ভয়ঙ্কর। পর্বতের যে ঢালগুলোর কম গাছপালা এবং বড় পাথরের পৃষ্ঠ থাকে সেখানে এই হিমপ্রবাহ ঘটার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

বরফ হিমপ্রবাহ সাধারণত যেসব পর্বতের পৃষ্ঠ হিমবাহ দ্বারা গঠিত সেসব পর্বতে ঘটে। অস্থিতিশীল বরফখণ্ড সংঘর্ষের ফলে নিচের দিকে গড়িয়ে পড়তে থাকলে বরফ হিমপ্রবাহ ঘটে। এই বরফ হিমপ্রবাহের মধ্যে ছোট-বড় পাথরখণ্ডও থাকতে পারে। বরফ হিমপ্রবাহও বেশ ভয়ঙ্কর হতে পারে, বিশেষ করে যখন তা দীর্ঘ দুরত্ব অতিক্রম করে পড়তে থাকে। আলাস্কা পর্বতমালা, সেন্ট ইলিয়স পর্বতমালায় এই বরফ হিমপ্রবাহ প্রায়ই দেখা যায়।

ঢাল সম্পাদনা

বরফের ঢালে চলাচলের সময় ক্র্যাম্পন ব্যবহার করতে হয়। ক্র্যাম্পন বিশেষ একধরনের দাঁতযুক্ত পাত যা পর্বতারোহীর জুতার নিচের দিকে শক্তভাবে যুক্ত করা হয়। এর দাঁতগুলো বরফকে আকড়ে ধরে রাখে, ফলে ক্র্যাম্পন পড়ে বরফ বা তুষারের ঢালে চলাফেরা করা যায়।

পর্বতারোহণের রীতি সম্পাদনা

দুই ধরনের পর্বতারোহণের রীতি প্রচলিত আছে: এক্সপিডিশন এবং আলপাইন

যে পর্বতারোহী আলপাইন রীতিতে আরোহণ করেন, তাকে আলপাইন মাউন্টেনিয়ার বলা হয়। এধরনের আরোহীরা সাধারণত মধ্যম উচ্চতার বরফাবৃত পর্বত যেমন- আল্পস বা রকি পর্বতে আরোহণ করেন। মধ্যম উচ্চতা বলতে ৭০০০ ফুট থেকে ১২০০০ ফুট বা এর চেয়েও বেশি ১২০০০ থেকে ১৮০০০ ফুট। এর চেয়েও বেশি উচ্চতার ক্ষেত্রে আলপাইন রীতিতে পর্বতারোহণের নজির পৃথিবীতে অবশ্য রয়েছে। এই রীতিতে বরফ, তুষারের বা হিমবাহের উপর দিয়ে আরোহণ করা হয়। আরোহীরা তাদের সব জিনিসপত্র একা একবারে নিয়ে উঠেন এবং এক পথ একবারই ব্যবহার করেন।

এক্সপিডিশন রীতি আলপাইন রীতির উল্টো। এই উপায়ে আরোহী ধীরে ধীরে তার সাথে ভারী জিনিসপত্র যেমন- তাবু, খাবার, পোশাক ইত্যাদি নিজে কয়েকবারে বা তা ওঠানোর জন্য কোন পালিত পশু কিংবা অন্য কোন ব্যক্তির সাহায্য নিয়ে আরোহণ করেন। যেসব পর্বতে আরোহণ করতে কয়েক দিন, সপ্তাহ এমনকি কয়েক মাস পর্যন্ত লাগে; সেসব ক্ষেত্রে এক্সপিডিশন রীতি ব্যবহৃত হয়। যেমন- হিমালয় পর্বতমালার অনেক শৃঙ্গে আরোহণ করতে কয়েক সপ্তাহ থেকে মাস পর্যন্ত লেগে যায়। তাই এই ক্ষেত্রে এক্সপিডিশন রীতি ব্যবহৃত হয়। বেশি উচ্চতার পর্বতে এই রীতিতে ওঠা হয়। ইউরোপের এবং আমেরিকার অধিকাংশ পর্বতে একদিনে আরোহণ করা যায়, তাই এই রীতির দরকার হয় না। তবে কিছু কিছু পর্বত যেমন আলাস্কা এবং সেন্ট ইলিয়াস পর্বতের বেস ক্যাম্পে উঠতেই ২ সপ্তাহ লাগে। তাই এক্ষেত্রে এক্সপিডিশন রীতিতে ওঠা হয়। শীতকালে উত্তর আমেরিকার উচু শৃঙ্গগুলোতে উঠতে ৩০ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত লাগে। তাই এক্ষেত্রে একমাত্র এক্সপিডিশন রীতিই ব্যবহৃত হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Nepal Mountaineering Association"web page। ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০১১ 
  2. Cox, Steven M. and Kris Fulsaas, ed., সম্পাদক (2003-09)। Mountaineering: The Freedom of the Hills (7 সংস্করণ)। Seattle: The Mountaineers। আইএসবিএন 0-89886-828-9  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  3. "UIAA Activities"। UIAA। ১১ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৩ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা