ড্রিউ ব্যারিমোর

মার্কিন অভিনেত্রী

ড্রিউ ব্লিথ ([Drew Barrymore — উচ্চারণ: ড্রূ ব্যারিমোর্‌] ত্রুটি: {{Lang-xx}}: text has italic markup (সাহায্য)) (জন্ম: ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৫)[১] একজন মার্কিন অভিনেত্রী এবং চলচ্চিত্র প্রযোজক। তিনি ব্যারিমোর পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ আমেরিকান অভিনেত্রী। তার অভিনয় জীবন শুরু হয় যখন তার বয়স মাত্র এগারো মাস। ব্যারিমোরের পর্দায় অভিষেক ঘটে ১৯৮০ সালে, অলটার্ড স্টেটস-এর মাধ্যমে। ১৯৮০ সালে অলর্টাড স্টেটস-এ অভিষেকের পথ ধরে তিনি আবির্ভূত হন তার সাড়াজাগানো চরিত্র ই.টি. দ্য এক্সট্রা টেরিস্ট্রিয়াল-তে। এর মাধ্যমে অল্প সময়েই তিনি হলিউডে সবচেয়ে পরিচিত শিশু অভিনেত্রী রুপে আবির্ভূত হন, এবং নিজেকে প্রধানত বিভিন্ন কমিক চরিত্রে রূপদানকারী অভিনেত্রী রুপে প্রতিষ্ঠিত করতে থাকেন।

ড্রিউ ব্যারিমোর
ফেব্রুয়ারি ২০০৯-এ ব্যারিমুর
জন্ম
ড্রিউ ব্লিথ ব্যারিমুর
পেশাচলচ্চিত্র অভিনেত্রী, প্রযোজক, কণ্ঠ অভিনয়শিল্পী
কর্মজীবন১৯৭৮–বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীজেরেমি থমাস (১৯৯৪–১৯৯৫)
টম গ্রীন (২০০১–২০০২)
ওয়েবসাইটdrewbarrymore.com

ব্যারিমোর ১৯৯০ সালে নিজের আত্মজীবনী লেখেন, যার নাম ছিলো লিটল গার্ল লস্ট। ব্যবসায়িকভাবে অসফল কিছু চলচ্চিত্র, যেমন: পয়জন আইভি, ব্যাড গার্লস, বয়েজ অন দ্য সাইড, এবং এভরিওয়ান সেজ আই লাভ ইউ-এ অভিনয়ের মাধ্যমে ব্যারিমোর সফলভাবে তার শিশু তারকা ইমেজ থেকে বেরিয়ে প্রাপ্তবয়ষ্ক তারকার ইমেজ প্রাপ্ত হন। সেই সাথে তিনি দ্য ওয়েডিং সিঙ্গার এবং এরিক বানার বিপরীতে নাট্য চলচ্চিত্র লাকি ইউ-এর মতো রোমান্টিক কমেডিধর্মী চলচ্চিত্রেও অভিনয়শৈলী দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।

১৯৯৫ সালে, তিনি ও তার সঙ্গী ন্যান্সি জুভোনেন ফ্লাওয়ার ফিল্মস নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের গোঁড়াপত্তন করেন, যার সর্বপ্রথম প্রযোজিত চলচ্চিত্রটি ছিলো ব্যারিমুরের নেভার বিন কিস্ড। এরপর ফ্লওয়ার ফিল্মস প্রযোজনা চালিয়ে যেতে থাকে ব্যারিমুরের চলচ্চিত্র চার্লিস অ্যাঞ্জেলস, ফিফটি ফার্স্ট ডেটস্, এবং মিউজিক অ্যান্ড লিরিক্স, এবং সেই সাথে কাল্ট চলচ্চিত্র ডানি ডার্কো-এর মাধ্যমে। ব্যারিমুরের সাম্প্রতিক প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে চলচ্চিত্র হি ইজ জাস্ট নট দ্যাট ইনটু ইউ, বেভারলি হিলস চিহুয়াহুয়া, এবং এভরিবডি’স ফাইনহলিউড ওয়াক অফ ফেম-এ তারকা হিসেবে তার নাম আছে। ২০০৭ সালে পিপল ম্যাগাজিনের সবচেয়ে সুন্দর ১০০ ইশ্যুর প্রচ্ছদে ব্যারিমুরের ছবি ছাপা হয়।

ব্যারিমোর জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিতে (WFP) ক্ষুধাবিরোধী অ্যাম্বাসেডর (Ambassador Against Hunger) নামে পরিচিতি পেয়েছিলেন; এবং এরপর থেকে তিনি এই কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত এক মিলিয়ন ডলার বা সাত কোটি টাকারও বেশি অর্থ অনুদান দিয়েছেন। ২০০৭ সালে তিনি গুচির নতুন গহনাদ্রব্যাদির প্রসাধনী ও মুখের জন্য নতুন প্রচ্ছদনায়িকা ও মুখপাত্র হিসেবে মনোনীত হন।

২০১০ সালে তিনি গ্রে গার্ডেনস্‌-এ এডির শৈশবের চরিত্রে রূপদানের জন্য স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার এবং মিনি ধারাবাহিক বা টেলিছবিতে সেরা অভিনেত্রী বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার লাভ করেন।

আত্মজীবনী সম্পাদনা

প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

ব্যারিমোর ১৯৭৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া প্রদেশের কালভার সিটিতে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবা জন ড্রিউ ব্যারিমোর ছিলেন একজন আমেরিকান অভিনেতা এবং মা অভিনেত্রী ইডিকো জেইড ব্যারিমোর (জন্মসূত্রে: মার্কো)[২][৩]-এর জন্ম হয়েছিলো পশ্চিম জার্মানির ব্রান্নেবার্গ-এ। তার জন্মের পর তার বাবা-মার বিচ্ছেদ ঘটে।[২]

বিপ্লবী যুগ সম্পাদনা

যখন তিনি ছোটো ছিলেন তখন তিনি স্টুডিও ৫৪-এ কাজ করে বেশ বিখ্যাত হয়ে উঠেছিলেন। মাত্র নয় বছর বয়সে সিগারেটে আসক্ত হন। অ্যালকোহল সেবন করা শুরম্ন করেন এগারো বছর বয়সে। এরপর মারিজুয়ানা সেবন করা শুরু করেন বারো বছর বয়সে, আর কোকেইন নেওয়া শুরু করেন তেরো বছর বয়সে।[২][৪] তার রাত্রিযাপন এবং বিভিন্ন পার্টিতে অংশগ্রহণ গণমাধ্যমের একটি জনপ্রিয় খোরাকে পরিণত হয়েছিলো।[২] তাকে তেরো বছর বয়সে একটি পূর্নবাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।[২][৪] ডেভিড ক্রসবি এবং তার স্ত্রীর সাথে তিনমাস থাকার পর চৌদ্দ বছর বয়সে একটি আত্মহত্যার প্রচেষ্টা তাকে আবার পূর্নবাসন কেন্দ্রে ফেরত পাঠায়।[২][৪][৫]

নতুন রূপ সম্পাদনা

ব্যারিমোরকে, তার কিশোরী বয়সের শেষ দিকে পয়জন আইভি (১৯৯২) চলচ্চিত্রে একটি নতুন রূপে দেখা যায়। এখানে তিনি একটি বিকৃত মানসিকতাসম্পন্ন, শয়তান, ও কামুক কিশোরী মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্র হিসেবে ব্যর্থ হয় কিন্তু ভিডিওডিশে জনপ্রিয়তা পায়।[২][৬] একই বছরে, তার সতেরো বছর বয়সে ইন্টারভিউ ম্যাগাজিনের জুলাইয়ের সংখ্যায় তিনি নগ্ন ভঙ্গিমায় উপস্থিত হন। এই ভঙ্গিতে তার সাথে ছিলেন জেমি ওয়াল্টারস (পরবর্তীতে তার বাগদত্তা)। ঐ সংখ্যার ভিতরের পাতাগুলোতেও ব্যারিমুরের নগ্ন ভঙ্গিমার ছবি প্রকাশিত হয়।[৭] ১৯৯৩ সালে ব্যারিমুর তার চলচ্চিত্র গানক্রেইজির জন্য গোল্ডেন গ্লোবের জন্য মনোনীত হন।[৮][৯] স্টিভেন স্পিলবার্গ, যিনি ব্যারিমুরের শিশু অবস্থায় অভিনীত ই.টি. দ্য এক্সট্রা টেরিস্ট্রিয়াল চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছিলেন; ব্যারিমুরকে তার বিশতম জন্মদিনে একটা কিল্ট (এক প্রকার স্কার্ট সদৃশ বস্ত্র) উপহার দিয়েছিলেন এবং সাথে একটি চিরকুট, যাতে লেখা ছিলো “নিজেকে ঢেকে রাখো”।[৪] এর সাথে তিনি প্লেবয় ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ব্যারিমুরের কিছু ছবিও দিয়েছিলেন, কিন্তু ছবিগুলো অনাবৃত দেহের ছিলো না বরং সম্পূর্ণ পোশাক পরিহিত অবস্থার।[১০][১১] কারণ তিনি তার আর্ট বিভাগের সহায়তায় ছবিগুলোর বিশেষ বিশেষ স্থানে পোশাক জুড়ে দিয়েছিলেন।[১২] এই সময়গুলোতে ব্যারিমুর পাঁচটি চলচ্চিত্রে নগ্নদৃশ্যে উপস্থিত হন। ১৯৯৫ সালে তার জন্মদিনে, জন্মদিন উৎযাপনের জন্য তিনি দ্য লেট শো উইথ ডেভিড লেটারম্যান -এ নগ্নদৃশ্যে অভিনয় করেন।[৫] এখানে দেখা যায় যে, ব্যারিমুর ডেভিড লেটারম্যানের টেবিলে উঠে তার স্তনযুগল লেটারম্যানের কাছে উন্মুক্ত করছেন। সেসময় ক্যামেরা ব্যারিমুরের পেছন দিকে ছিলো। এ বছরে ধারাবাহিক গেস?-এও মডেল হিসেবে তাকে দেখা যায়।[১৩] তিনি ১৯৯২-এ ব্রেস্ট রিডাকশন সার্জারি (স্তনযুগল ছোটো করতে যে শল্যচিকিৎসা করা হয়) করান, এবং এ বিষয়ে বলেন:

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

ব্যারিমুর ১৯৯৪ সালের ২০ মার্চ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত পানশালা মালিক জেরেমি থমাসের সাথে বিবাহিতা ছিলেন।[২][৫] তার দ্বিতীয় বিয়ে ছিলো রম্য অভিনেতা টম গ্রীনের সাথে (৭ জুলাই, ২০০১-১৫ অক্টোবর, ২০০২)।[১৫][১৬] ২০০১ সালে তার সাথে গ্রীনের বিচ্ছেদ ঘটে।[১৬] ২০০২ সালে একটি কনসার্টে দেখা হওয়ার পর তিনি স্ট্রোকসের ড্রামবাদক ফ্যাব্রিজিও মোরেত্তির সাথে প্রেম শুরু করেন।[২][১৭] পাঁচ বছর স্থায়ী এ সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটে ২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারি।[১৭][১৮] সাম্প্রতিককালে তিনি প্রেম করেছেন জাস্টিন লং-এর সাথে, যদিও তাদের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার ব্যাপারটা তারা ২০০৮-এর জুলাইতে নিশ্চিত করেছেন।[১৯]

২০০৭ সালের মার্চে সাবেক ম্যাগাজিন সম্পাদক [জেন প্র্যাট] তার সাইরিয়াস স্যাটেলাইট রেডিও অনুষ্ঠানে দাবি করেন যে নববইয়ের দশকের মাঝামাঝি তার সাথে ব্যারিমুরের প্রেম ছিলো।[২০] জেন প্র্যাট এই দাবিটি করেন ২০০৭ সালে। কিন্তু তার আগেই, ২০০৪ সালে ব্যারিমুর নিজেকে উভলিঙ্গীক বলে স্বীকার করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন:

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Drew Barrymore Biography (1975–)"। FilmReference.com। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৪ 
  2. "Drew Barrymore"Hello Magazine। ২০০৯-০৮-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-০২ 
  3. "Actor John D. Barrymore dies at 72"USA Today। ২০০৪-১১-২৯। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-০৭ 
  4. <http://www.usatoday.com/life/people/2004-11-29-barrymore-obit_x.htm "Actor John D. Barrymore dies at 72". USA Today. 2004-11-29.
  5. "Drew Barrymore Biography"People। ২০১০-০৭-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-০২ 
  6. Gleiberman, Owen (১৯৯২-০৫-০৮)। "Poison Ivy Review"Entertainment Weekly। ২০০৮-১০-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-২৫ 
  7. Hruska, Bronwen (১৯৯৯-০৫-১৪)। "Summer Sneaks Drew, We Hardley Knew Ye The littlest Barrymore finally seems back on track in solid film roles. Though she's already lived several lives, her future looks bright. After all, she's only 20."। Los Angeles Times: 5। 
  8. "HFPA - Awards Search"। Golden Globes। ২০০৮-০৫-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-০৩ 
  9. http://www.goldenglobes.org/browse/member/28761 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ মে ২০০৮ তারিখে HFPA - Awards Search". Golden Globes.
  10. Luscombe, Belinda (১৯৯৫-১০-০২)। "Ms. Barrymore, Super Groupie"Time। ২০১০-১০-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-২০ 
  11. Farley, Christopher John (১৯৯৫-০৩-২৭)। "Low Voltage, High Power"Time। ২০১০-০৬-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-২০ 
  12. "The E! True Hollywood Story: Drew Barrymore"। ২০০৭-১১-২৮। E!।  |ধারাবাহিক= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  13. Spindler, Amy M. (১৯৯৩-০৯-১২)। "Trash Fash"New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-০৩ 
  14. Mills, Nancy (১৯৯৮-০২-০৯)। "Now, Drew Love! Hollywood's Wild Thing Has The Man - & Role - Of Her Dreams"New York Daily News। ২০০৯-০১-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-০৩ 
  15. Silverman, Stephen M. (২০০১-০৭-১০)। "Oops! Barrymore, Green Do It Again"People। ২০০৮-০৬-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-০৭ 
  16. Darst, Jeanne (২০০১-১২-১৮)। "Tom Green Files for a Divorce from Drew"People। ২০০৮-১০-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-০৭ 
  17. "Drew Barrymore Biography - Page 2"People। ২০০৮-০৬-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-০২ 
  18. White, Nicholas (২০০৭-০২-০৮)। "Drew Barrymore Says She's Loving Single Life"People। ২০০৮-০৮-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-০৭ 
  19. "Drew Barrymore and Justin Long end relationship"Fox News.com। ২০০৮-০৭-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-০৯ 
  20. Louis B. Hobson (3-4-1997)। ""True Drew""। Canoe Jam!।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  21. Radice, Sophie (২০০৪-০৫-০৯)। "When hello really means bi for now"The GuardianThe Observer। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-০৭ 

আরো পড়ুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা